ধীমান রায়, কাটোয়া: প্রতিবেশী এক পরিবারের সঙ্গে নির্মাণকাজ নিয়ে বেশ কয়েকদিন ধরেই সংঘাত চলছিল। যার পরিণতি হল চরম। ফেসবুক লাইভে বিষ খেলেন যুবক ও তার মা। ঘটনাটি ঘটেছে পূ্র্ব বর্ধমানের (Purba Bardhaman) কয়রাপুরে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই যুবকের নাম আব্বাস আলি। তিনি একটি বৈদ্যুতিন মাধ্যমে সাংবাদিকতা করেন। অবসর সময়ে ইলেকট্রিক ওয়ারিংয়ের কাজ করেন। বাড়িতে রয়েছেন স্ত্রী, এক মেয়ে, বৃদ্ধা বিধবা মা, ভাই ও ভাইয়ের পরিবার। রবিবার ছিল ইদ উল আজহা। ওদিন রাত বারোটার পর আব্বাস আলি ফেসবুকে লাইভ করেন। সেই লাইভে ছিলেন তাঁর মা। প্রায় ৩৫ মিনিটের লাইভে সমস্যার বিষয় তুলে ধরেন। জানান, “পাড়ার বাসিন্দা শেখ বাদশা, রহিত শেখ, শকুন্তলা বিবিরা বাড়ি নির্মাণ করছেন। জোর করে রাস্তার জায়গা আটকে সেখানে কার্নিশ তৈরি হচ্ছে। ফলে যাতায়াতের রাস্তা অবরুদ্ধ হয়ে গিয়েছে।” গরুর গাড়ি চলাচলের ক্ষেত্রে সমস্যা হবে বলে আশঙ্কাপ্রকাশ করেছেন আব্বাস আলি।
তাঁদের কথায়, “এই সমস্যা নিয়ে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের কাছে বারবার গিয়েছি। পুলিশের কাছেও বলা হয়েছিল। ১৪৪ ধারা জারি হয়। কিন্তু ওই পরিবার ধনী ও প্রভাবশালী হওয়ায় তাঁরা আইনের তোয়াক্কা না করেই জোর করে বাড়ি নির্মাণের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।” তৃণমূলের তরফে উলটে আব্বাসদের হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। নিজেদের বক্তব্য জানানোর পরই, আব্বাস ও তাঁর মা বলেন, “আমাদের বেঁচে থেকে লাভ নেই, আমরা বিষ খাচ্ছি।” লাইভ চলাকালীন শোনা যায়, ঘরের দরজা পরিবারের কেউ ধাক্কাধাক্কি করছে। পরিবারের সদস্যরা তাঁদের বাধা দেওয়ার চেষ্টাও করেন।
আউশগ্রামের করোটিয়ার বাসিন্দা আব্বাসের এক সহকর্মী কুন্তল চট্টোপাধ্যায় লাইভটি দেখার পরই গুসকরা পুলিশ ফাঁড়িতে জানান। তারপর পুলিশ পৌঁছে যায় আব্বাসের বাড়িতে। এরপর পুলিশ দরজায় ধাক্কাধাক্কি করলে আব্বাসের মা কোনওরকমে দরজা খুলে দেন। পুলিশ দু’জনকে বর্ধমান হাসপাতালে ভরতি করে। বিল্বগ্রাম অঞ্চল তৃণমূল সভাপতি ফাল্গুনী গোস্বামী বলেন, “আব্বাসের সঙ্গে প্রতিবেশীর ওই সমস্যা নিয়ে একাধিকবার আলোচনা হয়েছে। মাপজোখও হয়েছে। যারা নির্মাণকাজ করছে তারা যে কার্নিশ নির্মাণ করছিল, আমরা বলার পর কেটে ছোট করে দিয়েছে। পঞ্চায়েতের অনুমতি নিয়ে চারদিকে যথাযথ ছাড় দিয়ে বাড়ি করছে। যদিও আর সমস্যা হওয়ার কথা নয়। এই অবস্থায় আব্বাস আলি আবেগপ্রবণ হয়ে বিষপান করে ঠিক কাজ করেনি। ও সুস্থ হয়ে উঠলে প্রয়োজনে আবারও আলোচনায় বসা হবে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.