ভারতে অঞ্চল-ভেদে ‘ফ্লেভারড’ কন্ডোমের বাজার একেক রকমের। একটি বড় ফার্মা কোম্পানির শীর্ষকর্তার মন্তব্য ঘিরে হইহই।
রাজীব জুনেজা, ‘ম্যানকাইন্ড ফার্মা’-র এমডি, একটি চকিত মন্তব্যে দেশকে সচকিত করে তুলেছেন। তাঁর বক্তব্য, ভারতে অঞ্চল-ভেদে ‘ফ্লেভারড’ কন্ডোমের বাজার একেক রকমের। যেসব কন্ডোম সুগন্ধি-বর্জিত সেসবের তেমন বাজার নেই। তবে গন্ধমথিত কন্ডোমের বাজারেও যথেষ্ট তারতম্য আছে। ‘চকোলেট’ ও ‘স্ট্রবেরি’ ফ্লেভারের কন্ডোম সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয়। পান (‘বিটল’) ফ্লেভারের কন্ডোমের বিক্রি সবচেয়ে কম নজরকাড়া। তা চলে মূলত উত্তরপ্রদেশের দিকে। ‘সাউথ মে লোগ পসন্দ করতে হ্যায় জেসমিন কো, দে লাইক ফ্লাওয়ার্স’। রাজ সামানির ‘ফিগারিং আউট’ পডকাস্টে রাজীব জুনেজা এই কথা বলায় কৌতূহলের পারদ যে সপ্তমে ধাবিত হবে, বলা বাহুল্য। দেশের পূর্বও পশ্চিমের টেস্ট তাহলে কেমন?
স্বাভাবিকভাবেই উঠেছে এই প্রশ্ন। রাজীবের সরাসরি উত্তর– এখানকার মানুষ যথেষ্ট উদার, সব ধরনের সুগন্ধি কন্ডোমের প্রতি সমান খাতির রেখে চলে। মাঝে ‘সাবুদানা’ ফ্লেভারের কন্ডোম বাজারে আনার চেষ্টা হয়েছিল। তঁার মতে– এসব গিমিক, বাড়াবাড়ি। পছন্দের নামে অত্যাচার।
যে-দেশে ‘সেক্স’ শব্দটি শুনেই ভুরু কুঁচকে যায়, সেখানে ফ্লেভারড কন্ডোমের বিক্রিবাটা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে, এ-ও এক প্রাপ্তি বটে! জন্মনিয়ন্ত্রণ এবং যৌন রোগের ছেঁায়াচ বঁাচিয়ে যৌনতায় আলাদা মাত্রা যোগ করার প্রশ্নে, কন্ডোমের ভূমিকা অনস্বীকার্য। কিন্তু ভারতের সামাজিক জীবনে কন্ডোমের প্রতি বক্রদৃষ্টি রয়েই গিয়েছে। এমন বিজ্ঞাপনী কনটেন্টের অভাব নেই, যেখানে ওষুধের দোকানে গিয়ে ইচ্ছুক পুরুষটি কিছুতেই সহজে কন্ডোম কেনার কথাটি পাড়তে পারছে না। সমানে উসখুস করছে, এটা-ওটা কিনছে, সময় যাচ্ছে বয়ে। ভারতীয় সমাজে মেয়েদের কন্ডোম কেনার প্রশ্নেও রয়েছে তীব্র আপত্তি ও জড়তার অভিব্যক্তি।
নতুন শতকে বিধি ও নিয়মের প্রতি আমরা নমনীয় হয়েছি বটে, তবে অতি বড় আধুনিকাও দোকানে কন্ডোম কেনার প্রশ্নে তুতলে চলেছে, এমন বিজ্ঞাপন রয়েছে বইকি! সুধীর মিশ্র পরিচালিত ‘সিরিয়াস মেন’ সিনেমার প্রোটাগনিস্ট বিত্তসম্পন্ন সমাজের প্রতি মহা খাপ্পা হয়ে মন্তব্য করেছিল– কন্ডোমে ডট বসানো ও গন্ধ-মাখানো ছাড়া একদল লোকের কোনও কাজ নেই। কথাটির নিহিত নির্যাসটি ফেলে দেওয়ার মতো নয়। যাদের কাছে যৌন-প্রফুল্লতা দামি, তারা সুগন্ধি কন্ডোম নিয়ে ভাবে। ভাবে, কারণ, তাদের হাতে ভাবার সময় আছে, জীবনে অর্থ আছে, স্ট্রেস তুলনায় কম।
কিন্তু জীবনযুদ্ধে তছনছ হতে যাওয়া জনতার, যারা সংখ্যায় অগণিত, তারা এতশত ভাবার সময় পায় না! যৌনতা তাদের কাছে সেই কারণে বংশরক্ষার উপায়– তর ধক্তা মার পেরেক। সম্প্রতি, ডোনাল্ড ট্রাম্প সরকারের বিবৃতি ঘিরে বিতর্ক তুঙ্গে। পূর্বতন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন নাকি গাজায় ৫ কোটি ডলার অনুমোদন করেছিলেন, ১০০ কোটি কন্ডোম কেনার জন্য। যে-অনুদান ট্রাম্প খারিজ করেছেন। ওসব কন্ডোম নাকি ‘এক্সপ্লোসিভ’ বানাতে কাজে লাগায় জঙ্গিরা। যদিও সত্যাসত্য এখনও কুয়াশার ওপারে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.