সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: ভোট যুদ্ধে ভাই-বোন। এবার সহযোদ্ধা হয়ে ভোটের ময়দানে অবতীর্ন হলেন সৌমেন-সুপ্রিয়া। তাঁরা পুরুলিয়ার কাশীপুর ব্লকের বাসিন্দা তথা স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক স্বপন বেলথরিয়ার ছেলে মেয়ে। দুজনেই এবার ত্রি-স্তর পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূলের প্রার্থী। তবে এই দু’জনের মধ্যে বোন রাজনীতিতে একেবারেই আনকোরা। কিন্তু তাতে কি? দাদা তো রয়েইছেন। দাদা যে তাঁর বাবার মতই একেবারে পোড়খাওয়া রাজনীতিবিদ হয়ে উঠছেন! তাই দাদা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়ার হাত ধরেই ভোট বৈতরণী পার হওয়ার অপেক্ষা করছেন বোন সুপ্রিয়া। এমনিতে সৌমেনবাবু কাশীপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি। তবে দলের রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশে এবার জেলা পরিষদের হুড়া ব্লকের ২৩ নম্বর আসন থেকে লড়ছেন। তাছাড়া সভাপতির আসন এবার মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত। এলাকার বিধায়ক স্বপন বেলখথরিয়া এই সুযোগ হেলায় হারাতে চাননি মেয়ে সুপ্রিয়া হালদারকে কাশীপুর পঞ্চায়েত সমিতির ২৭ নম্বর আসন থেকে প্রার্থী করেছেন। তাহলে কি বিধায়ক কন্যা জিতলে তিনিই সভাপতির আসনে?
সভাপতির আসনের দাবিদার নিয়ে কানাঘুষো আলোচনা হলেও সেদিকে মোটেই নজর দিচ্ছেন না সুপ্রিয়াদেবী। কীভাবে বিপুল মার্জিনে জয় ছিনিয়ে নেওয়া যায়, সেটাই এখন তাঁর লক্ষ্য। তাই বাড়িতে দাদা যতক্ষণই থাকছেন, কিছুতেই তাঁকে ছাড়ছেন না সুপ্রিয়া। নির্বাচনী লড়াইয়ের নানান কৌশল জেনে নিচ্ছেন। তবে শুধু দাদা নয়, সুপ্রিয়াকে জেতাতে দাদার স্ত্রী তনুশ্রী বেলথরিয়া মিশ্রও মাঠে নেমেছেন। আসলে ননদ বলে কথা। তাই ননদকে নিয়ে প্রচারেও যাবেন, কথা দিয়েছেন বৌদি। দাদা নিজের আসন নিয়ে ভীষণ ব্যস্ত থাকায় বোনকে সেভাবে সময় দিতে না পারলেও বৌদি তো রয়েইছে। আর সর্বোপরি মাথার ওপর ছাতার মতো বাবাতো আছেনই। সব মিলিয়ে বিধায়ক পরিবারে এখন শুধুই ভোট।
দাদা সৌমেন শুধু পোড় খাওয়া রাজনীতিবিদ নন। কমপিউটার সায়েন্সে বিটেকও। সল্টলেকের সেক্টর ফাইভে সুইজারল্যান্ডের একটি সফটওয়্যার কোম্পানিতে মোটা মাইনের চাকরিও করেছেন দু’বছর। কিন্তু বাবার পথ অনুসরণ করে রাজনীতির অমোঘ টানে সেই চাকরি ছেড়েছেন। ২০০৯ থেকে দলের যুব নেতার দায়িত্ব সামলেছেন। তাই দাদার মতো বোন এবার বাবাকে দেখে রাজনীতিতে নামলেন। তিনি বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরের গৃহবধূ। কাশীপুরের মাইকেল মধুসূদন কলেজ থেকে ২০১১ সালে বিএ গ্র্যাজুয়েট। এখন স্বামী ও দুই ছেলেকে নিয়ে তাঁর জমাটি সংসার। তবুও বাবার কথায় রাজনীতিতে নেমে পড়েছেন। যদিও সুপ্রিয়া বলেন, “আমি কলেজ ভোটে দাঁড়িয়েছিলাম। কিন্তু জিততে পারিনি। আসলে ভালভাবে প্রচার করা যায়নি। তবে এবার তা হবে না। আমার হয়ে প্রচারে নামবে দাদা, বৌদি, বাবা। তাছাড়া আমি তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রার্থী। ফলে আমি জিতবই।” ইতিমধ্যেই বোনের সমর্থনে দেওয়াল লেখা শুরু করেছেন দাদা সৌমেন। তাঁর কথায়, “এবার আমার জেলা পরিষদের আসন। ফলে লড়াই আরও বেশি। তবে দল যে দায়িত্ব দিয়েছে তা সফল করবই। তাই নিজের প্রচারের কাজের মধ্যেও যতটা পারছি বোনকে সাহায্য করছি।”
ছবি: সুনীতা সিং
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.