পলাশ পাত্র, তেহট্ট: অজানা জ্বর ও ডেঙ্গুর আতঙ্ক থাবা বসিয়েছে রাজ্যে। জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর খবরও সামনে এসেছে। আর সেই আতঙ্ক দূর করতে অভিনব উদ্যোগ নিলেন তেহট্টের প্রমিলাবাহিনী। প্রশাসনিক উদ্যোগ বা সাহায্যের অপেক্ষায় বসে না থেকে নিজেরাই পরিবেশ পরিষ্কার রাখতে মাঠে নেমে পড়লেন। সুমনা, রুপা, মন্দিরা, প্রিয়াঙ্কা, মুনমুন, অঞ্জু-সহ জনা পনেরো মহিলার এমন কাজ প্রশংসা কুড়লো এলাকাবাসীর।
তেহট্ট পলাশীপাড়া মৎস্যজীবী অধ্যুষিত হালদার পাড়ার বাসিন্দা ওই মহিলারা। তিনজন কলেজ পড়ুয়া। বাকিরা গৃহবধূ। অজানা জ্বর, ডেঙ্গু হানা রুখতে ও একইসঙ্গে এলাকায় সচেতনতা বাড়াতে মঙ্গলবার নিজেরাই সাফাই অভিযানে নামেন তাঁরা। পঞ্চায়েত, সমিতি ও প্রশাসনের কাজ, তাঁরা অবলীলায় হাতে কোদাল, বেলচা, বাঁশ, ঝাঁটা, ঝুড়ি নিয়ে করে দেখালেন। বাড়ির রান্না ও গৃহস্থলির কাজ বন্ধ রেখে সমাজসেবায় নেমে পড়েছিলেন। এলাকার একটি বড় মাঠে জমে থাকা নোংরা আর্বজনা, জমা জল পরিষ্কার করেন। তাঁদের কাজকে সম্মান জানিয়েছেন ও প্রশংসা করেছেন তেহট্টের বিডিও অভিজিৎ চৌধুরী। তিনি বলেন, “নি:সন্দেহে ওঁদের কাজ প্রশংসনীয়। তবে ডেঙ্গি হানা রুখতে ও মানুষকে সচেতন করতে প্রশাসনের তরফ থেকেও ওই এলাকায় পুস্তিকা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া অন্যান্য ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে।” স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য প্রদীপ হালদারও মহিলাদের প্রশংসায় পঞ্চমুখ।
[রানাঘাট সন্ন্যাসিনী ধর্ষণে মূল অভিযুক্তর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড]
স্থানীয় ও প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার ওই এলাকার বাড়ি বাড়ি গিয়ে মানুষকে ডেঙ্গু নিয়ে সচেতন করেন সুমনা, মন্দিরারা। তারপর এলাকার মহিলাদের সঙ্গে কথা বলে সেখানকারই একটি মাঠে পড়ে থাকা নোংরা আর্বজনা পুড়িয়ে দেন ও জমা জল পরিষ্কার করেন। ওই এলাকায় রয়েছে একটি স্কুল। মশার উৎপাতে এলাকার মানুষের সঙ্গে স্কুল পড়ুয়ারাও আতঙ্কে ভুগছে। বছর পঁয়তাল্লিশের গৃহবধূ অঞ্জু হালদার বলেন, জ্বরে আক্রান্ত হয়েই এখানে মাস দেড়েকের মধ্যে মারা গিয়েছেন এক যুবক ও এক গৃহবধূ। তাই এলাকার মানুষের মধ্যে আতঙ্ক রয়েই গিয়েছে। তাই এবার থেকে এলাকা সাফ রাখতে বদ্ধপরিকর তাঁরা।