Advertisement
Advertisement

Breaking News

শিশু

মমতাময়ী! জবা বাগানে ফেলে যাওয়া নবজাতকের প্রাণ বাঁচালেন মহিলা

নবজাতকের ত্রাণকর্তা ওই মহিলার নাম আঙ্গুরা বেগম।

woman rescued newborn child from a garden at Bagnan in Uluberia

নবজাতকের সঙ্গে আঙ্গুরা বেগম

Published by: Soumya Mukherjee
  • Posted:July 27, 2019 8:48 pm
  • Updated:July 27, 2019 8:48 pm

সন্দীপ মজুমদার, উলুবেড়িয়া: গর্ভধারিনী মা অথবা জন্মদাতা বাবা তাকে ফেলে দিয়েছিল জবা ফুলের বাগানে। মাত্র মাস খানেকের ওই শিশুপুত্রটিকে পোকা ও পিঁপড়েতে কুরে কুরে খাচ্ছিল। নির্বাসিত ওই নবজাতককে অসহ্য সেই যন্ত্রণা থেকে উদ্ধার করে সন্তান স্নেহে মানুষ করতে চেয়েছিলেন এক গরিব সংখ্যালঘু মহিলা। যদিও আইনি জটিলতায় সেই আশা পূরণ হল না তাঁর। তার বদলে সেই শিশুটির স্থান হতে চলেছে সরকারি হোমে। শনিবার ঘটনাটি ঘটেছে হাওড়া জেলার বাগনান থানার পিপুল্যান গ্রামে।

[আরও পড়ুন: অস্তিত্ব সংকটে ইছামতী, প্রাণ ফেরাতে একক লড়াই নদিয়ার তরুণের]

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, কেউ বা কারা মাত্র এক মাস বয়সের এই শিশুপুত্রটিকে জবা ফুলের বাগানে ফেলে দিয়ে যায়। শনিবার দুপুরে আঙ্গুরা বেগম নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা বাগানের পাশের রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় হঠাৎ শিশুটির কান্না শুনতে পান। সেই শব্দ শুনে বাগানের দিকে এগিয়ে যেতেই শিশুটিকে দেখতে পান তিনি। ক্ষুদে ওই শিশুটি একটি জবা গাছের নিচে পড়ে ছটফট করছিল। আর তার সারা শরীর ভরতি হয়ে গিয়েছিল ছোট ছোট লাল পিঁপড়েতে। তাদের কামড়ের যন্ত্রণায় শিশুটি তীব্র চিৎকার করছিল এবং হাত-পা ছুঁড়ছিল। এই দৃশ্য দেখে তৎক্ষণাৎ স্থানীয় বাসিন্দাদের ডাকেন আঙ্গুরা। বিষয়টি জানাজানি হতেই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে স্থানীয় এলাকায়।

Advertisement

এরপর সকলে মিলে বাগান থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করেন। সেসময় শিশুটির মাথায় ছোট একটি আঘাতের চিহ্নও লক্ষ্য করেন তাঁরা। কালবিলম্ব না করে শিশুটিকে নিয়ে সবার সঙ্গে স্থানীয় এক চিকিৎসকের কাছে যান ওই মহিলা। সেখানে চিকিৎসা করানোর পর স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য ও বাসিন্দাদের কাছে শিশুটিকে লালন-পালন করার ইচ্ছাও প্রকাশ করেন তিনি। কিন্তু, সকলে জানান এ বিষয়ে নির্দিষ্ট কিছু আইনি বিধিনিষেধ রয়েছে। তাই খবর দেওয়া হয় বাগনান থানায়।

Advertisement

[আরও পড়ুন: ধর্মের কল! দু’দশক আগে শিক্ষক পিটিয়েছিলেন কোন্নগরের প্রহৃত অধ্যাপক নিজেই]

পুলিশ এসে ওই শিশুটিকে উদ্ধার করে প্রথমেই স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য বাগনান গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যায়। আঙ্গুরা বেগমও শিশুটির সঙ্গে থানা পর্যন্ত আসেন। হাসপাতালে শিশুটির স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার সময়ও শিশুটির পাশে ছিলেন তিনি। শিশুটির স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার পর তাকে হোমে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয় বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। এটি কোনও দুঃস্থ পরিবারের কাজ বলেই প্রাথমিকভাবে পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা মনে করছেন। তাঁদের মতে, একাধিক সন্তান থাকার জন্য হয়তো কোনও পরিবার নতুন কোনও সন্তানের ভরণপোষণের দায়িত্ব নিতে চায়নি। তাই এই সন্তানটিকে জবা ফুলের বাগানে রেখে দিয়ে গিয়েছিল। তারপর ওই রাস্তা দিয়ে অনেকেই যাতায়াত করেছেন। কিন্তু, শিশুটির কান্না কারও কানে পৌঁছায়নি। একমাত্র আঙ্গুরা বেগমই শিশুটির কান্না শুনতে পান। তাঁর জন্যই শিশুটির জীবন রক্ষা হয়েছে বলে স্থানীয় বাসিন্দারা মনে করছেন।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ