Advertisement
Advertisement

Breaking News

মেশিন চলতেই দেখি উল্টে গিয়েছে দু’টো পাতা

চোখ বুজে ভাবলে ওইসব দিনের স্মৃতি যেন এখনও সামনে ভেসে ওঠে৷

Memoirs: 25 glorius years of Sangbad Pratidin

৯ আগস্ট ১৯৯২, প্রথম কাগজ৷ ২৩ ২০০২, প্রথম রঙিন মাস্টহেড৷

Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:August 9, 2016 2:41 pm
  • Updated:August 9, 2016 2:41 pm

অঞ্জন বসু: ‘সংবাদ প্রতিদিন’ পত্রিকা যেদিন দিনের আলো দেখল, দেশজুড়ে সেদিন সাড়ম্বরে পালিত হচ্ছে আগস্ট বিপ্লবের ৫০ বছর, সুবর্ণজয়ন্তী উৎসব৷ দেশপ্রেম ও জাতীয় আবেগের ঐতিহাসিক পটভূমিতেই ২৪ বছর আগে যাত্রা শুরু হয়েছিল এই সংবাদপত্রের৷ চোখ বুজে ভাবলে ওইসব দিনের স্মৃতি যেন এখনও সামনে ভেসে ওঠে৷ 

৯ আগস্ট, ১৯৪২–মহাত্মা গান্ধী-র ডাকে ‘ভারত ছাড়ো আন্দোলন’ বা আগস্ট বিপ্লবের সৌজন্যে আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে একটি ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ দিন এবং এক বিরাট দিকচিহ্নও৷ ৯ আগস্ট, ১৯৯২–‘সংবাদ প্রতিদিন’ পত্রিকা যেদিন দিনের আলো দেখল, দেশজুড়ে সেদিন সাড়ম্বরে পালিত হচেছ সেই আগস্ট বিপ্লবের ৫০ বছর, সুবর্ণজয়ন্তী উৎসব৷ দেশের প্রতিটি জেলায় চলছে স্বাধীনতা সংগ্রামের বিভিন্ন্ মুহূর্তের স্মৃতিচারণ৷ দেশপ্রেম ও জাতীয় আবেগের এই ঐতিহাসিক পটভূমিতেই ২৪ বছর আগে যাত্রা শুরু হয়েছিল এই সংবাদপত্রের, অনেক আশা, অনেক স্বপ্ন নিয়ে৷ যাত্রালগ্নে শপথ ছিল, এমন স্মরণীয় দিনে জন্ম যার, তাকেও একদিন এমন গৌরবদীপ্ত জায়গায় পৌঁছে দিতে হবে৷ এইরকম একটা শপথ নিয়েই সেদিন শুরু হয়েছিল একঝাঁক নবীন আর প্রবীণের কঠিন লড়াই, যা অনেক বন্ধুর পথ পেরিয়ে, অনেক বাঁক ঘুরে তাকে আজ এই জায়গায় নিয়ে এসেছে৷ ২৪ টা বছর, সময়ের হিসাবে তো খুব কম নয়! তা-ও পেরিয়ে এসে আজ থেকে শুরু হবে তার ২৫ বছরের যাত্রা৷ পত্রিকার জীবনে এটাও তো একটা ইতিহাস!

Advertisement

৯ আগস্ট-ই পত্রিকা বার করা হবে, এমন সিান্ত নিয়ে কিন্তু তার নির্মাণকাজ শুরু করা হয়নি৷ নানা বাধাবিঘ্ন পেরিয়ে এগোতে এগোতে যখন দেখা গেল, জুলাই মাসটাও প্রায় এসে গেল, তখনই স্থির করা হয়, আগস্ট বিপ্লবের সুবর্ণজয়ন্তীর ঐতিহাসিক দিনটিতেই ‘সংবাদ প্রতিদিন’ প্রথম প্রকাশ করতে হবে, আর বিলম্ব নয়৷ নিতে হবে এই সুবর্ণ সুযোগ৷ এবার শুরু হল প্রায় যুদ্ধকালীন তৎপরতা৷ ঠিকানা, ১৪ নাম্বার রাধানাথ চৌধুরি রোড, কলকাতা-১৫৷ কলকাতার প্রাণকেন্দ্র থেকে দূরে, পূর্ব কলকাতার ট্যাংরা অঞ্চলে৷ ঠিকানা শুনেই তখন অনেকে বলে উঠতেন–‘এমা, অমন জায়গা থেকে আবার কাগজ বেরয় না কি! মানুষ যাবে কীভাবে?’ সত্যিই আমরাও তখন ভাবতাম, ‘পারা যাবে তো সব সামাল দিতে!’

Advertisement

অমন আপাতপ্রান্তিক একটি জায়গা থেকে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়া কিন্তু শেষ পর্যন্ত সত্যিই সম্ভব হয়েছিল৷ নইলে এত বছর টিকে থাকা যেত কীভাবে! এই কঠিন যুদ্ধজয়ের কান্ডারি ছিলেন ‘সংবাদ প্রতিদিন’-এর প্রতিটি কর্মী, যাঁদের অদম্য উৎসাহ আর প্রবল নিষ্ঠার কাছে সমস্ত প্রতিবন্ধকতা খড়কুটোর মতো উড়ে গিয়েছিল৷ কোনও বাধাকেই তখন যেন বাধা মনে হয়নি৷ রাতের পর রাত জেগেছেন বহু সাংবাদিক, বহু কর্মী৷ অতিবর্ষণে তাঁরা দমেননি, দাঙ্গায় তাঁরা ভয়ে গুটিয়ে যাননি, প্রবল শীতেও কাঁপতে কাঁপতে পালিয়ে যাননি৷ খোলা উঠোনে দাঁড়িয়ে ক্যাণ্টিনের সস্তার খাবার, পাউরুটি, ঘুগনি আর বড়জোর ডিমভাজা খেয়ে দিবারাত অবিরাম কাজ করাতেই ছিল সকলের আনন্দ৷ সদ্যোজাত একটা পত্রিকাকে সাদরে বুকে আগলে বাঁচিয়ে রাখা, পায়ে পায়ে একটু একটু করে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার সেই লড়াইয়ের দিনগুলোতে ‘জাতিভেদ’ প্রথাও ছিল না৷ ভোলা বেয়ারার (সকলের স্নেহভাজন, অকালপ্রয়াত) পাশে দাঁড়িয়ে কোনও প্রবীণ সাংবাদিক কাজের ফাঁকে একটু বেরিয়ে দ্রূত হাতে নৈশভোজ সারছেন, এমন দৃশ্যও সেখানে বিরল ছিল না৷ আবার টুটু বসু, শ্রবণ টোডি-র মতো বড় মানুষ ও মালিকেরা ময়দানে মর্নিং ওয়াক সেরে গাড়ি চালিয়ে রাতজাগা কর্মীদের জন্য কখনও ঠোঙাভরা শিঙাড়া-জিলিপি নিয়ে আসছেন, এমন ঘটনাতেও কেউ বিস্মিত হত না৷ তাঁরা যেমন জানতেন রাত ভোর হয়ে গেলেও সব কর্মী তখনও বাড়ি ফিরে যাননি, তেমন রাতজাগা কর্মীরাও ভাবতেন, ওঁরা আসতে পারেন যে কোনও সময়৷

যে কোনও কাজেরই শুরুরও শুরু থাকে, পূর্বরাগের মতো৷ তেমনই, প্রতিদিনেরও রাধানাথ চৌধুরি রোডের আগে আরও দুই ঠিকানা ছিল৷ তারও আগে ঠিকানাবিহীন দিনও গিয়েছে স্বল্প কিছুকাল৷ দিন অবশ্য নয়, দুই-তিনটি মাস৷ সেসব ’৯১ সালের সেপ্টেম্বর, অক্টোবর, নভেম্বর মাসের কথা৷ যখন সদ্য বন্ধ হয়ে যাওয়া এক প্রাচীন সংবাদপত্রের কর্মহীন নবীন বার্তা সম্পাদক তাঁর কিছু বেকার সহকর্মীকে নিয়ে নতুন করে আবার একটি সংবাদপত্র শুরু করার স্বপ্ন নিয়ে ফাইলপত্র নিয়ে একাকী ডালহৌসিপাড়ায় ঘুরে বেড়িয়েছেন৷ তখনও স্বপ্নে দেখা কাগজের কোনও নাম নেই, কারা কাজ করবেন, কীভাবে কী হবে, তার কিছুরই ঠিক নেই৷ প্রস্তাবিত পত্রিকার প্রথম ঠিকানা এল ২ ডিসেম্বর, ১৯৯১৷ বি. বা. দি বাগ অঞ্চলে ৫ নং ক্লাইভ রো-র দ্বিতলে ধানবাদের হিন্দি ‘আজ’ পত্রিকার কলকাতা অফিসের ঘরটিতে দু’টি ফাঁকা টেবিল আর গোটাচারেক চেয়ার নিয়ে শুরু হল নতুন উদ্যমে পত্রিকা প্রকাশের অভিযান৷ তার দ্বিতীয় ঠিকানা, আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু রোড আর বালিগঞ্জ সার্কুলার রোডের সংযোগস্থলের অদূরে টিভোলি কোর্টের বাঁদিকের প্রথম বাড়িটির ছয়তলায়৷ মানুষজন যখন ধীরে ধীরে বাড়ছে, বাড়ছে নানা কাজে বাইরে লোকজনের আসা-যাওয়াও, তখন টুটু বসু-ই তাঁর এই সাজানো-গোছানো অফিসটিতে প্রকাশিতব্য পত্রিকাটির দপ্তর সরিয়ে নিয়ে এলেন, যেটি পরবর্তীকালে দীর্ঘদিন পত্রিকার বিজ্ঞাপন দপ্তর হিসাবে কাজ করেছে৷

রাধানাথ চৌধুরি রোডের কার্যালয়টি নেওয়া হয় ১৯৯১ সালে ২৮ ডিসেম্বর প্রথম পরিদর্শনের পরই৷ পাঁচতলা বাড়ির একতলা ও বেসমেণ্ট এবং তার সঙ্গে পুরনো গুদামের মতো কিছুটা ফাঁকা জায়গা৷ শহরের প্রান্তিক এলাকা হলেও ওই জায়গাটি নেওয়ার একমাত্র কারণ ছিল সম্পাদকীয় বিভাগ ও মুদ্রণ বিভাগকে একছাদের তলায় রাখার ব্যবস্হা করা৷ অন্য কয়েকটি দপ্তরকেও এই ঠিকানায় রাখা হয়৷ বিজ্ঞাপন বিভাগ ক্যামাক স্ট্রিটে টুটুবাবুদের অন্য একটি অফিস সংলগ্ন স্থানে৷ ২০ নাম্বার প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিটের বর্তমান ভবনে পত্রিকার স্থানান্তর ঘটে ১৯৯৬ সালের ১৫ এপ্রিল, বাংলা নববর্ষের শুভ দিনে৷ রাধানাথ চৌধুরি রোডের সঙ্গে কলকাতার প্রাণকেন্দ্রে এই দপ্তরের কোনও তুলনাই চলে না৷ কর্মীরা যেন নতুন প্রাণ পেলেন এই দপ্তরে এসে৷ অনেক খোলামেলা জায়গা, আসা-যাওয়ারও কত সুবিধা, পাশেই তো মেট্রো স্টেশন৷

৯ আগস্ট, ১৯৯২ পত্রিকার প্রথম প্রকাশ হলেও তার প্রস্তুতি স্বভাবতই শুরু হয় বেশ কয়েকমাস আগে৷ যেমন এই প্রস্তাবিত পত্রিকার সম্পাদকীয় পরিকল্পনা কেমন হবে, তা বোঝানোর জন্য এপ্রিল মাসের প্রথমেই একটি ‘ডামি’ প্রকাশিত হয়৷ পরবর্তী সময়ও দুই ‘ডামি’কে অনুসরণ করে এবং কিছুটা পরিমার্জিত করে আরও বেশ কয়েকটি এমন ‘ডামি’ বানানো হয়৷ আর একেবারে শেষ পর্যায়ে এসে ৩১ জুলাই থেকে ৮ আগস্ট পর্যন্ত, আট-ন’দিন ধরে চলে পূর্ণাঙ্গ ট্রায়াল রান৷ নিজেদের মুদ্রণ যন্ত্রেই৷

কাগজ বার করা সেই প্রায় আড়াই দশক আগে এখনকার মতো এত সহজ ছিল না৷ কম্পিউটারে দ্রূত পাতা বানানোর ব্যবস্থা তখন চালু হয়নি৷ ডিটিপি কম্পোজ হওয়ার পর তার প্রিণ্ট আউট নিয়ে কাঁচি দিয়ে কেটে, আঠা দিয়ে সেঁটে প্রতিটি পৃষ্ঠা নির্মাণপর্ব ছিল যথেষ্ট সময়সাপেক্ষ৷ তাই রীতিমতো যুদ্ধ করতে হত সময়ের সঙ্গে৷ পাতা তৈরি হওয়ার পরও মুদ্রণ পর্যন্ত বেশ কয়েকটি ধাপে সময় ব্যয় হত অনেকটা৷ তাই একসপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে ঘড়ির কাঁটা মেপে দেখে নিতে হয়েছে, সব ঠিকঠাক গতিতে চলছে কি না৷

সেই যুগে কলকাতার বাইরে বিভিন্ন জেলায় কাগজ পাঠানোর জন্য প্রথম ‘টার্গেট’ থাকত রাত তিনটে চল্লিশের লালগোলা এক্সপ্রেস ধরানো৷ ওটাই ছিল প্রথম ট্রেন৷ সেই ট্রেন ধরাতে তখন প্রায়শই হিমশিম খেতে হত৷ পাতা ছাড়তে ছাড়তেই ঘড়ির কাঁটা যে কখন রাত একটা পার হয়ে যেত, তা যেন বোঝাই যেত না৷ আর এখন সব কাগজেরই প্রথম সংস্করণের কাজ মোটামুটি শেষ রাত দশটার আগে৷

‘ডামি’ থেকে শুরু করে ‘সংবাদ প্রতিদিন’-এর সেই প্রথম যুগে প্রতিটি দিনের প্রতিটি পাতাই ছিল খুব পরিকল্পিত৷ শুধু প্রথম পৃষ্ঠা নয়, নজর থাকত ভিতরের প্রতিটি পাতাতেও৷ ভিতরের পাতাগুলোকে দেশ-বিদেশ-জেলা-মহানগর ইত্যাদি নানা ভাগে ভাগ করে প্রতিটির জন্য নির্দিষ্ট জায়গা করে দেওয়ার পরিকল্পনা প্রথম শুরু হয় এই পত্রিকাতেই৷ তার আগে এবং পরেও দীর্ঘদিন অন্যান্য পত্রিকায় দেখা গিয়েছে বাগনানের পাশে দিব্যি ব্রাজিলের খবর বসানো হচ্ছে৷ অথবা হাওড়ার পাশে হাওয়াই বা মালদহের পাশে মালদ্বীপ৷ অন্যান্য পত্রিকা এই রীতি অনুসরণ শুরু করে অনেক বছর বাদে৷ পৃষ্ঠা পরিকল্পনা থেকে সংবাদ বাছাই–সমস্ত বিষয়ে প্রথমদিন থেকেই ‘সংবাদ প্রতিদিন’ ছিল একটি ব্যতিক্রমী পত্রিকা৷ দ্রূত সকলের নজরে এসেছিল সেই কারণেই৷ তার সঙ্গে সম্পাদকীয় পৃষ্ঠার গুরুত্ব, যেখানে প্রথমদিন থেকেই লিখেছেন সমাজের নামী-দামি ব্যক্তিত্বরা৷

যেমন প্রথমদিনের (৯ আগস্ট, ১৯৯২) পত্রিকায় প্রথম পৃষ্ঠায় বড় চমক ছিল ‘অ্যাঙ্কর স্টোরি’ হিসেবে প্রকাশিত প্রণয় রায়ের প্রতিবেদন৷ টেলিভিশন সংবাদমাধ্যমে তিনি তখনই এক মস্ত বড় নাম৷ প্রথমদিনের লেখায় তিনি স্মৃতিচারণা করেছিলেন যে, কীভাবে তিনি ও তাঁর কয়েকজন ঘনিষ্ঠ বন্ধু মিলে বাড়ির ছাদে বসে নির্বাচনী বিশ্লেষণের প্রাথমিক কাজ শুরু করেছিলেন, প্রাথমিক পাঠ নিয়েছিলেন৷ চমৎকার লেখা৷ বিরাট মাপের এক সর্বভারতীয় সাংবাদিকের ধীরে ধীরে বড় হয়ে ওঠার সংক্ষিপ্ত এক কাহিনি৷ তারপরও বেশ কয়েকটি লেখা তিনি লিখেছেন, যা প্রকাশিত হয়েছে পরবর্তী রবিবারগুলোতে৷

৯ আগস্ট, ১৯৯২ ছিল রবিবার৷ প্রথম যুগে ‘সংবাদ প্রতিদিন’-এ এখনকার মতোই প্রতি রবিবার ৩২ পৃষ্ঠার পুস্তিকা দেওয়া হত৷ সম্পাদনার দায়িত্বে ছিলেন বিশিষ্ট সাহিত্যিক প্রফুল্ল রায়৷ রবিবারের ওই পুস্তিকাটি ছিল দীর্ঘদিন পত্রিকার একটি বড় আকর্ষণ৷

প্রথমদিনের রবিবাসরীয় পুস্তিকাটি অনেক আগেই ছাপা হয়ে গিয়েছিল৷ বাঁধাই হয়েও এসেছিল যথাসময়ই৷ তবু শুরুর সময়টা খুব নির্বিঘ্নে কাটেনি৷ দিনভর পরিশ্রম করে রাত জেগে সমস্ত পাতা ছেড়ে লালগোলা ধরানোর জন্য যখন ছাপা শুরু হল, প্রথম কপিটি মেশিন থেকে বেরতেই হাতে নিয়ে দেখা গেল–যাঃ, তিন আর ছয়ের পৃষ্ঠা ছাপা হচ্ছে উল্টো! হইহই ব্যাপার৷ শুরু হল চিৎকার-চেঁচামেচি–‘থামাও, থামাও, মেশিন থামাও৷’ মেশিন থামানো হল, নতুন করে বসানো হল তিন-ছয়ের পাতার প্লেট (তখন ছিল আট পৃষ্ঠার কাগজ৷ তিন-ছয় একজোড়)৷ আবার ছাপা শুরু হল৷ কিন্তু যাঃ, লালগোলা মিস৷ এত কাণ্ডের পরও৷ অনেকদিন এই নিয়ে আক্ষেপ যায়নি৷ আর যাতে এমন না হয় সেদিকেই থাকত সকলেরই সতর্ক দৃষ্টি৷

সেদিন রবিবার, ৯ আগস্ট বেলা ১১টায় দক্ষিণ কলকাতার বিড়লা সভাঘরে সাজানো-গোছানো মঞ্চে বহু বিশিষ্ট মানুষের উপস্থিতিতে যখন ‘সংবাদ প্রতিদিন’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান চলছে, তখন অবশ্য শেষ রাতের সেই লালগোলা মিস হওয়ার কথা আর কারওরই মনে ছিল না৷ মঞ্চে ছিল যেন সর্বদলীয় সমাবেশ৷ বামফ্রণ্ট সরকারের প্রবীণ মন্ত্রী বিনয় চৌধুরি একদিকে, অন্যদিকে তৎকালীন কেন্দ্রীয় তথ্য প্রতিমন্ত্রী অজিত পাঁজা৷ পত্রিকা উদ্বোধন করার জন্য মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুকেই অনুরোধ করা হয়েছিল৷ কিন্তু তিনি জানিয়েছিলেন, ওই সময় দেশের বাইরে থাকার জন্য তাঁর পক্ষে আসা সম্ভব হবে না৷ তিনিই কার্যনির্বাহী মুখ্যমন্ত্রী বিনয়বাবুকে ‘সংবাদ প্রতিদিন’-এর অনুষ্ঠানে আসার জন্য বলে দেন৷ জন্মলগ্নেও এতটাই গুরুত্ব পেয়েছিল এই পত্রিকা৷ বিদেশ থেকে ফিরে এসেই জ্যোতিবাবু ‘সংবাদ প্রতিদিন’-কে একটি বিরাট সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন, যা প্রকাশিত হয়েছিল পরপর দু’দিন, দুই পর্বে৷

চোখ বুজে ভাবলে ওইসব দিনের স্মৃতি যেন এখনও সামনে ভেসে ওঠে৷

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ