সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পিজি হাসপাতলে নিয়ে আসার পর ৯ ঘণ্টা কার্যত বিনা চিকিৎসায় ফেলে রাখায় আহত সিপিএম কর্মী হীরু লেটের অবস্থা আরও সংকটজনক হয়ে উঠেছে। শুক্রবার বাধ্য হয়ে তাঁকে বিধাননগরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে আইসিসিইউ-তে রাখা হয়েছে তাঁকে। গত বৃহস্পতিবার নলহাটিতে দুষ্কৃতীদের বোমাবাজিতে গুরুতর জখম হন তিনি। এই ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক সূর্য মিশ্র। তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দিতে গিয়ে দুষ্কৃতীদের আক্রমণে যাঁরা আহত হচ্ছেন, তাঁদের চিকিৎসার কি কোনও দায়িত্ব নেই রাজ্য সরকারের?’ মিশ্র আরও বলেন, ‘বিনা চিকিৎসায় এরকম গুরুতর আহত একজনকে ফেলে রাখা হলো কেন? এর পিছনে কী উপরতলার কোনও নির্দেশ ছিল?’
বৃহস্পতিবার নলহাটি-১ ব্লক অফিসে পঞ্চায়েত নির্বাচনের মনোনয়নপত্র জমা দিতে যাওয়ার সময় দুষ্কৃতীদের আক্রমণে গুরুতর আহত হন হীরু লেট। হামলার অভিযোগ তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। একই মিছিলে আহত হন সিপিআই(এম) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও প্রাক্তন সাংসদ ডা: রামচন্দ্র ডোম-সহ আরও বেশ কয়েকজন। ওই মিছিলের পিছন দিকে ছিলেন হীরু লেট। দুষ্কৃতীরা তাঁকে পিছন থেকে বোমা মারে। রক্তাক্ত অবস্থায় তিনি মাটিতে পড়ে যান। তাতেও রেহাই মেলেনি। দুষ্কৃতীরা তাঁকে নির্মমভাবে পেটায়। আক্রমণে তাঁর মুখের ডানদিকের সবকটি হাড় ভেঙে যায় এবং গলা ও মাথায় তিনি চোট পান। রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে পড়ে থাকতে দেখে বিডিও অফিসের কর্মীরা একটি গ্যারেজের মধ্যে নিয়ে যায় এবং তাঁর ছেলের হাতে কিছু টাকা দিয়ে নলহাটি হাসপাতালে না নিয়ে গিয়ে সরাসরি বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। বাম কর্মী-সমর্থকরা আহত হীরু লেটকে নিয়ে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু সেখানে অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে পিজি হাসপাতালে রেফার করেন চিকিৎসকরা।
শুক্রবার ভোর ৫-২০মিনিট নাগাদ হীরু লেটকে পিজি হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। সঙ্গে ছিলেন নলহাটির স্থানীয় পার্টিকর্মীরা ও হীরু লেটের ভাই সুভাষ লেট, ছেলে প্রভাস লেট। কিন্তু এখানেও জরুরি বিভাগের বাইরে তাঁকে দীর্ঘক্ষণ ভর্তি না করে ফেলে রাখা হয় বলে অভিযোগ। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, প্লস্টিক সার্জারি করা হবে! কিন্তু বেড খালি নেই। প্রায় ৯ ঘণ্টা এভাবে পড়ে থাকায় আহত হীরুবাবুর শ্বাসকষ্ট শুরু হয় এবং অবস্থার আরও অবনতি হতে থাকে। দুপুর আড়াইটা নাগাদ শেষ পর্যন্ত বাধ্য হয়েই পরিবারের সকলে সিদ্ধান্ত নিয়ে বিধাননগরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাঁকে নিয়ে যান। সেখানে আইসিসিইউ-তে তাঁকে রাখা হয়েছে। বামেদের তরফে তাঁর চিকিৎসার খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.