‘মিসম্যাচ ২’-এ অদিতির চরিত্রে রয়েছেন ব়্যাচেল হোয়াইট। ডাকাবুকো মহিলা। সোজাসাপটা। অফিসের বস হিসেবে ঠিক যেরকমটা ডমিনেটিং, ঠিক ততটাই বাড়িতে। কড়া গোছের স্ত্রীর জন্য যারপরনাই অতিষ্ঠ স্বামী অনির্বাণ। ঘরে-বাইরে, অফিসে সবেতেই ‘রাফ অ্যান্ড টাফ’ অদিতি। তা রিয়েল লাইফেও তিনি কি এরকমই? হইচই প্ল্যাটফর্মে ‘মিসম্যাচ ২’ স্ট্রিমিংয়ের প্রাক্কালে সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল-এর সঙ্গে অকপট আড্ডায় ব়্যাচেল হোয়াইট। শুনলেন সন্দীপ্তা ভঞ্জ।
‘মিসম্যাচ ২’তে তোমাকে ডমিনেটিং মহিলার চরিত্রে দেখা গিয়েছে… তা রিয়েল লাইফেও কি ব়্যাচেল এরকমই?
ব়্যাচেল – না, না… একদমই না! বরং আমি ভীষণই শান্ত প্রকৃতির মানুষ। এত বেশি চেঁচামেচি, ঝগড়া-অশান্তি ভাল লাগে না আমার। কাজ নিয়ে আমি বরাবরই সিরিয়াস। তবে, বাড়িতে থাকলে কাজের বিষয়টাকে সরিয়ে রাখি। আবার কাজের জগতে ঢুকলে তখন সেটাতেই মন দিই। দুটোকেই ব্যালেন্স করার চেষ্টা করি আসলে।
রিয়া সেন তোমাদের ‘মিসম্যাচ’ টিমে নতুন…
ব়্যাচেল – এই প্রথম কাজ করলাম রিয়ার সঙ্গে। ওর সঙ্গে আমার খুব একটা দৃশ্য নেই। কিন্তু, যেটুকু সময়েই একসঙ্গে সেটে ছিলাম, মজা করেছি। ভাল অভিজ্ঞতা। রাজদীপ আর মৈনাকের সঙ্গেই ওর বেশি দৃশ্য রয়েছে।
আচ্ছা.. এত ভাল বাংলা বলছ, আগের সিজনে তো তোমার গলাটা ডাবিং করানো হয়েছিল অন্য কাউকে দিয়ে..
ব়্যাচেল– হ্যাঁ, ‘মিসম্যাচ’-এর প্রথম সিজনে বাংলা নিয়ে যুদ্ধ করার মতো অবস্থা ছিল আমার। কয়েক বছর আগে অবধি বাংলা বলতে পারতাম না জানো? বম্বে থেকে যখন এলাম তখন বাড়িতে টিচার রেখে বাংলা বলা শিখলাম। বাংলা ম্যাগাজিন পড়তাম। নিজে বলার চেষ্টা করতাম। রোজ চেষ্টা করি বাংলাটা ইমপ্রুভ করার। করছিও৷ এই তো তুমি বললে ভাল বাংলা বলছি। আর হ্যাঁ, এই সিজনে আমার চরিত্রের ডাবিংটা কিন্তু আমি নিজেই করেছি।
ভাষাটা ঠিক করে না-জানলে বাংলা পড়াও তো বেশ কঠিন, স্কুলে থাকতে বাংলা পড়েছ নাকি?
ব়্যাচেল– হ্যাঁ, কলকাতায় পড়াশোনা করেছি। সেই সূত্রে স্কুলে সাবজেক্ট হিসেবে বাংলা আমার থার্ড ল্যাঙ্গুয়েজ ছিল। বাংলা অক্ষরজ্ঞান সেখান থেকেই। তাই পড়তে কখনোই অসুবিধে হয়নি। তবে, বলতে সমস্যা হত। আসলে কলকাতায় তো খুব একটা কাজ করিনি। ১০ বছর আগে মুম্বইতে শিফট করি। জন্মসূত্রে কলকাতার হলেও, আমার পরিবারে এমন কেউ নেই যে বাংলাটা ঠিকঠাক জানে। সত্যি বলছি, এখানকার ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে করতেই বাংলা শিখেছি।
মডেলিং না অভিনয়?
ব়্যাচেল– ব়্যাম্প করিনি। বিজ্ঞাপন করেছি। দু’-একটা অনুষ্ঠানে শো স্টপার হয়েছিলাম। ব্যাস! তাই এখনও কোনও ফ্যাশন শোয়ের বিচারক হিসেবে নিমন্ত্রণ পেলে খুব টেনশন হয় আমার।
দুটোর মধ্যে পার্থক্যটা হোমওয়ার্কের। অভিনয়ের জন্য হোমওয়ার্ক পোক্ত হওয়া খুব জরুরি। অভিনয় করার মধ্যে চ্যালেঞ্জ রয়েছে। তাই এটাই আমি বেশি এনজয় করি।
‘মিসম্যাচ’-এর সোয়্যাপ কনসেপ্টে বিশ্বাস কর?
ব়্যাচেল– ব্যক্তিগত জীবনে একদমই করি না। আমি মনে করি, দাম্পত্য জীবনে অশান্তি কমানোর জন্য সোয়্যাপ কনসেপ্টের আশ্রয় নিলে, তাতে সমস্যার সমাধান তো হবেই না। বরং, হিতে বিপরীত হয়। কেউই জীবনে পারফেক্ট হয় না। তাই প্রত্যেকটা সম্পর্কের ক্ষেত্রে অল্প-বিস্তর সবাইকেই মানিয়ে নিতে হয়।
তোমার জীবনে ‘মিসম্যাচ’ হয়েছে কখনও?
ব়্যাচেল– হ্যাঁ, আমার জীবনেও একাধিক ব্যর্থ সম্পর্কের উদাহরণ রয়েছে। আজও যখন দু-একটা সম্পর্কের কথা ভাবি। দেখি সেগুলোও ‘মিসম্যাচ’-ই ছিল আমার জীবনে। কখনও মতাদর্শের পার্থক্য ছিল। তো কখনও পছন্দ-অপছন্দগুলো আলাদা ছিল। শেষে ব্রেকআপ ছাড়া আর গতি ছিল না।
এখন সিঙ্গল?
ব়্যাচেল– হ্যাঁ, পুরোপুরি সিঙ্গল।
বলিউডে #মি-টু যখন এসেছিল, সাজিদ খানের ব্যাপারে তুমি মুখ খুলেছিলে…
ব়্যাচেল– সাজিদ আর আমার ব্রেকআপ, #মি-টু নিয়ে ওর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া, ওগুলো এখন আমার কাছে অতীত। তবে হ্যাঁ, ইন্ডাস্ট্রিতে এত বছর যৌন হেনস্থা বিষয়টাকে কেউ ধর্তব্যের মধ্যেই ফেলত না। এবার সবাই মাথা ঘামাচ্ছে। আর এটাতেই আমি খুব খুশি। প্রত্যেক অফিসেই এইচআর ডিপার্টমেন্টের উচিত,মহিলাদের প্রতি হওয়া যৌন হেনস্থার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া।
[আরও পড়ুন: চুমু খেয়ে তৃপ্ত! টলিপাড়ার এই অভিনেতাকে ‘ইমরান হাসমি’ আখ্যা দিলেন রিয়া সেন]