Advertisement
Advertisement
Swastika Mukherjee

আমার ডাকনাম ধরে আর কেউ ডাকে না: স্বস্তিকা

আর কী বললেন স্বস্তিকা?

Exclusive interview of Swastika Mukherjee| Sangbad Pratidin
Published by: Akash Misra
  • Posted:January 5, 2024 3:16 pm
  • Updated:January 5, 2024 3:16 pm

বছরের শুরুতে সাক্ষাৎকারে এমন অনেক কথা বললেন স্বস্তিকা মুখোপাধ‌্যায় যা আগে কখনও প্রকাশ্যে আসেনি। তাঁর অভিনীত ‘বিজয়ার পরে’ আসছে শীঘ্র। শুনলেন শম্পালী মৌলিক

 

Advertisement

নতুন বছর শুরু হচ্ছে নতুন ছবি রিলিজ দিয়ে। কতটা এক্সাইটেড?
বড় পর্দায় নিজের ছবি দেখার অনুভূতি আর উচ্ছ্বাস সবসময় আলাদা। এখন ওটিটি-র যুগে আমাদের সবারই অভ‌্যাস হয়ে গিয়েছে কখনও মোবাইলে, কখনও টিভিতে, কখনও ল‌্যাপটপে ছবি দেখার। সিনেমা মানেই একটা লার্জার দ‌্যান লাইফ কনসেপ্ট, সেটার যে ভালোলাগা বড় পর্দায় দেখলে হয়, যা কখনও ছোট মিডিয়ামে দেখলে পাওয়া যায় না। অ‌্যাম শিওর, ‘বিজয়ার পরে’ প্রেক্ষাগৃহে (১২ জানুয়ারি মুক্তি) আসার পরে কোনও না কোনও সময় ওটিটি-তে অাসবে। এই ছবিটার সঙ্গে আমার অনেকটা ভাললাগা মিশে আছে।

Advertisement

কীরকম?
স্বস্তিকা: দীপঙ্কর জে‌ঠুকে দেখলে আমার এত বাবার কথা মনে পড়ে, কী বলব। বয়স হলে আমাদের বাবা-মায়েদের যেন একরকম দেখতে হয়ে যায়। কিফ-এ টিটো জে‌ঠুর সঙ্গে দেখা হল। ওইভাবে আমার ডাক নাম ধরে আজকাল আর কেউ ডাকে না। দেখা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই– ‘কীরে ভেবলি, কী করছিস?’ এই মানুষগুলো এখন প্রায় নেই বললেই চলে। ওই প্রজন্মের সব কিছুর মধ্যে এত মায়া আর সততা… এঁদের পরে কারও মধ্যে এসব আর কই। আমি শেষ দীপঙ্কর জে‌ঠুর সঙ্গে কাজ করেছি ‘এবার শবর’-এ। তারপর এবার কাজ করলাম ‘বিজয়ার পরে’-তে। যদিও দোলনদি মাঝেমাঝে আমাকে ফোন করে আমার কাজকর্ম দেখে, তারপর ফোনটা দীপঙ্কর জে‌ঠুকে দেয়। আমি কথা বলি ফোনে। কিন্তু শুটিংয়ে অনেকটা সময় একসঙ্গে কাটানো যায়। আর মম পিসির সঙ্গে লেটলি আমার যে ক’টা কাজ হয়েছে সবক’টা কাজ খুব আলাদা। ‘জাতিস্মর’-এ আমার মায়ের চরিত্র করেছেন। আবার ‘শাহজাহান রিজেন্সি’-তে বিদ্বেষের জায়গা ছিল। ‘শিবপুর’-এ আবার অন‌্যরকম। আর ‘বিজয়ার পরে’-তেও আলাদা। এঁদের সঙ্গে কাজ করার ভালো লাগা অন‌্যরকম। সেইজন‌্যই ছবিটা আলাদা মানে রাখে।

‘কিফ’-এ ‘বিজয়ার পরে’-র স্ক্রিনিং হয়েছিল, কমপিটিটিভ সেকশনেও ছিল। কেমন সাড়া পেয়েছিলেন?
স্বস্তিকা:  দারুণ সাড়া ছিল। আশাও করিনি হল-এ অত মানুষ থাকবে। মনে হয়েছিল, হয়তো ফেস্টিভ‌্যালে লোকে বাংলা ছবি কম দেখবে, অন‌্য ভাষার ছবি বেশি দেখবে। রবীন্দ্রসদন হল-টা তো বিশাল। প্রায় এগারোশো সিট। হল থেকে বেরিয়ে দারুণ ফিডব‌্যাক পেয়েছিলাম।

[আরও পড়ুন: প্রথম স্ত্রীর সামনেই দ্বিতীয় স্ত্রী কিরণকে চুমু, মেয়ের বিয়েতে ভাইরাল আমিরের কীর্তি! হতবাক নেটপাড়া]

‘বিজয়ার পরে’-তে মীর রয়েছেন আপনার স্বামীর ভূমিকায়। ‘মাইকেল’-এর পরে আবার আপনাদের অনস্ক্রিন একসঙ্গে দেখা যাবে। তার জন‌্য তো দর্শক অপেক্ষা করে আছে।
স্বস্তিকা: হ্যাঁ, আমরা অনেকদিন পরে একসঙ্গে কাজ করলাম। যদিও এই ছবিটার মূল আকর্ষণ দীপঙ্কর দে আর মমতা শংকর। আর আমরা সবাই পার্শ্বচরিত্রে। এটাই বলব অনেকদিন পরে পরে অনেকের সঙ্গে আমার কাজ হয়। সেজন‌্য ‘মাইকেল’-এর পরে একসঙ্গে করলাম।

স্বস্তিকা এবং মীরকে পর্দায় একসঙ্গে দেখার জন‌্য দর্শকের আগ্রহ রয়েছে। তার আরও একটা কারণ, এই ছবিটার শুটিংয়ের সময় আপনাদের রসায়ন ছিল ‘টক অফ দ‌্য টাউন’। সেই সময় আর এখন অনেকটা পাল্টেছে। কোথাও কি মীরের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয়েছে?
স্বস্তিকা: না, ওটা নিয়ে চর্চা করার মতো কিছু ঘটেনি। যেগুলোই ‘টক অফ দ‌্য টাউন’ হয়, পরবর্তীকালে আবার অন‌্য কিছু ‘টক অফ দ‌্য টাউন’ হয়। আমার আশপাশে যে মানুষরা আছে, সবসময়ই তাদের নিয়ে চর্চা হয়েছে। কারণ, লোকে সবসময় আমাকে নিয়ে চর্চা করার জন‌্য ব‌্যস্ত থাকে। খুব সত্যি কথা বললে, মানুষের মাথাব‌্যথা কম, কাগজপত্রের মাথাব‌্যথা বেশি হয় (হাসি)। এখন হয়তো অন‌্য কাউকে নিয়ে তাদের মাথাব‌্যথা। আবার কোনও সময় দেখব, আমার দিকে ফোকাস ঘুরে গিয়েছে। আমার কাজ নিয়ে মাথাব‌্যথা থাকলে আমি খুশি। সবার লক্ষ‌্য আরও ভালো কাজ।

অভিজিৎ শ্রীদাস আগে বিজ্ঞাপন করেছেন এটা ওঁর প্রথম ফিচার ফিল্ম। দেখেছি, চিরকালই নতুন পরিচালকদের ওপরে ভরসা রেখেছেন। এই ভরসাটা কী করে পান?
স্বস্তিকা: সবারই একটা ফার্স্ট টাইম থাকে। আর আমি জীবনে এত প্রত‌্যাখান ফেস করেছি, যে আমি জানি প্রত‌্যাখানের যন্ত্রণা কতটা। এখনও ফেস করছি। এখনও বম্বেতে প্রচুর অডিশন দিই তারপর সেই কাজগুলো আমি আর পাই না। বা আমার করা হয় না। সেই কারণে রিজেকশন হয়। প্রচুর নতুন পরিচালক আমাকে কাজের জন‌্য যোগাযোগ করে। সব কাজেই যে আমি খুব ভরসা পাই তেমন নয়। কিন্তু অভিজিৎ শ্রীদাসের স্ক্রিপ্টটা আমার খুব ভাল লেগেছিল। উনি যখন যোগাযোগ করেন, মমতা শঙ্কর, দীপঙ্কর দে– এই নামগুলো উঠে এসেছিল। উনি বহু বছর ধরে এই ছবিটা করার চেষ্টা করছেন। এই দু’জন প্রধান চরিত্রর জন‌্য বিভিন্ন নাম উঠেছিল। কিন্তু তার হয়তো কেউ গত হয়েছেন বা কাজটা করা হয়নি। অভিজিতের ভিশনটা আমার ভাল লেগেছিল। যারা প্রোডাকশনটা করছে, তারাও আমার চেনা-পরিচিত। ডিওপি সুপ্রিয় খুব চেনা। মনে হয়েছিল টেকনিক‌্যাল টিমটাও ঠিকঠাক। অনির্বাণ মাইতি এই ছবিটা এডিট করেছেন। ওঁর সঙ্গে আগে আমার কাজ হয়েছে। ওঁকে আমি চিনি। কাজেই শুধু পরিচালক বা চিত্রনাট‌্য নয়, পুরো টেকনিক‌্যাল টিমটাও ঠিকঠাক হওয়াও দরকার। তবেই একটা ছবিতে হ্যাঁ, বলা যায়। ডিরেক্টর বা ক‌্যামেরাম‌্যান এবং বাকি ক্রিউ সব নতুন হলে কিন্তু ‘হ্যাঁ’ বলা যায় না।

এই ছবিটা দুর্গাপুজোর প্রেক্ষাপটে। আপনি মেয়ের চরিত্রে। পারিবারিক রিইউনিয়ন কি বলা যায়?
স্বস্তিকা: বলা যায়। ছবিটা খুব ইনটেন্স। এখানে আমার নাম ‘মৃন্ময়ী’। পুজোর দিনেই হয়তো অনেকে বাড়িতে আসতে পারে না। কারণ, বাইরে ষষ্ঠী, সপ্তমী, অষ্টমী ছুটি থাকে না। দশেরার দিন সকলের ছুটি থাকে, অনেকের বাড়ি ফেরা দশমীর দিকে হয়, যাতে বিজয়া করতে পারে। এখানেও বিজয়ার সময় বাড়ি ফেরা রয়েছে।
এরপরে আপনার সৃজিত মুখোপাধ‌্যায়ের সঙ্গে কাজটা শুরু হবে। তাই তো?

Swastika-4

জানুয়ারিতে ‘টেক্কা’ শুরু। প্রথমবার দেবের সঙ্গে, দেবের প্রোডাকশনে কাজ করব। অরিন্দম ভট্টাচার্যর ‘দুর্গাপুর জংশন’ শেষ করলেন?
স্বস্তিকা: হ্যাঁ। সৃজিতের সঙ্গে আগে আরেকটা কাজ নিয়ে কথা হয়েছিল, ‘টেক্কা’-র আগে, ওটা ২০২৪-এর মাঝামাঝি করার পরিকল্পনা করবে।

হিন্দিতে একটা অ‌্যান্থোলজি করা আছে না?
স্বস্তিকা: ওটা ২০২২-এর শেষে শুট হয়েছিল, মুম্বইয়ে রিলিজ হতে একটু সময় লাগে, পোস্ট প্রোডাকশন শেষ করে। নতুন পরিচালক। এই বছর দিবাকর বন্দ্যোপাধ‌্যায়ের একটা ছবি করেছি। আরেকটা করেছি, ঋভু দাশগুপ্তর পরিচালনায়, যেটাতে মিস্টার বচ্চন আছেন। সেটার নাম ‘সেকশন এইট্টি ফোর’। আরেকটা ছবি করেছি, একজন নতুন পরিচালক। সবই আশা করা যায় ২০২৪-এর কোনও এক সময় আসবে।

২০২৩-এ কি একটু বেশি কলকাতায় থাকলেন?
স্বস্তিকা: না, বম্বে-কলকাতা সবসময়ই করতে থাকি। এবারে সেপ্টেম্বর অনওয়ার্ডস কলকাতায় থাকা হয়েছে। কারণ আমার একটা বড় সার্জারি হল। চল্লিশোর্ধ হয়ে গেলে, সবাই কমবেশি একটা প্রি-মেনোপজাল অবস্থায় পৌঁছয়। আমার দু’-তিন বছর ধরেই গায়নোকলজিকাল ক্রাইসিস চলছিল। সে কারণে ইউটেরাস-ওভারি বাদ দিতে হয়েছে। দু’-মাস বাড়িতে থেকে রেস্ট নিতে হল। মুঠো মুঠো ওষুধ খাচ্ছিলাম একসময়, তা সত্ত্বেও কাজ করছিলাম। ফাইনালি সার্জারি করালাম।

Swastika Mukherjee clears the air about Shibpur promotion
অনেকেই এই কথাগুলো প্রকাশ্যে আনতে চান না।
স্বস্তিকা:  আসলে সমাজ ব‌্যবস্থার জন‌্যই এত স্টিগমা জড়িয়ে আছে। যে মেনোপজ নিয়ে কেউ কথা বলতে চান না। এত বড় একটা শারীরিক বদল ঘটে, মনে হয় মহিলাদের শরীরে এই দুটো অরগান সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, প্রজননের সঙ্গে এগুলো জড়িয়ে। হরমোনের দিক দিক থেকেও ভাইটাল। এরকম অর্গান রিমুভ করলে স্কিন-হেয়ার এসব নিয়ে বাড়তি যত্নের প্রয়োজন। বাদ দেওয়ার জন‌্য আমিও খুব একটা এজ অ‌্যাপ্রোপ্রিয়েট নই। কিন্তু নানা জটিলতার জন‌্য করতে হল। খালি মেয়েকে (অন্বেষা) বলছি, দ‌্যাখ পেটটা-গালটা কীরকম ফোলা লাগছে। খুব বেশি ডায়েটও করতে পারিনি। কারণ, শরীর রিকভারির প্রয়োজন ছিল। আমরা ক‌্যামেরার সামনে থাকি যারা, তারা যেন নিজের প্রতি বড্ড ক্রুয়েল। আমিও শেপে ফেরার জন‌্য ধড়ফড় করছিলাম। ডাক্তার এবং মেয়ের সঙ্গে কথা বলে, একটু ধীরেই এগোচ্ছি। এবার নতুন বছরে ফর্মে ফিরব। একটু বেশি এক্সারসাইজ করব, প্রোটিন খাব।

Swastika Mukherjee got discharged from hospital, on rest

আর ওটিটি-তে কি ‘নিখোঁজ’ সিজন টু আসবে?
স্বস্তিকা: হ্যাঁ, আমি জানি ওটার জন‌্য প্রচুর মানুষ অপেক্ষা করছে। একটা মজার ঘটনা বলি, যেদিন আমার সার্জারি হয়েছে, ওটির ভিতরে অপারেশন শুরু হওয়ার আগে এই কথাটাই আমার মনে আছে। অ‌্যানাস্থেটিস্ট নিজের কাজই করছিলেন তার মধ্যেই জিজ্ঞেস করলেন– ‘ম‌্যাডাম, আপনার যে ওই মেয়ে হারিয়ে গেল ওটার পরের সিজনটা কবে আসবে?’ অপারেশন টেবিলে এই প্রশ্নটা শুনে আমি অবাক হয়েছিলাম। ভাবলাম জ্ঞান ফিরলে ‘হইচই’-কে বলব। (হাসি)

[আরও পড়ুন: ৮ কিমি দৌড়ে মণ্ডপে পৌঁছলেন আমির খানের ‘জামাই’, গেঞ্জি পরেই বিয়ে! হল দেদার ট্রোল]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ