Advertisement
Advertisement

অনুরাগীদের অনুরোধেই কবিগুরুর গান গাওয়ার ভাবনা, প্রথম রবীন্দ্রসংগীত মুক্তির আগে অকপট মিমি

'গানের ওপারে'র পুনঃসম্প্রচারও প্রেরণা দিয়েছে 'পুপে'কে।

Mimi Chakraborty opens up about his new music album of Rabindrasangeet
Published by: Bishakha Pal
  • Posted:June 11, 2020 7:02 pm
  • Updated:June 11, 2020 7:08 pm

নিজস্ব ইউটিবউব চ‌্যানেলে তাঁর নিজের গাওয়া প্রথম রবীন্দ্রসংগীত লঞ্চের আগে মোবাইলে আড্ডা দিলেন সাংসদ-অভিনেত্রী মিমি চক্রবর্তী (Mimi Chakraborty)। ফোনের এপারে শম্পালী মৌলিক

শুটিং মোডে ফিরে গেলেন। লকডাউন শিথিল হতেই প্রথমে নিজের মিউজিক ভিডিওর শুট করে ফেললেন। এই করোনা পরিস্থিতিতে ভয় করছে না?
মিমি: ভয় খুব একটা করে না আমার কোনও জিনিসেই। কিন্তু আমার একটা প‌্যারানয়া কাজ করছিল। গানের মধ্যে আমার যেটা হচ্ছিল, হাওয়াতে চোখে চুল চলে আসছিল, হাত দিয়ে সরাতে গিয়েও হাতটা আটকে যাচ্ছিল। যে হাত দেব কিনা! ওই স্বতঃস্ফুর্ততা নষ্ট হয়ে গিয়েছে। কারণ, কোভিড-আতঙ্ক। আমি তো বাড়ি ফিরব, ভাইরাসের ক‌্যারিয়ার হতে চাই না। এটাই চিন্তার যে, আজকে আমি হয়তো দশজনের সঙ্গে শুটিং করলাম, কালকে যখন ফিল্ম করব তখন কী হবে? সারাক্ষণই কি দুশ্চিন্তা করব? ভাবব যে বিছানাটা স‌্যানিটাইজড কিনা, চুলে হাত দেব কিনা, চোখে হাত দেব কিনা, সেটা তো অসম্ভব!

Advertisement

ফিল্ম ফ্লোরে গেলে কী দাঁড়াবে বুঝছেন?
মিমি: ঠিক বুঝতে পারছি না। যাঁরা যাঁরা ফ্লোরে যাবে সকলের করোনা পরীক্ষা করা উচিত মনে হয়। আর ওই থার্মাল টেস্ট, স‌্যানিটাইজেশন, যা যা স্বাস্থ‌্যবিধি আছে সেগুলো তো মানতেই হবে। যেমন আমি বাড়িতেও করেছি। আমি তো কখনওই চাইব না আমার থেকে অন‌্য কারও মধ্যে অসুখটা ছড়াক। কেউ-ই চাইবে না। এটা প্রত্যেকের নিজেদের দায়িত্ব। আমরা প্রত্যেকেই চাই আমাদের ইন্ডাস্ট্রি সারভাইভ করুক। ফিল্ম শুটিং দূরে দূরে কীভাবে হবে আমার জানা নেই। দেখা যাক।

Advertisement

mimi 2

নিজের ইউটিউব চ‌্যানেলের জন‌্য এই প্রথম নিজে রবীন্দ্রসংগীত গাইলেন। দেখে মনে হচ্ছে ‘পুপে’ ফিরে এসেছে। রবীন্দ্রসংগীত শিখেছেন কখনও?
মিমি: (হাসি) না, শিখিনি। শুনতাম। যখন আমি আমার ইউটিউব চ‌্যানেলটা লঞ্চ করেছিলাম আমার কাছে প্রচুর রিকোয়েস্ট এসেছিল। যে রবীন্দ্রসংগীত গাই। আমার প্ল‌্যানও ছিল যে রবীন্দ্রজয়ন্তীতে এমন কিছু করব। কিন্তু হয়নি। এবার সেই পরিস্থিতিও ছিল না। তারপর ‘গানের ওপারে’র রিপিট টেলিকাস্ট শুরু হয়। আমি বাড়িতে বসে ‘হটস্টার’-এ পুরোটা দেখেছি। দেখে মনে হল, আমার তো অরিজিন হল এন্টারটেনমেন্ট। বিনোদনের জগৎ থেকে বিলং করি। আর এই কঠিন সময়ে যদি আমার চ‌্যানেলের মাধ‌্যমে মানুষকে একটু আনন্দ দিতে পারি। আর রবীন্দ্রনাথ তো সব বাঙালির হৃদয়ে। তাই ‘আমার পরাণ যাহা চায়’ গানটা বেছে নিলাম। আমি যে কাজটা করি, তার মাধ‌্যমেও যদি মানুষের মুখে একটু হাসি ফোটানো যায়, তাই এই চেষ্টা।

লোকজনের মুখে হাসি তো আপনি করোনা-আমপান কবলিত সময়েও ফুটিয়েছেন, মাঠে নেমে সাংসদ হিসেবে।
মিমি: আমার মনে হয় সেটা আমার কর্তব‌্য। চারটে লোক বলল, মিমি কাজ করেছে। পাঁচটা লোক বলল কাজ করেনি। আমি সেই ভেবে কাজ করি না। আই ওয়ার্ক ফ্রম মাই হার্ট। আজকে এই জায়গায় দাঁড়িয়ে যদি চারটে মানুষের পাশেও দাঁড়াতে পারি, আমি একশো বার দাঁড়াব। সাংসদ বলে হয়তো চারটের জায়গায় চল্লিশটা মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারি। অভিনেত্রী হিসেবেও আমি অনেক এনজিও’র সঙ্গে যুক্ত। এখন হয়তো গ্র‌্যাঞ্জার, এক্সপোজার বেড়েছে। মনে হয় লোকেদের প্রত‌্যাশাও বেড়েছে আমার থেকে। প্রথম সবাই ভাবে অ‌্যাক্টররা কাজ করে না। যখন কেউ কাজ করতে শুরু করে তারপর ছবিটা পরিষ্কার হয়। আমি একটা বছর অভিনয়ের কাজ করিনি। পুরো সময়টা কনস্টিটুয়েন্সির জন‌্য দিয়েছিলাম। এই বয়সে একজন নায়িকার জীবন থেকে একটা বছর বাদ যাওয়া মানে অনেকটা, অন্তত ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির নিরিখে। কিন্তু মনে করেছিলাম মানুষ যে, ভরসা করে আমাকে ভোটটা দিয়েছিল, যে রেকর্ড মার্জিন দিয়েছিল, যেখানে অনেকেই বলেছিল আমি হারব, সেইখানে ওই মানুষগুলোর খারাপ সময়ে পাশে দাঁড়ানো আমার কর্তব্যের মধ্যে পড়ে।

mimi 1

[ আরও পড়ুন: ‘কাশ্মীরি পণ্ডিতের হত্যায় চুপ কেন?’ ধর্মনিরপেক্ষতার প্রশ্ন তুলে বুদ্ধিজীবীদের একহাত নিলেন কঙ্গনা ]

এখন আবার অভিনেত্রী সত্তায় ফিরছেন। একটু পিছিয়ে যাই। যখন লকডাউন শুরু হব হব, আপনি লন্ডন থেকে ফিরলেন। হোম আইসোলেশনে রইলেন। তার কিছুদিন পর কাজে ঝাঁপালেন। প্রথমে সোশ‌্যাল মিডিয়ায় করোনা সচেতনার বার্তা দিলেন। এইচআইভি পজিটিভ বাচ্চাদের পাশে দাঁড়ালেন, মৃদুলবাবুর দায়িত্ব নিলেন, কোভিড জয়ী মনামীকে সামনে আনলেন, আমপান বিধ্বস্ত মানুষের পাশে ছুটে গেলেন- এতকিছুর পরেও যখন সমালোচনা পিছু ছাড়ে না তখন কী মনে হয়?
মিমি: আমি যদি এখন বলি, আই ডোন্ট কেয়ার। তাহলে মিথ্যে বলা হবে। কেয়ার করার থেকেও খারাপ লাগে একটা জায়গায়। যে, আমার তো কোনও স্বার্থ নেই আমি নিঃস্বার্থভাবে পুরো কাজটা করি। যারা সমালোচনা করেন, আই ফিল ব‌্যাড ফর দেম। তারা হয়তো জীবনে এগিয়ে যেতে পারেনি বলে, যারা এগিয়েছে, বা এগনোর চেষ্টা করছে তাদের টেনে নামাতে চায়। যখন একজন মহিলা, সে যেই হোক না কেন, সব প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে কাজ করতে চায়, তখন এই মিসোজিনিস্ট এবং পেট্রিয়ার্ক সমাজ এমন অনেক মন্তব‌্য করে যেটায় মনোবল ভেঙে যায়। কিন্তু আমার কাজ এগিয়ে যাওয়া, আমি তাই করব। মাঝে মাঝে আপসেট হলে, মাকে বলি, আমি আর পারছি না। তবে আই ট্রাই টু বি পজিটিভ। আমার কাজ করে যাই।

এই লকডাউনে কাজের নিরিখে একদল মানুষ আবার আপনাকে আপনার বন্ধু নুসরতের চেয়ে এগিয়েও রেখেছেন।
মিমি: ও তাই নাকি?

mimi 3

আপনি কী বলবেন?
মিমি: আমি জানি না এই ব‌্যাপারটা। সবাই সবার মতো করে কাজ করছে। আমি শুধু আমার কাজ নিয়ে কথা বলতে পারব।

প্রায় আড়াই মাস ধরে সিনেমার কাজ বন্ধ। মাঝখানে কি ডিপ্রেসড হয়ে পড়েছিলেন?
মিমি: মাঝখানে নয়, কিন্তু এখন একটু ডিপ্রেসড। আমাকে যতই হিরোইনের মতো উজ্জ্বল দেখাক, আসলে অতটাও উজ্জ্বল নই। কারণ, অনেক দায়িত্ব আছে আমারও। জলপাইগুড়ির পরিবার, এখানে বাবা-মা, বাড়ি-অফিসের দায়িত্ব…। এতদিন ধরে বাড়ি বসে থাকলে আমিও পুরো সিস্টেমটা চালাতে পারব না। তাছাড়া এনজিওগুলোকে দেখতে হয়। আমার বাড়ির পাশের কুকুরগুলোকেও শেষ দু’মাস ধরে খাওয়াচ্ছি আমি। আজকে যদি বন্ধ করে দিই, তারা তো আমার পথ চেয়ে। তখন আমার খুব খারাপ লাগবে। দায়িত্ব নিলে চিন্তা থেকেই যায়।

এবার কি চান তাহলে দ্রুত কাজ শুরু হয়ে যাক?
মিমি: আমি এটাই চাই যে, স্বাস্থ‌্য এবং নিরাপত্তা দুটো ঠিক রেখে যদি অভিনয়ে মনযোগ দেওয়া যায় তাহলেই কাজ শুরু হয়ে যাক। (হাসি)

[ আরও পড়ুন: আমফান গেলেও দুঃসময় কাটেনি, নিঃশব্দেই বন্ধুদের নিয়ে বাসন্তীতে ত্রাণ বিলি অভিনেতা অনির্বাণের ]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ