Advertisement
Advertisement

Breaking News

কালীপুজোয় খড়দহের শ্রীপাদে শ্যামা সাজবেন শ্যামসুন্দর, কিন্তু কেন?

বুধবার রাতে শ্যামদর্শনে মন্দিরে উপচে পড়বে ভিড়।

Lord Krishna is Shyama here

শ্রীপাদে শ্যামার সাজে শ্যামসুন্দর (ফাইলচিত্র)।

Published by: Shammi Ara Huda
  • Posted:November 6, 2018 6:47 pm
  • Updated:November 7, 2018 1:26 pm

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দীপান্বিতা অমাবস্যার যোগ থাকতে থাকতেই শ্যামা সাজবেন শ্যামসুন্দর। সেই সজ্জার এমনই বিশেষত্ব যে শ্যামকে দেখার পর দেবী কালী রূপে ভ্রম হতে পারে। ৪০০ বছর ধরে নিত্যানন্দ মহাপ্রভুর স্মৃতিবিজরিত খড়দহের শ্রীপাদে চলছে শ্যামসুন্দরের শ্যামার সজ্জাপর্ব। বুধবার একইভাবে এবারও শ্যামা সাজবেন শ্যাম। সকাল থেকেই শুরু হবে সাজগোজের পর্ব। দুপুরের মধ্যে সজ্জা সম্পূর্ণ হলে সন্ধ্যায় ভক্তদের জন্য মন্দিরের প্রবেশদ্বার খুলে দেওয়া হবে। অন্যান্য বছরের মতো এবারেও শ্যামা দর্শনে দর্শনার্থীদের ভিড় উপচে পড়বে শ্রীপাদে। এমনটাই মনে করছেন নিত্যানন্দ মহাপ্রভুর বংশধর দেবমাল্য গোস্বামী। দেবমাল্যবাবু মন্দিরের ট্রাস্টি বোর্ডের একজন সদস্য। তিনি বলেন, ‘শ্যামসুন্দরকে সযত্নে সাজানো হয়। সজ্জা সম্পূর্ণ হলে বোঝা মুশকিল শ্যামা নাকি কালী। তবে কালী নয়, সজ্জার পর কৃষ্ণরূপেই পূজা পান শ্যামসুন্দর।’

[নববধূর সাজে নদিয়ার ভট্টাচার্য বাড়িতে এসেছিলেন দেবী]

দ্বীপান্বিতা অমাবস্যায় যখন মা কালীর পুজো চলছে রাজ্য জুড়ে, তখন খড়দহের শ্রীপাদে কেন এই ব্যতিক্রম? শ্যামসুন্দরকেই বা কেন শ্যামা সাজানো হয়? এর উত্তর খুঁজতে হলে একটু পিছিয়ে আসতে হবে, কলি থেকে একেবারে ত্রেতা যুগে। পুরাণে নারায়ণের দর্শন পেতে ঘোর তপস্যা শুরু করেন ঋষি আয়ান। দীর্ঘ তপস্যার ফলে নারায়ণ দর্শন দেন। এরপরই আয়ানকে বর চাওয়ার সুযোগ দেওয়া হলে নারায়ণের স্ত্রী লক্ষ্মীদেবীকে পাওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেন ঋষি। প্রতিশ্রুতিবদ্ধ নারায়ণ সম্মতি দেন। সেই সঙ্গে আয়ানকে জানান, দ্বাপরযুগে দেবী লক্ষ্মীকে স্ত্রী হিসেবে পাবেন আয়ান। তবে তখন তাঁর নাম থাকবে রাধিকা। একই সঙ্গে আয়ান ক্লীব হয়ে জন্মাবেন। দ্বাপরযুগে রাজা বৃষভানুর কন্যা রাধিকার পাশাপাশি কৃষ্ণরও জন্ম হবে। নারায়ণের বরেই একসময় রাধিকার সঙ্গে কালীভক্ত আয়ানের বিয়ে হয়ে যায়। একদিন দেখা যায় বনের মধ্যে শ্রীরাধিকা কৃষ্ণের সঙ্গে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। এই দৃশ্য দেখে সঙ্গে সঙ্গেই দাদা আয়ানের কানে খবরটি তুলে দেন বোন কুটিলা। রেগে আগুন আয়ান স্ত্রী রাধিকাকে মারধরের উদ্দেশ্যে সেই বনে ছুটে আসেন। এদিকে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ গোটা বিষয়টি জানতে পেরে যান। ক্ষিপ্ত আয়ানকে দেখে তিনি কালীর রূপ ধারণ করেন। এই দেখে রাধিকা দেবী কালীর পায়ে পুষ্পাঞ্জলি দিতে থাকেন। এই দৃশ্য দেখেই আয়ানের রাগ গলে জল হয়ে যায়। বাড়িতে ফিরে তাঁকে ভুল বোঝানোর জন্য বোন কুটিলাকে বকাঝকাও করেন। এই ঘটনার কিছুদিন পরই আয়ানের মৃত্যু হয়। বনের মধ্যে কৃষ্ণের কালীর রূপ ধারণকে স্মরণে রেখেই খড়দহের শ্রীপাদে শ্যামা সাজেন শ্যামসুন্দর।

Advertisement

[মায়ের মুখ পুড়িয়ে অ্যাসিড আক্রান্তদের সম্মান জানাল এই পুজো]

খড়দহের শ্যামসুন্দরের মন্দিরের বিশেষ পরিচিতি রয়েছে। শ্যাম দর্শনে দূরদূরান্ত থেকে ভক্তরা এখানে ছুটে আসেন। আনুমানিক ১৫২২ খ্রিস্টাব্দে মহাপ্রভুর নির্দেশেই নবদ্বীপ ছেড়ে খড়দহে চলে এসেছিলেন নিত্যানন্দ মহাপ্রভু। বিবাহের পর সেখানেই বসতি স্থাপন করেন। খড়দহের পুরন্দর পণ্ডিতের দান করা ২৬ বিঘা জমিতে নিত্যানন্দ মহাপ্রভুর নামে ছেলে বীরভদ্র মহাপ্রভু কুঞ্জবাটিতে শ্যামসুন্দরের প্রতিষ্ঠা করেন। তারপর মন্দির প্রতিষ্ঠার পর সেখানেই নিত্য পুজো পাচ্ছেন শ্যামসুন্দর।

Advertisement

[সম্প্রীতির পুজো, রুবিনা বিবির তুলির টানেই এখানে চক্ষুদান হয় শ্যামা মায়ের]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ