স্টাফ রিপোর্টার: ‘এলা এখন’। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এলাকে এখনকার প্রেক্ষাপটে এনে বর্তমান সময়ের আতশকাচের তলায় বিছিয়ে বিশ্লেষণ এবং আপাদমস্তক একটি রাজনৈতিক ভাষ্যরচনা।
বহুদিন ধরে ভাবছিলেন। শেষ পর্যন্ত বিস্তর গবেষণা শেষে অত্যন্ত কঠিন বিষয়টিকে মঞ্চে নামিয়েই ফেললেন একালের এক তরুণ পরিচালক। কাজটি বেশ হয়েছে, নাটকটি দেখার পর মন্তব্য হল ভরতি দর্শকের।
পরিচালকের নাম কৌশিক ঘোষ। নাটকের জগতে পরিচিতি তার কম নয়। তাই হাত দেবার আগেই এলাকে ঘিরে একটা আগ্রহ তৈরি হয়েছিল নাট্যপ্রেমীদের মধ্যে। কলকাতার শো সফল হওয়ার পর তা এতটাই বৃদ্ধি পায় যে, এবার জেলা সফরে বেরতে হচ্ছে কৌশিকদের। তার আগে কলকাতার বুকে শিশির মঞ্চে আগামী সোমবার ‘এলা এখন’ মঞ্চস্থ হবে।
[ দিল্লিতে এক মঞ্চে ঋতুপর্ণা-কেজরিওয়াল, শুরু বাংলা সিনে উৎসব ]
নাটকটির অলঙ্করণের দায়িত্বে হিরণ মিত্র। সংগীত শুভেন্দু মাইতি। অলোক নির্দেশনায় রয়েছেন ঠাণ্ডু রায়হান। তিনি বাংলাদেশের নামী শিল্পী। কলকাতায় এসেছেন কৌশিকের অনুরোধ ঠেলতে না পেরে। নাটকের মূল চরিত্র অনুর চরিত্রে অভিনয় করেছেন তথাগত চৌধুরি। আর এলা হয়েছেন শিপ্রা মুখোপাধ্যায়। কানাইয়ের ভূমিকায় নীলাভ চট্টোপাধ্যায়। ইন্দ্রনাথ হয়েছেন বিপ্লব নাহা বিশ্বাস। এগুলি মূল চরিত্র। এর বাইরে রয়েছেন অন্যান্য কলাকুশলীরাও। কৌশিক বলেছেন, রবীন্দ্রনাথ তাঁর রাজনৈতিক উপন্যাস এলাতে বলেছিলেন, মানুষের আত্মাকে মেরে যে দেশের প্রাণ বাঁচানো যায়, এটা সর্বৈব ভুল। মানবতার পক্ষে দাঁড়িয়ে তাঁর ভাষ্য চিরকালীন। এবং এখনও বাস্তব। নাটকটি নিয়ে গবেষণা করতে গিয়ে দেখি ’৩৪ সালে লেখা নাটকটির সঙ্গে বর্তমান সমাজব্যবস্থা বা রাজনৈতিক পটভূমির প্রেভদ সেই অর্থে নেই। দুনিয়াটা একই রয়েছে। সময় উত্তীর্ণ এই উপন্যাসটাই তাই আমার বক্তব্য হয়ে দাঁড়ায়। আমি এটাকে অবলম্বন করেই সাজিয়ে ফেলি এলাকে। এখনকার এলা অন্তুর গুলি খেয়ে মারা যাননি। তিনি বেঁচে রয়েছেন। নতুন সমাজ অন্বেষণের জন্য। নাটকের নাটকের অন্তু, তথাগত চৌধুরি বলেছেন, “গণ আন্দোলনের প্রহরীরাও বেশিরভাগ সময়ে স্বৈরাচারী হয়ে যান। মানবতা শব্দটা হারিয়ে যায় তখন। রবীন্দ্রনাথ এরই বিরোধিতা করেছিলেন লেখায়। আমাদের নাটকে সেটিই ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা থাকবে। এলা, শিপ্রা মুখোপাধ্যায় বলেছেন, এলা অত্যন্ত জটিল একটি চরিত্র। রবীন্দ্রনাথকে বারবার পড়ে তা বোঝার চেষ্টা করছি।”
কৌশিক এই নাটকে ব্যবহার করেছেন প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের গান। বীরেন চট্টোপাধ্যায়ের কবিতা।
[ আগুন নিয়ে খেলছে কেন্দ্র, নাগরিকপঞ্জি ইস্যুতে বিস্ফোরক বিভাস ]