Advertisement
Advertisement

Breaking News

Chamkila Review

ব্রিলিয়ান্ট, ট্র্যাজিক হয়েও ইমতিয়াজের মাস্টারপিস নয় ‘চমকিলা’

তবুও দিলজিৎ-পরিণীতির 'চমকিলা'তে রয়েছে কিছু চমক। কেমন? পড়ুন রিভিউ

Diljit Dosanjh, Parineeti Chopra starrer starrer Chamkila Review
Published by: Sandipta Bhanja
  • Posted:April 18, 2024 6:15 pm
  • Updated:April 18, 2024 6:15 pm

সন্দীপ্তা ভঞ্জ: সদ্য নেটফ্লিক্স-এর পর্দায় মুক্তি পেয়েছে ‘চমকিলা’। পরিচালক ইমতিয়াজ আলি পরিচালিত বহু প্রতীক্ষিত সিনেমা মিউজিক্যাল বায়োপিক হিসেবে কেমন হল? পড়ুন রিভিউ।

ধান্নি রাম, সাত-আটের দশকে তখন পাঞ্জাব কাঁপাচ্ছেন। তাঁর দ্ব্যর্থক গান তখন রমরমিয়ে ব্যবসা করছে। ভাগ্যচক্রে অমরজ্যোতের সঙ্গে পরিচয়। জুটিও হিট! পাঞ্জাবের বিভিন্ন প্রান্তে এমনকী বিদেশেও একের পর এক শো করতে লাগল তারা। জুটি টিকিয়ে রাখার জন্য পয়লা স্ত্রীকে ঘরে রেখেই বিয়ে করতে হয়েছিল সহকর্মী গায়িকাকে। চমকিলা-অমরজ্যোত জুটিই ঝড় তুলে দিল। অথচ ‘সভ্য সমাজে’ ধান্নি রাম ওরফে চমকিলার গান নিষিদ্ধ। ‘এলিট ক্লাস’-এর অন্দরমহল তো দূরঅস্ত, শামিয়ানাতেও এসব গান বাজানো বারণ। ওঁদের কথায়, নিচু জাত, চামারের ছেলে চমকিলা। আর যেসব গান লেখে, সেসব কথা কানে যাওয়াও পাপ! চমকিলার গান যেন ‘নিষিদ্ধ প্রেমের ইস্তেহার’। তাই অভিজাত ঘরের কারও মুখে চমকিলার নাম শুনলেই তখন পিলে চমকে যেত পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের। দেওর-বউদি, শালী-জামাইবাবুকে চটুল ভাষার গান শুনে নাক সিঁটকাত তারা। কিন্তু রাতের অন্ধকারে দরজা এঁটে সেসব গানই যেন তাঁদের শরীর চাঙ্গা করার টনিক হিসেবে কাজ করত।

Advertisement

Advertisement

আটের দশকে পাঞ্জাব তখন খালিস্তানি মুভমেন্টে জ্বলছে। দফায় দফায় দাঙ্গা। অস্ত্রধারীরা উদভ্রান্তের মতো ঘুরছে। আর তারাই কিনা দিনভর পাহাড়াদারির পর রাতে শুনছে চমকিলার গান। সেই গানই নাকি তাদের টনিক জোগায়। ধান্নি রাম নিজের ঘরানা তৈরি করে ফেলেছে ততদিনে। খবর প্রশাসনের কানে যেতেই ডেকে পাঠানো হল ‘রাইজিং স্টার’ চমকিলাকে। একেকটা শো করে তখনকার দিনে চার-পাঁচ হাজার টাকা কামাচ্ছে সে। একদিকে সভ্য সমাজ, অন্যদিকে প্রশাসনের যাঁতাকলে পড়তে হল চমকিলাকে। অমর সিং চমকিলার উপর ভাগ্যদেবীর সুপ্রসন্ন হওয়া মেনে নিতে পারল না কোনও পক্ষই। অভিযোগ একটাই, এসব চটুল গান গাওয়া যাবে না। বন্ধ করে দিতে হবে চিরতরে। এদিকে চমকিলা তো পড়ে গেল মহাফাঁপড়ে। তাঁর ‘ওসব’ গানই শুনতে চাওয়ার বায়না সর্বত্র।শো করতে গিয়েও ক্ষোভের মুখে পড়তে হল তাঁকে। তাই ইউ টার্ন নিয়ে ‘নাম জপ লি’, ‘বাবা তেরা নানকানা’ গান গেয়ে সেগুলো হিট করলেও লাভের লাভ কিছুই হল না। এদিকে সমাজ, প্রশাসনের রক্তচক্ষু! শেষমেশ ভয়াবহ পরিণতি হয় অমর সিং, অমরজ্যোতের। গুলি খেয়ে মরতে হয় তাদের। চমকিলার খুনী কে? সমাজ না প্রশাসন? তা আজও রহস্য! মামলা বন্ধ হয়ে গেল কিছুদিনের মধ্যেই। এদিকে ‘চমকিলা মরিয়া প্রমাণ করিল সে মরে নাই’! এতদিনে এলিট ক্লাসের মুষ্টিমেয় লোক, পড়ুয়া শ্রেণীর একাংশ বিদ্রোহী হয়ে তাদের খুনের ন্যায়বিচার চেয়ে বসল! কিন্তু লাভের লাভ তাতে কিছুই হয়নি।

[আরও পড়ুন: টেক্কা, গোলাম ও বাদশা, তিন তাসের খেলায় কীভাবে চ্যাম্পিয়ন হল ‘মির্জা’? পড়ুন রিভিউ]

অমর সিং চমকিলার চরিত্রে অনবদ্য দিলজিৎ দোসাঞ্ঝ। এই ছবিতে অভিনয় করার জন্য চেহারাতেও বদল আনতে হয়েছে তাকে। তাঁর কড়া হোমওয়ার্কের ফসল দেখা গেল ইমতিয়াজ আলির ফ্রেমে। অমরজ্যোতের জুতোতে পা গলানোর জন্য পরিণীতি চোপড়াকে ওজন বাড়াতে হয়েছে। শুধু তাই নয়। একেকটা দৃশ্যে, বিশেষ করে মঞ্চে গান গাওয়ার সময়ে তিনি যেভাবে অমরজ্যোতের বডি ল্যাঙ্গুয়েজ আত্মস্থ করেছেন, তা সত্যিই প্রশংসার দাবিদার। এই ছবির আরেকটা প্লাস পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন। পুরনো ভিডিও সঙ্গে মিশেলে যেভাবে অ্যানিম্যানিকভাবে কিছু ডকুমেন্টেশন দেখানো হয়েছে, সত্যইই অসাধারণ। এই ছবিকে মিউজিক্যাল ড্রামাও বলা চলে। এ আর রহমানের মিউজিকে পাঞ্জাবের মাটির গন্ধ পাওয়া যায়। ইমতিয়াজ আলির গল্প বলার ধরণ চিরাচরিতভাবে এই ছবিতেও অনবদ্য। তবে শেষপাতে বলা চলে, চমকিলার চিত্রনাট্য আরেকটু আঁটসাঁট হতে পারত। বেশ কিছু দৃশ্য অতিরিক্ত বলে মনে হল।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ