সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: চাপের মুখে পড়ে প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে দেশ ছেড়েছেন শেখ হাসিনা। খবর প্রকাশ্যে আসতেই সেই মুহূর্তে গণ-উল্লাস দেখার মতো। হাসিনার গণভবনে লুঠতরাজ। ভাঙা হচ্ছে ‘সোনার বাংলাদেশের’ জনক বঙ্গবন্ধুর মূর্তি পর্যন্ত। এমতাবস্থায় গণতন্ত্রের কণ্ঠের জোরের প্রশংসায় পঞ্চমুখ পদ্মাপারের নায়িকারা। জেলবন্দি হওয়ার ঘটনার কথা স্মরণ করে পরিমণী যেমন মা-সম মাতৃভূমির প্রতিশোধের কথা বলছেন। তেমন তাসনিয়া ফারিন, নুসরত ইমরোজ তিশারাও দেশের প্রবীণ প্রজন্মের লড়াইকে কুর্নিশ জানিয়েছেন।
উত্তাল বাংলাদেশে আপাতত অন্তর্বর্তী সরকার গড়ছে সেনা। সোমবার দুপুরেই ঘোষণা করেছেন সে দেশের সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামান। একের পর এক জ্বলন্ত ছবি-ভিডিও দেখে উদ্বিগ্ন গোটা দেশ। কেমন আছেন চঞ্চল চৌধুরী? এপার বাংলায় বসে অনুরাগীদের কপালে ভাঁজ! পদ্মাপারের পাশাপাশি এপারেও অভিনেতার অগণিত ভক্ত। রবিবারই চঞ্চল অভিনীত মৃণাল সেনের জীবন অবলম্বনে ছবি ‘পদাতিক’-এর ট্রেলার লঞ্চ করেছে। ভক্তরা আশায় বুক বেঁধেছিলেন সেই প্রেক্ষিতে চঞ্চলকে দেখতে পাবেন কলকাতায়। কিন্তু বাংলাদেশের এই উত্তাল পরিস্থিতিতে এদিন অভিনেতা অনুপস্থিত ছিলেন ‘পদাতিক’-এর ট্রেলার লঞ্চের অনুষ্ঠানে। সোমবার কার্যত অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতিতে পশ্চিমবঙ্গের চঞ্চল-ভক্তদের চিন্তা আরও বেড়েছে বই কমেনি! সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল-এর তরফে খোঁজ নিতেই চঞ্চল চৌধুরী এককথায় জবাব দিলেন, “এই আছি আর কী!” এদিনই আবার বাংলাদেশের উদ্দেশে শান্তির বার্তা দিয়েছেন টলিউড সুপারস্টার জিৎ।
এদিকে ‘হাসিনা মুক্ত’ বাংলাদেশে খুশি অভিনেত্রী নুসরত ইমরোজ তিশা, তাসনিয়া ফারিনরা। লড়াকু প্রজন্মকে কুর্নিশ জানিয়েছেন তাঁরা। তিশা ফেসবুকে বাংলাদেশের পতাকা আর রাজপথে জনঅরণ্যের ছবি শেয়ার করে লিখেছেন, “স্বাধীন দেশে স্বাগতম! আলহামদুল্লাহ!” এদিকে হাসিনা সরকার ঘনিষ্ঠ ঢালিউড ফিল্ম সংগঠন অ্যাক্টর্স ইক্যুয়িটি বাংলাদেশ থেকে অব্যহতি ঘোষণা করলেন অভিনেত্রী জাকিয়া বারী মম। তিনি জানিয়েছেন, “ইক্যুয়িটি মানে ন্যায়বিচার। ন্যায়ের কথা বলে চলমান পরিস্থিতিতে ন্যায়ের সঙ্গে আপোষ করে নেওয়া আমার পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। কারণ শিল্পী হিসেবে আমার দায়বদ্ধতা রয়েছে। সেই কারণেই অ্যাক্টর্স ইক্যুয়িটি বাংলাদেশ থেকে অব্যহতি নিলাম। এই সংগঠন দেশ তথা জাতীয় বিষয়ে লোকদেখানো অভিনয় না করে বিবেক, চেতনা জাগ্রত করে এগিয়ে যাক আশা রাখি।”
এদিকে তাসনিয়া ফারিন বাংলাদেশের পড়ুয়া প্রজন্মের শক্তির কথা মনে করিয়ে দিলেন। চব্বিশ ঘণ্টা আগেই প্রতিবাদী পোস্টে অভিনেত্রী জানিয়েছিলেন, “আমি আমার নিজের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে নীরব ছিলাম। সাহসের অভাবে নীরব ছিলাম।নিজের স্বার্থের চেয়ে দেশের স্বার্থকে বড় করে দেখতে পারিনি। এ ব্যর্থতার দায় সম্পূর্ণ আমার।গা বাঁচিয়ে একটা দায়সারা বক্তব্য প্রদান করার চেয়ে আমার নীরব থাকাকে শ্রেয় মনে হয়েছে। আজকে যখন হাজার হাজার মানুষ নিজের নিরাপত্তার কথা চিন্তা না করে শহীদ মিনারে জড়ো হল ভবিষ্যতের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার তাগিদে, তখন নিজের বাসায় বসে নিজের নিরাপত্তার কথা ভাবাটাই হাস্যকর।
কারো কোনো সাহায্য সহযোগীতা ছাড়া আপনারা সাধারণ মানুষ যারা এত সুন্দর করে দেশ সংস্কারের কাজ করে যাচ্ছেন তারাই আসল সেলিব্রিটি। আমার মতো স্বার্থপর মানুষদের অনেক কিছু শেখার আছে আপনাদের থেকে। হয়ত একদিন আপনাদের মতো আমারও সাহস হবে, কোনো কিছু লিখতে বলতে গিয়ে দশ বার ভাবতে হবে না। এখনও অনেক কথা লিখতে গিয়ে বারবার মুছে ফেলছি। আপনাদের মনে কষ্ট দিয়েছি। আমি ক্ষমাপ্রার্থী।” আর রাত পোহাতেই বাংলাদেশে সেনাবাহিনী সরকার গঠন করার কথা ঘোষণা করলে আন্দোলনরত পড়ুয়াদের কথা মনে করিয়ে দিলেন তাসনিয়া ফারিন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.