Advertisement
Advertisement

সারি-জারি গানের বোলে ভোটের প্রচার, সাজ সাজ রব মুর্শিদাবাদে

তবে শুধু টাকার জন্য গান বাঁধেন না এই শিল্পীরা।

West Bengal panchayat polls: Folk song new mode of campaigning in Murshidabad
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:April 5, 2018 11:07 am
  • Updated:April 5, 2018 11:33 am

সাবির জামান, লালবাগ: “নিজের ভোট নিজে দেবে কারও কথা না শুনে রে, ভোট দেবেন ঘরের কোণে থাকবে সেটা গোপন রে।”

অথবা ‘পৃথিবী সৃষ্টি হতে কেউ যা পারেনি দিতে, যাঁদের মুখে তুলে দিলে অন্ন, শিল্পী সমাজ আজ ধন্য’। এমন গান বেঁধে তৈরি শিল্পীরা।

Advertisement

ভোটের ঘণ্টা বাজতেই মুর্শিদাবাদের লোক সংগীত শিল্পীদের মধ্যে এখন সাজ সাজ রব। কোন দলের জন্য তৈরি হচ্ছেন তাঁরা? না, বিশেষ কোনও মতাদর্শ নয়। টাকার কোনও রং হয় না। তাই যে দল যেমন বায়না করবে, তেমন গানই বেঁধে প্রচারে নামবেন এই শিল্পীরা। কড়ি ফেললেই শুরু হবে সারি, জারি গান। তবে প্রার্থীর ব্যক্তিগত ভাবমূর্তির কথাও বহু শিল্পী মাথায় রাখছেন। কারণ এই জেলাতেই তো থাকতে হবে তাঁদের!

Advertisement

ভোটের বাজারে এই শিল্পীদের কদর যে বাড়ছে সে কথা স্বীকার করেন সব দলের ভোট প্রার্থীরা। সে কথা মাথায় রেখে ফের আরও একবার গলা সেধে নিচ্ছেন গ্রাম বাংলার এই শিল্পীরা। এক্ষেত্রে শিল্পীদের কোনও ছুঁৎমার্গ নেই বলেও তাঁদের দাবি। নায্য পাওনা পেলে যে কোনও দলের প্রার্থীর হয়ে তারা গান বাঁধতেও প্রস্তুত। তবে পঞ্চায়েত ভোট বলে প্রার্থীর ভাবমূর্তির বাছবিচার করেই তাঁরা প্রচারের ময়দানে নামবেন এমনই দাবি করেছেন শিল্পীদের একটা অংশ।

[পঞ্চায়েত ভোটের প্রথম বলি বাঁকুড়ায়, দুষ্কৃতী হামলায় মৃত বিজেপি নেতা]

পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিভিন্ন দল কিংবা প্রার্থীরা ব্যক্তিগত ভাবে তাঁদের প্রচারে চমক দিয়ে মানুষের মন জয় করতে চাইছেন। কখনও প্রচারের ময়দানে রূপালি পর্দার নায়ক-নায়িকাদের নিয়ে এসে রোড শো, তো কখনও প্রচারের মিছিলে আকর্ষণীয় ট্যাবলো প্রদর্শনীর রেওয়াজ জেলাতে আছে। এর আগে ঢাক, ঢোল, সং-এর ব্যবহার করে পঞ্চায়েতের প্রচার জেলার মানুষ দেখেছেন। যদিও জেলার জারি, সারি, রাইবেশে, আলকাপ, বাউল, বোলান গানের সুরে ভোট প্রচার মানুষের চোখে খুব বেশি পড়েনি। তবে জেলার বামপন্থীরা অল্পবিস্তর আলকাপ শিল্পী ও বাউলদের ভোট প্রচারে কাজে লাগিয়েছেন। কিন্তু এই শিল্পীরা ভোট এলেই পড়শি জেলা বীরভূম বা নদিয়ায় ডাক পান। এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে জেলার শিল্পীদের সেই খরা কাটতে চলেছে বলে মনে করেন শিল্পী কার্তিক মার্জিত, রশিদ মামন, বেলা সরকাররা। বেলা সরকার বলেন, “এর আগে আমরা জেলার বাইরে গিয়ে বিভিন্ন দলের হয়ে কখনও ব্যাক্তির হয়ে ভোটে প্রচার করেছি। মূলত এলাকার উন্নয়ন অথবা প্রার্থীর গুনগান গেয়ে জারি, সারি, কবি গানের বোল তুলে মানুষের মন পেতে চেষ্টা করেছি। এবার জেলায় ডাক পাব বলে আশা করছি।” ভোটের বাজারে এটা আমাদের বাড়তি রোজগার। তাই গান বাঁধতেও শুরু করেছি।”

কী সেই গানের বোল জানতে চাইলে কার্তিক বাবু শোনান মুখ্যমন্ত্রীর প্রশংসায় বাঁধা গান, ‘যাদের মুখে তুলে দিলে অন্ন, শিল্পী সমাজ আজ ধন্য’। এহেন শিল্পী নিয়ে অভিনব প্রচারে নিজেদের গুণাগুণ সমাজে তুলে ধরে প্রচারে নতুনত্ব আনতে চাইছে তৃণমূল নেতা সৌমিক হোসেন। তিনি বলেন, “বাংলার জারি সারি আসলে মাটির কথা বলে। সেই মাটির শিল্পীদের নিয়ে আমরা মানুষের কাছে গিয়ে আমাদের উন্নয়নের কথা মানুষের মাঝে তুলে ধরব।” পিছিয়ে নেই কংগ্রেসও। দলের নেতা যদুরাম ঘোষ বলেন, “ভাবছি বোলান, বাউল শিল্পীদের এবার প্রচারে নিয়ে আসব।” তবে ডাকলেই যে এই সব মাটির মানুষ, মাটির গানওয়ালাদের মিলবে তেমনটাও নয়। বেশ কিছু শিল্পীর দাবি, শুধু টাকার জন্য ইজ্জত দেব না। প্রার্থীর মূল্যায়ন করে তবেই তাঁর প্রচারে যাব।”

[কোচবিহারে মনোনয়ন জমা দেওয়াকে কেন্দ্র করে ধুন্ধুমার, প্রকাশ্যে আইসিকে ধমক মন্ত্রীর]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ