Advertisement
Advertisement

Breaking News

Gandhi Godse Ek Yudh Review: ideological war between Gandhiji and Godse in an alternate reality

Gandhi Godse Ek Yudh Review: গুলি খেয়েও বেঁচে আছেন গান্ধীজি! কেমন হল ‘গান্ধী গডসে এক যুদ্ধ’ ছবি?

পড়ুন ছবির রিভিউ।

Gandhi Godse Ek Yudh Review: ideological war between Gandhiji and Godse in an alternate reality । Sangbad Pratidin
Published by: Sayani Sen
  • Posted:January 26, 2023 7:23 pm
  • Updated:January 26, 2023 8:23 pm

চারুবাক: ১৯৪৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর আততায়ী নাথুরাম বিনায়ক গডসের আক্রমণে বিড়লা হাউস চত্বরে গান্ধীজির মৃত্যু হয়। কয়েকমাস বাদে বিচারে নাথুরামকেও সাজা দেওয়া হয় মৃত্যুদণ্ড! কিন্তু, তেমনটা না হয়ে যদি গান্ধীজি বেঁচে যেতেন, আর নাথুরামের সঙ্গে গান্ধীজির দেখা হত একই জেলের একই ঘরে!! তাহলে দুই বিপরীত মেরুর রাজনীতির মানুষের মধ্যে কী ধরনের সংলাপ বিনিময় হতে পারত, সংঘাত গড়াতে পারত কতদূর – সেটা কল্পনা করেই চিত্রনাট্য লিখেছেন রাজকুমার সন্তোষী। অবশ্য তিনি সাহায্য নিয়েছেন নাট্যকার আসগর ওয়াজহাতের, যাঁর লেখা মূল নাটক এই ছবির উৎস। রাজকুমার স্পষ্ট করেই জানিয়ে দিয়েছেন “দুই চরিত্রের এমন সাক্ষাৎকার কাল্পনিক হলেও যথেষ্ট সম্মান ও শ্রদ্ধা রক্ষা করেই যদি এমন হত তাহলে…”
ছবিতে দেখি গান্ধীজি বুকে তিনটি গুলি খেয়েও বেঁচে গেছেন। স্বয়ং নেহরু হাসপাতালের ছাদে এসে উপস্থিত উৎকন্ঠিত জনতাকে জানাচ্ছেন “বাপুজি বাঁচ গয়ে!”

Gandhi Godse

Advertisement

তারপর থেকেই কল্পনার ঘুড়ি আকাশে উড়তে শুরু করে। জনমানসে বিভিন্ন সময়ে যেসব আলোচনা ও তর্কের অবতারণা হয়েছে, সেগুলোকেই রাজকুমার কল্পিত বাস্তবের চেহারা দিয়ে হাজির করেছেন ঋষি পাঞ্জাবির ক্যামেরার সামনে। দর্শক দেখছে গান্ধীজি সুস্থ হয়ে জেলখানায় গিয়ে নাথুরামের সঙ্গে কথা বলছেন, তিনি অহিংসার পূজারী, তাই ক্ষমা করে দিয়েছেন গডসেকে। এরপর দু’জনের মেরু – প্রান্তিক রাজনীতি, ধর্ম নিয়ে বিশ্বাস, হিংসা-অহিংসা নিয়ে কূট তর্ক, নারী পুরুষের প্রেম নিয়ে গান্ধীজির কট্টর মতবাদের বিপরীতে দাঁড়িয়ে তরুণী সুষমা ও নরেনের বিয়ে ঘটিয়ে দেওয়া পর্যন্ত ঘটেছে। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য সংযোজন হল স্বাধীনতা প্রাপ্তির পর কংগ্রেসে দলকে ভেঙে দেওয়ার কথা বলেছিলেন গান্ধীজি।

Advertisement

[আরও পড়ুন: বড়পর্দায় বাদশাহি কামব্যাক, ‘পাঠান’ বুঝিয়ে দিল শাহরুখ ‘জিন্দা হ্যায়’]

তাঁর কথায়, স্বাধীনতার জন্য বহুজনকে নিয়ে লড়াই করেছিল কংগ্রেস, কিন্তু দেশ শাসনের জন্য নয়। তিনি চেয়েছিলেন গ্রামীণ স্বরাজ এবং নির্বাচনে জিতে নতুন এক শাসন ব্যবস্থা গড়তে। কিন্তু নেহরু, সর্দার প্যাটেল, মৌলানা আজাদ, কৃপালানী, এমনকি বাবাসাহেব আম্বেদকর পর্যন্ত সবাই শাসকের চেয়ারে বসতে চাইলেন, হলও তাই। গান্ধীজি বলেছিলেন শাসক হুকুম দেয়, দেশ সেবা করে না। সেটাই ঘটল। পাশাপাশি রাজকুমার দেখালেন গান্ধীজি তাঁর গ্রামীণ স্বরাজের জন্য বিহারের গ্রামে এক আদর্শ আশ্রম স্থাপন করেছেন। সেখানকার মানুষদের নিয়ে জাতপাতের লড়াইয়ের বিরুদ্ধে, ধনী ব্যবসায়ীদের গরিব শোষণের প্রতিবাদে নতুনভাবে আন্দোলনের উদ্যোগ নিচ্ছেন! এবং একটা সময়ে এমন পরিস্থিতি হয় যে গান্ধীজিকে গ্রেপ্তার করতে বাধ্য হন নেহরু। তখন তাঁকে আবার পাঠানো হয় সেই একই জেলে যেখানে তখনও নাথুরাম বন্দি।

Gandhi-Godse

আবার দু’জনের সাক্ষাৎ এবং আবার দু’জনের মধ্যে নীতির ফারাক নিয়ে কূটতর্ক! যেখানে বারবার গান্ধীজিকে শুনতে হয় তাঁর অহিংসার রাজনীতি আসলে এক ধরনের হিংসাই, নিজের ইগো চরিতার্থ করতেই তিনি বারবার আমরণ অনশনের ডাক দিতেন, তিনি হিন্দু হিন্দুত্ব হিন্দুস্তানের বিরোধী, মুসলমানদের তোয়াজ করেন ইত্যাদি ইত্যাদি। অবশ্য গান্ধীজি নিজের যুক্তিতে সব অভিযোগই খণ্ডন করে দেন। এবং শেষে নাথুরাম সশ্রদ্ধ প্রণামও করেন গান্ধীজিকে! তাই ছবির শেষ মনে হয়, “সত্যিই এমন কেন হল না ইতিহাসটা আমাদের…” শেষ দৃশ্যে পরিচালক দেখালেন জেল থেকে দু’জনেই মুক্তি পেয়ে বেরোচ্ছেন, আর জেলের বাইরে বিবাদমান দুই জনতা দুই নেতাকেই জয়ধ্বনি দিচ্ছেন অনেকটাই হুঙ্কারের স্বরে! সবটাই যে হলেও হতে পারত, বা এমনটি ঘটলে ভারতের পরিস্থিতিটাই কেমন হত কল্পনা করতে মন্দ লাগবে না দর্শকদের।

পরিচালক রাজকুমার সন্তোষী বাস্তব আর কল্পনার মধ্যে কোনো রেখা রাখেননি, ফলে দর্শক একটু ধাঁধাঁয় পড়তেই পারেন, হয়তো তাঁর উদ্দেশ্যই তেমন ছিল। তাঁর এমন ভাবনা ও পরিকল্পনাকে সাবাসি জানাতেই হবে। রসিকতার ছলেই তিনি একটি ডিসকোর্স শুরু করলেন তিনি। প্রধান দু’টি চরিত্রে দীপক অন্তন (গান্ধীজি) ও চিন্ময় মন্ডেলকার (নাথুরাম) বেশ স্বাভাবিক। আরিফ জাকারিয়ার কৃপালানী, পবন চোপরার নেহরু এবং আম্বেদকর, সর্দার প্যাটেল ও মৌলানা আজাদের চরিত্রের শিল্পীরা চেহারায় মানানসই হলেও অভিনয়ে তেমন চরিত্র হয়ে উঠতে পারেননি। সুষমা ও নরেনের ভূমিকায় নতুন মুখ তনুজা ও অনুজ তেমন সুযোগই পেলেন না। আবহ সৃজনে ছবির দু-তিনটি জায়গায় এ আর রহমানের “রঘুপতি রাঘব রাজারাম…” গানটির সুর ব্যবহার বিশেষ অর্থবহ।

[আরও পড়ুন: টানটান কাহিনি, দুরন্ত অভিনয়, মগজকে নাড়া দেয় ‘কাবেরী অন্তর্ধান’, পড়ুন রিভিউ]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ