ব্রতীন দাস: এ যেন ইতিহাসের আশ্চর্য সমাপতন। যে জিএনএলএফ-কে সরিয়ে পাহাড়ের ক্ষমতা দখল করেছিল মোর্চা, আজ তাদেরই এক মঞ্চে পাশাপাশি দেখা গেল। মেলালেন যিনি তিনি আর কেউ নন, স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাহাড়ের রাজনীতিতে এ এক নজিরবিহীন বার্তাই বটে।
[ আটক কয়েক কোটির হাতির দাঁত ও মাদক, বন দপ্তরের জালে ২ ]
৮ মাস আগের পাহাড় আজ পুরোপুরি বদলে গিয়েছে। গত বছরের ৮ জুন পাহাড়ে অশান্তির আগুন জ্বালিয়েছিল গুরুংবাহিনী। সে ঝামেলা খানিকটা মিটিয়ে মমতা নেমে এসেছিলেন। তার পরেও বেশ কিছুদিন চলেছিল গুরুংদের জলুমবাজি। কার্যত বিপর্যস্ত হয়েছিল পাহাড়ের পর্যটন ও জনজীবন। পরিস্থিতি আজ ম্যাজিকের মতো বদলে গিয়েছে। ফের পাহাড়ের কোলে উন্নয়নের রোদ। আজ আট মাস পরে মুখ্যমন্ত্রী যখন পাহাড়ে পা রেখেছেন, তখন যেন জন্ম হয়েছে এক নতুন পাহাড়ে। রাজনীতির দিক থেকেও তা সত্যি। কেননা পাহাড়ি রাজনীতিতে নজিরবিহীনভাবেই জিএনএলএফ ও মোর্চা পাশাপাশি। এই জিএনএলফ-কে সরিয়েই পাহাড়ের ক্ষমতা দখল করেছিল মোর্চা। ফলত বিরোধিতা ছিল আগাগোড়াই। আজ মমতার উদ্যোগেই যেন সে বিভাজনে ইতি পড়ল। এদিন রোহিনী রোডের নাম পালটে রাখা হয় ‘সুবাস ঘিসিং মার্গ’। উদ্বোধনের মঞ্চে ছিলেন সুবাস তনয় মন ঘিসিং এবং মোর্চা নেতারাও। ফলে এই মঞ্চ থেকেই পাহাড়ের রাজনীতি এক নতুন দিকে বাঁক নিল বলেই মনে করা হচ্ছে।
[ মুর্শিদাবাদে ফাঁস ভয়াবহ ষড়যন্ত্রের ছক, উদ্ধার প্রচুর বিস্ফোরক ]
এদিন মুখ্যমন্ত্রী জানান, “সকলকে একসঙ্গে থাকতে হবে। তাহলে যা চাইবে তাই দেব। ঝগড়া করা খুব সহজ। আমি চাই পাহাড়ে সবাই মিলেমিশে থাকুক। তার ভাগ নিতে আমি আসব না। কিন্তু সব সময় চাইব আমার দার্জিলিং ভাল থাকুক।” এদিন মমতার জন্য অভ্যর্থনারও ব্যবস্থা ছিল চোখে পড়ার মতো। দলের পতাকা নিয়ে হাজির ছিলেন মোর্চা কর্মীরা। জিটিএ-র তরফে পাহাড়কে মমতাকে স্বাগত জানাতে সুকনা থেকে দার্জিলিং পর্যন্ত তোরণের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। রাস্তার দু’ধারে ছিলেন পাহাড়ের জনজাতির প্রতিনিরাও। সব মিলিয়ে এ বেশ শান্তির দৃশ্য। আট মাস পর পাহাড়ের মুখে এখন পুরনো হাসি। পর্যটনেও জোয়ার এসেছে। সেদিনের আগুনে পরিস্থিতি যে শান্ত হয়েছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। সেই শান্ত পাহাড় থেকেই বিভাজনহীন রাজনীতির নয়া বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.