সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তিনি এখন দেশ জুড়ে যুবাদের হার্টথ্রব। তাঁর নিষ্পাপ চাহনি, ভুরুতে কটাক্ষের ঢেউ। মুখে স্মিত হাসি। নিষ্পাপ এই উপকরণই হিল্লোল তুলেছে দেশবাসীর মনে। এই মেয়ের চাহনিতে যে ইনোসেন্সি আছে, তার জন্যই যেন হাপিত্যেশ করেই বসেছিল মিলেনিয়াল প্রজন্ম। ফলত অবধারিত ক্রাশ এবং নেটদুনিয়া ভরে যাওয়া তাঁর ছবি ও ভিডিওতে।
কিন্তু এহেন প্রিয়াই এখন পড়েছেন প্রবল বিপাকে। বুধবারই তাঁর অভিনীত মালয়ালম সিনেমা ‘ওরু আদর লাভ’-এর পরিচালকের বিরুদ্ধে থানায় এফআইআর দায়ের করেছেন হায়দরাবাদের যুবক মহম্মদ আবদুল মুকিদ খান। তাঁর অভিযোগ, ‘আমি ইউটিউবে ভিডিওটি দেখেছি। দেখে ভালও লেগেছে। ডাউনলোড করে রেখেছি। বারবার দেখার পর গানের কথাগুলো বোঝার চেষ্টা করি। কিন্তু যেহেতু মালয়ালি তাই বুঝতে পারিনি। তখন গুগল করি। শেষমেশ অনুবাদ করে তবে গানের কথা স্পষ্ট হয়। তখনই বুঝতে পারি এই গানে নবীর অবমাননা করা হয়েছে। গানের কথা মুসলিমদের ভাবাবেগে আঘাত করছে।’
[চোখের চাহনির পর এবার ভাইরাল প্রিয়ার ‘ব্রেক-আপ সং’ ভিডিও]
এফআইআর যে হয়েছে, সে কথা স্বীকার করে নিয়েছেন ফলকনুমার এসিপি সইদ ফৈয়াজ। তিনি বলছেন, ‘মালয়ালম সিনেমাটির পরিচালক ওমর লুলুর বিরুদ্ধে এক ব্যক্তি অভিযোগ দায়ের করেছেন। এক্ষেত্রে নিয়মমাফিক ২৯৫-এ ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। পুলিশ তদন্তে নেমেছে।’ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিশ কর্তা জানিয়েছেন, পুলিশ এই মামলার তদন্তে নামার আগে মৌলবিদের সঙ্গে পরামর্শ করবে। পরিচালককে তখনই ডাকা হতে পারে যখন পুলিশ মনে করবে।
অভিযোগ, ভাইরাল হওয়া গানটির ভাষা নাকি হজরত মহম্মদকে অপমান করেছে। প্রশ্ন উঠছে, তবে কি এই সিনেমাটির ভবিষ্যতও ‘পদ্মাবত’-এর মতোই হবে? ফতোয়ার মুখে পড়তে হবে অষ্টাদশী প্রিয়াকে? হায়দরাবাদের এক বাসিন্দা আদনান কামার এদিন ফেসবুক লাইভ-এ এসে এই গানের লিরিক্স অনুবাদ করে দাবি করেছেন, পরিচালক ও সিনেমাটির অধিকাংশ কলাকুশলী মুসলিম হওয়া সত্ত্বেও কেউ এইভাবে সামগ্রিক মুসলিম সমাজের মাথা হেঁট করে দেবে, ভাবা যায় না। তাঁর এই ভিডিওটিও ভাইরাল হয়েছে।
[প্রিয়ার গানে মুসলিম ভাবাবেগে আঘাত, কী বলছে পুলিশ?]
কিন্তু এত সমালোচনার মুখে কী বলছেন রাতারাতি হার্টথ্রব বনে যাওয়া প্রিয়া? তিনি বলছেন, ‘আমি ঠিক জানি না কী হয়েছে, কিন্তু আমার মনে হয় বিতর্ক আর না বাড়িয়ে চুপ থাকাই শ্রেয়।’ নিজের জনপ্রিয়তা নিয়েও মুখ এএনআইয়ের সামনে মুখ খুলেছেন প্রিয়া। বলেছেন, ‘যা হল সবই খুব তাড়াতাড়ি! আমি জানি না কীভাবে এর প্রতিক্রিয়া দেব। তবে একটাই কথা বলতে পারি, আমার চোখ মারার প্ল্যানটা কিন্তু আগে থেকে করা ছিল না।’
আসলে এক পলকে একটু দেখা, চোখে চোখে কথা বলা ও শেষ হতে হতেও শেষ না হওয়া হাসি৷ ছোট গল্পের মতো মাত্র ৩০ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ক্লিপই যে তামাম দেশবাসীর মনে দোলা দেবে, কে ভেবেছিল? আরও তাৎপর্যপূর্ণ হল, ঠিক ভ্যালেন্টাইন্স ডে-র মুখে মুক্তি পেয়েছে সিনেমাটির টিজার৷ যেখানে এবার প্রিয়াকেই ফোকাস করা হয়েছে রাতারাতি তাঁর জনপ্রিয়তা দেখে। তৈরি হয়ে গিয়েছে প্রিয়ার নামে অজস্র জাল ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রাম প্রোফাইল। তবে ভিডিওটি দেখে এবং শেয়ার করে সোশ্যাল মিডিয়া একবাক্যে বলছে, এবার দেশ জুড়ে তামাম ছেলেদের ভ্যালেন্টাইন একজনই৷ কেরলের প্রিয়া প্রকাশ ভারিয়ের।
দেখুন সিনেমাটির টিজার: