Advertisement
Advertisement

পাহাড় চূড়ায় মন্দির, কালীপুজোয় সাধনা করতেন অগ্নিযুগের বিপ্লবীরা

ঝালদা থানাতে হয় কালীপুজোর অন্নকূট।

Story of Purulia Kali Puja

পুরুলিয়ার শিলফোড় পাহাড়ের কালী প্রতিমা। ছবি: সুনীতা সিং।

Published by: Shammi Ara Huda
  • Posted:November 6, 2018 1:28 pm
  • Updated:May 24, 2023 6:12 pm

সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া:  পরাধীন ভারতে ব্রিটিশ পুলিশের ভয়ে পাহাড়ের গুহায় লুকিয়ে থাকতেন অগ্নিযুগের বিপ্লবীরা। পুরুলিয়ার সেই পাহাড়েই শুরু হয়েছিল কালীপুজো। গোপন আস্তানার এই পুজোতে বিপ্লবীরাও শামিল হতেন। শোনা যায়, কালীপুজোর দিন পাহাড়ে বসে বিপ্লবীরা সাধনা করতেন। পুরুলিয়ার ঝালদার শিলফোড় পাহাড়ের পুজো এবার ৮৪ বছরে পা দিল। এখনও পাহাড়ের উপরের কালী মন্দিরেই পুজো হয়। মায়ের টানে ১৬০টি সিঁড়ি বেয়ে ১৩০ ফুট উঁচুতে থাকা মন্দিরে ছুটে যান ভক্তরা। হাজার হাজার ভক্তের সমাগমে গমগম করে  শিলফোড় পাহাড়।

দেশ তখনও স্বাধীন হয়নি। ১৯৩৪ সালে  পুরুলিয়ার ঝালদা শিলফোড় পাহাড়ে মূর্তি প্রতিষ্ঠা করে কালীপুজো শুরু করলেন  রায়সাহেব প্রেমচাঁদ মোদক।  এই পুজো এখন শিলফোড় পাহাড় সর্বজনীন কালীপুজো নামে পরিচিত। শুধু ঝালদার সাধারণ বাসিন্দারাই নন, এই পুজোর সঙ্গে যুক্ত ঝালদা থানাও। কালীপুজোয় অন্নকূট হয় ঝালদা থানাতেই। ঝালদার তৎকালীন জমিদার প্রেমচাঁদ মোদক রায় সাহেব উপাধি দিয়েছিল ব্রিটিশরা। এরপর শ্যামা মায়ের আরাধনার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। শিলফোড় পাহাড়ের মাথায় তৈরি হয় মন্দির। মূর্তি প্রতিষ্ঠা করে পুজো শুরু করেন জমিদার প্রেমচাঁদ মোদক। এদিকে শিলফোড় পাহাড়ের গুহাতে থাকতেন অগ্নিযুগের বিপ্লবীরা। পুজোতে শামিল হন তাঁরাও। পুরোহিত ছিলেন রাধারমন চক্রবর্তী।  মন্দিরে মা কালীর  নিত্য পুজো হয়।

Advertisement

[সম্প্রীতির পুজো, রুবিনা বিবির তুলির টানেই এখানে চক্ষুদান হয় শ্যামা মায়ের]

কালের নিয়মে শিলফোড় পাহাড়ের শ্যামা কালীর পুজোয় অনেক পরিবর্তন এসেছে। জমিদারের পুজোয় লেগেছে সর্বজনীনতার ছোঁয়া। এমনকী, এলাকার কালীপুজোয় যুক্ত হয়েছে ঝালদা থানাও।  শিলফোড় পাহাড় সর্বজনীন কালীপুজো কমিটির সভাপতি বিষ্ণু আগরওয়াল বলেন,  “শ্যামা কালীর আরাধনাকে কেন্দ্র করে শিলফোড় পাহাড়ে  চারদিন ধরে রীতিমতো  উৎসব চলে।” পরাধীন ভারতে যখন দিকে দিকে বিদ্রোহের আগুন জ্বলছে। তখনও অন্ধকারে ডুবেছিল পুরুলিয়ার জঙ্গলমহলের এই শিলফোড় পাহাড়। বিপ্লবীদের আগমনে পাহাড় ও লাগোয়া এলাকার বাসিন্দারা স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন। জমিদার রায় সাহেবের মন্দির তৈরির সূত্র ধরে পাহাড় ও লাগোয়া এলাকায় বদল আসে। এখনকার শিলফোড় পাহাড়ের সঙ্গে সেদিনের ছবির মিল পাওয়াই বেশ শক্ত। সরকারি সহায়তায় ১৯৭৩ সালে এই শিলফোড় পাহাড়েই তৈরি হয় হিল পার্ক। বেশকিছু দিন রমরমিয়ে চলার পর একটা দীর্ঘ সময় ধরে বেহাল দশায় ছিল এই হিল পার্ক। গত বছর ঝালদা পুরসভার উদ্যোগে ফের সেজে উঠেছে শিলফোড় পাহাড়। দীপাবলির আালোর রোশনাইয়ে নজর কেড়েছে পাহাড়ের উপরের কালীমন্দিরও।

Advertisement

[দেড় কোটি টাকার গয়নায় সেজে ওঠেন নৈহাটির ‘বড়মা’]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ