নতুন জামার গন্ধ। পুজোসংখ্যার পাতায় নয়া অভিযান। শরতের নীল-সাদা মেঘের ভেলায় পুজোর ছুটির চিঠি। ছোটবেলার পুজোর গায়ে এরকমই মিঠে স্মৃতির পরত। নস্ট্যালজিয়ার ঝাঁপি খুললেন রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়।
ছোটবেলার পুজোর আনন্দগুলোই অন্যরকম ছিল। তখন হয়তো ওই চারটে-পাঁচটে জামা হতো। সেগুলোই যে কতবার খুলতাম, কতবার দেখতাম আর গুছিয়ে রাখতাম, তার ইয়ত্তা নেই। ওই ববি প্রিন্টের ফ্রক আর ফুল ফুল দেওয়া ছোট ছোট জামা বানিয়ে দিত মা। সেগুলোই ছিল ভীষণ ভীষণ কাছের। একেবারে যাকে বলে প্রাণের কাছাকাছি। তারপর হুটহাট করে রাস্তায় বেরিয়ে পড়া তো ছিলই। পুজো দেখতে বেরনো। বন্ধুদের সঙ্গে খেলাধুলো। হইহই করে খেতে বেরিয়ে পড়ার দিন ছিল সেগুলো। এখন সেই দিনগুলোই খুব মিস করি। বন্ধুরা অনেকেই বাইরে চলে গিয়েছে। কেউ আর তেমন পাশে নেই। কথা বলা এখন সবই ফেসবুক-টুইটারে। এই পুজো আসছে আসছে মনে হলেই বন্ধুরা কাছে নেই, এই ব্যাপারটা আরও বেশি করে নাড়া দেয়। কিন্তু কিছু তো করার নেই।
[ আমার দুগ্গা: ভাবতাম পটুয়ারা দেরি করছেন বলেই পুজো আসছে না ]
এখন মা-বাবারও বয়স হয়েছে। তাঁরা আর বাড়ি থেকে বেরতে পারেন না। বাড়িতে বসেই পুজো কাটে। মা-বাবার সঙ্গে বেরনোর দিনগুলোও মিস করি। তারপর আমাদের বিল্ডিংয়ের নিচেই পুজো হত। মণ্ডপে সে সময় যাঁরা বসে থাকতেন, আজ তাঁরা কেউই প্রায় নেই। প্রতিবার পুজো এলেই তাঁদের কথা মনে পড়ে, ছোটবেলার স্মৃতিগুলো ভিড় করে আসে। যত দিন যাচ্ছে দেখছি, মিস করার পাল্লাই ভারী হচ্ছে। এখন বন্ধুরাও কাছে নেই। হুটহাট করে রাস্তায় বেরিয়ে পড়াও সম্ভব হয় না। এখন তাই ছোটবেলার ঘটনাগুলো স্মৃতির দরজায় আরও বেশি করে কড়া নাড়ে। কিন্তু জীবন তো এরকমই। এটা মেনে নিয়েই আমাদের আর একটা দুর্গাপুজোর দিকে এগিয়ে যেতে হবে। নতুন বছরগুলোকে এই সব কিছুর মধ্যেই কাছে টেনে নিতে হবে এবং আনন্দ খুঁজে নিতে হবে।
[ প্রতিবন্ধকতা বাধা নয়, এক হাতেই মৃন্ময়ী দশভুজা গড়ছেন জগদীশ ]