Advertisement
Advertisement

Breaking News

Mirza Movie Review

টেক্কা, গোলাম ও বাদশা, তিন তাসের খেলায় কীভাবে চ্যাম্পিয়ন হল ‘মির্জা’? পড়ুন রিভিউ

গল্পের বাঁধুনি ও নির্মাণে যত্নই এই ছবির মূল জোর।

Here is the review of Ankush, Oindrila's Mirza Movie
Published by: Suparna Majumder
  • Posted:April 12, 2024 3:54 pm
  • Updated:April 12, 2024 3:54 pm

প্রিয়ক মিত্র: অঙ্কুশের প্রযোজনায়, সুমিত-সাহিলের নির্দেশনায় ‘মির্জা: পার্ট ওয়ান- জোকার’ (Mirza: Part 1 – Joker), ভানহীন মূল ধারার ছবি, কিন্তু বাংলা মূল ধারার ভাষা বদলানোর প্রয়াস এই ছবি নিয়েছে, একথা বলাই যেতে পারে। ড্রাগ পাচার এই ছবির গল্পের ভিতটুকু শুধু নির্মাণ করেছে, আন্ডারওয়ার্ল্ড-নির্ভর ছবির চেনা ছক এখানে ভেঙে গেছে ইন্টারভ‌্যালেই। কিন্তু প্রতিহিংসার গল্প হোক বা গ্যাংয়ের অন্দরমহলের যুদ্ধের, ‘মির্জা’-র আখ্যান নির্মাণে যত্ন ও যুক্তিবোধের অভাব ছিল না কোথাও। আর সেখানেই এই ছবি চ্যাম্পিয়ন।

Mirza
NCB বা মাদক-পাচারকারীদের পাকড়াও করার সরকারি গোয়েন্দা সংস্থার দুঁদে অফিসার কৌস্তভ সেন (ঋষি কৌশিক) ময়দানে নেমেছে, শহরকে মাদকমুক্ত করার প্রয়াস নিয়ে। কিন্তু এই বিশাল মাদক-চক্রের খেলোয়াড় কারা? একজন অবশ্যই সুলতান ভাই (কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়), যার ভয়াবহতা প্রথম দৃশ্যেই পরিষ্কার, যখন তার গুপ্তহত্যাকারীদের কবজি কেটে ফেলে তারই অনুচর সুইটি, আর নিশ্চিন্তে বিরিয়ানি খেয়ে চলে সুলতান। তার ছেলে আজহার (শোয়েব কবীর) শহরের পাচারচক্র ও নেটওয়ার্ক বহাল রাখে। নির্মমতায় সেও কম যায় না। যে কোল্ড ড্রিংকসের বোতল তার সবসময়ের সঙ্গী, সেই বোতলের আঘাতেই সে রক্তাক্ত করে বিশ্বাসঘাতকের খুলি। এদের মাঝেই রয়েছে আসল তাস, মির্জা (অঙ্কুশ)। তাকে ধরা যায় না কিছুতেই, কারণ তার জন্য প্রাণ দিয়ে দিতে পারে, এমন একদল শিশু ভোলানাথ সর্বদা মজুত। তাদের হাতে সবসময় উদ্যত মলোটোভ ককটেল। আর রয়েছে মুসকান (ঐন্দ্রিলা)।

Advertisement
Mirza
ছবি: ফেসবুক

মুসকান আপাতদৃষ্টিতে মাছবিক্রেতা। এই ছবির যে কোনও পুরুষ চরিত্রের থেকে শক্তিতে, সাহসে সে কম যায় না। তার দাঁতের ফাঁকে ধরা টুথপিক থেকে হাতে ধরা বন্দুক বা চেয়ারে বাঁধা অবস্থাতেই জোড়া পায়ে লাথি একইরকম সিটির উতরোল তুলতে পারে সিনেমা0 হলে, যতটা তুলবে মির্জার দুরন্ত, অপ্রতিরোধ্য অ্যাকশন। এছাড়াও আছে পুলিশ অফিসার মুর্শিদ (শান্তিলাল মুখোপাধ্যায়), যে মির্জার অজানা অতীতের চাবিকাঠি, মালিক ভাই (শংকর দেবনাথ), যে কিনা NCB-র সরষে-ভূত, অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আরও একটি নারীচরিত্র শবনম (প্রিয়া মণ্ডল), যে হয়তো পরবর্তী পর্বের মূল খেলোয়াড় হয়ে উঠতে পারে।

Advertisement

[আরও পড়ুন: ‘দাবাড়ু’র টিজারেই কিস্তিমাত! মিলল বাংলার গ্র্যান্ডমাস্টার সূর্যশেখরের জীবনযুদ্ধের ঝলক]

অ্যাকশন এই ছবির শেষ কথা নয়, সংলাপের চালাকিও নয়। গল্পের বাঁধুনি ও নির্মাণে যত্নই এই ছবির মূল জোর। অঙ্কুশকে পুরোদস্তুর মশালা ছবির অবতারে আবার পাওয়া গেল বহুদিন পরে, এবং অস্বীকার করার উপায় নেই, দর্শকের চোখ টেনে রাখার ক্ষমতা যে তাঁর আছে, তা তিনি অবলীলায় প্রমাণ করলেন। মায়া-মমতায় এবং রক্তাভ হিংসায় তিনি অটুট। ঐন্দ্রিলা এই ছবির আবিষ্কার। এমন আলোআঁধারি চরিত্রে তাঁকে আরও দেখতে পাওয়ার প্রত্যাশা থাকবে, অ্যাকশনেও তিনি অপূর্ব। কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় বিস্ময়কর অভিনেতা, দৃষ্টি থেকে হাতের মুদ্রা, সংলাপের শৈলী থেকে দাপটে তিনি অনবদ্য।

শোয়েব কবীর মাপা অভিনয় ধরে রাখেন ছবির শেষাবধি। ঋষি কৌশিক যথাযথ। ভালো লাগে শংকর দেবনাথ, শান্তিলাল মুখোপাধ্যায়দের মতো তুরুপের তাস অভিনেতাদের উপযুক্ত ব্যবহার। রজত গঙ্গোপাধ্যায় স্বল্প পরিসরে বেশ মানানসই। আর কয়েকটি দৃশ্যেই নজর কেড়ে যান প্রিয়া মণ্ডল। আর শেষ পাঁচ মিনিট দর্শকের হাড় হিম করে, তাদের ঘোর তৈরি করেন বাংলার অন্যতম এক শ্রেষ্ঠ অভিনেতা। তবে তা চমকই থাকুক।

ঈশান মিত্র আর অনীক ধরের সঙ্গীত ভালো, তবে আবহ যতটা জোরাল, ততটা মন ছুঁয়ে যায় না গান। অনিমেষ ঘোড়ুইয়ের সিনেম্যাটোগ্রাফি ও সংলাপ ভৌমিকের একেবারে ছকভাঙা সম্পাদনা ছাড়া এই ছবির মূল সুর নষ্ট হত। এই ছবির গল্পে যুক্তি আছে, আবার নেইও। কিন্তু যা আছে, তা হল পুরোদস্তুর প্যাশন। দক্ষিণী ছবির মূলধারার অনুসারী হবে কি না বাংলা ছবি, তা আগামী বলবে। তবে ভরপুর টুইস্ট, নায়ক-নায়িকার চরিত্রের রংবদল, শেষে ক্লিফহ্যাঙ্গার, খলনায়কের চরিত্রকে গুরুত্ব দেওয়া-ইত্যাদি যদি বাংলা মূল ধারায় বাড়ে, তবে তা আশাপ্রদই।

[আরও পড়ুন: রাজনীতিতেও কঙ্গনার প্রতিপক্ষ ‘নেপো কিড’! ‘বাপ-ঠাকুরদার সম্পত্তি নাকি?’ ফুঁসছেন পদ্মপ্রার্থী]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ