Advertisement
Advertisement

ভাইজান থাকাই সার! গল্পের গরু গাছে তুলে হোঁচট রেমোর ‘রেস’-এর ঘোড়ার

সলমন একা কি পারবেন এ ছবিকে বক্স অফিসের বৈতরণী পার করাতে ?

Race 3 movie review: Salman Khan vision-less, story crumbling
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:June 15, 2018 2:31 pm
  • Updated:June 15, 2018 2:32 pm

সুলয়া সিংহ: আব্বাস-মস্তানের ‘রেস’ সিনেপ্রেমীদের কাছে একটা আলাদা বেঞ্চমার্ক তৈরি করে দিয়েছিল। যার পর থেকেই এই ফ্র্যাঞ্চাইজির ছবি নিয়ে দর্শকদের প্রত্যাশা খানিকটা বেশিই থাকে। কিন্তু রেস থ্রি-র পরিচালক রেমো ডিসুজার মাথায় রাখা উচিত ছিল, ছবির নামের কপিরাইট পেলেই পরিচালককে ছোঁয়া যায় না। পরিচালকের হটসিটে বসেই ‘রেস থ্রি’ নিয়ে সিনেপ্রেমীদের উত্তেজনায় জল ঢেলে দিলেন তিনি। খোদ সলমন খানও তাই এ ছবিকে রক্ষা করতে পারলেন না।

‘রেস’ ছবি মানেই আন্দাজ করে নেওয়া যায় সেখানে তুখোড় অ্যাকশন, গল্পের পরতে পরতে রহস্য আর অবশ্যই থাকবে গতির লড়াই। হ্যাঁ, রেস থ্রি-তে এসবই রয়েছে। বরং একটু বেশিমাত্রাতেই। কিন্তু সবই যে যার মতো পাশাপাশি বসে গিয়েছে। গল্পের বুননই যেখানে সঠিক নয়, সেখানে রহস্যের পর্দাফাঁসেও তাই কোনও চমক থাকল না।

Advertisement

[পর্দায় ফিরছে ‘চৌরঙ্গী’র নস্ট্যালজিয়া, ফের সৃজিতের সিনেমায় স্বস্তিকা!]

খাপছাড়া গল্পটায় যদি চোখ রাখা যায়, তবে দেখা যাবে- অনিল কাপুর ওরফে সমশের সিং অস্ত্রের ব্যবসায়ী। যিনি এলাহাবাদ থেকে আলসিফায় এসে অস্ত্রের বিরাট ব্যবসা ফেঁদেছে। যার দুই ছেলে-মেয়ে সঞ্জনা (ডেইজি শাহ) এবং সুরজ (সাকিব সালিম) মগজাস্ত্রে খাটো হলেও যে কোন কাজে দারুণ পারদর্শী। তবে বাবার সৎ ছেলে অর্থাৎ সিকান্দারকে (সলমন খান) একেবারেই সহ্য করতে পারে না তারা। তাতে অবশ্য বড় মনের সিকান্দার কিছু মনে করে না। বরং ভাই-বোনের সঙ্গে মিলেমিশেই থাকতে ভালবাসে। সিকান্দারের হয়ে কাজ করে যশ ওরফে ববি দেওল। যাকে হাতিয়ার করে সিকান্দারকেই ‘রেস’ থেকে সরিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র ফাঁদে সঞ্জনা ও সুরজ। যে পরিকল্পনায় শামিল হয় জেসিকা (জ্যাকলিন ফার্নান্ডেজ)। কিন্তু মাস্টারমাইন্ড সিকান্দারের ছক ধরতেই পারেনি সমশেরের পুত্র ও কন্যা। এইভাবে গল্প এগোতে থাকে এবং একটি একটি করে কৌতূহলের অবসান ঘটে। শেষপর্যন্ত ভাল মানুষের মুখোশও খসে পড়ে। আর এই রহস্য উন্মোচন করতে গিয়েই একসময় গল্পের গরু গাছে ওঠে। যেখানে অসম্ভব বলে কোনও শব্দ নেই। কারণ সেখানে সেনাবাহিনীর গোটা একটা ঘাঁটিও সিকান্দারের সঙ্গে লড়াই করে পেরে ওঠে না। আবার বিরাট একটা ব্যাংকের লকার রুমে ঢুকে চুরি করা যায় চুইংগাম চিবোতে চিবোতেই।

Advertisement

গল্পের গতিকে আরও স্লথ করেছে অকারণ গানের উপস্থিতি। পঞ্চাশোর্ধ্ব সলমনের প্রেমকাহিনি ব্যাখ্যা করতে কি তাঁর গলাতেই গোটা একটা গান দেখানোর প্রয়োজন ছিল? মনে হয় না। গানের সিকোয়েন্স ছবির গল্পের সঙ্গে বেশ বেমানান। ঝাঁ চকচকে লোকেশন, দামী গাড়ি, একগুচ্ছ তারকা ছাড়া এ ছবি থেকে পাওয়ার মতো যা আছে তা হল অনিল কাপুরের অভিনয়। তিনিই এই রেস-এর পুরনো খিলাড়ি কিনা, তাই হয়তো দায়বদ্ধতাটা বেশি ছিল। ডেইজি আর জ্যাকলিনের কথা যত কম বলা যায়, কিংবা ভাবা যায় ততই ভাল। ছবির শেষ দৃশ্যে সলমনের সঙ্গে তাল মেলাতে শার্টলেস হওয়া ছাড়া ববি দেওলের অবশ্য বিশেষ কিছু করার ছিল না। আর সলমন? যিনি এ ছবির মূল আকর্ষণ, তিনি জানেন যাই করুন না কেন, তাঁর ছবি বক্স অফিসকে লজ্জা দেবে না। আর তাই অভিনয় করতেই ভুলে গেলেন। বলা ভাল, অভিনেতা নয়, রেমো ডিসুজা তাঁকে দিয়ে স্টান্টম্যানের কাজ করালেন। কখনও আকাশে উড়তে হল তো কখনও অদ্ভুত নাচের স্টেপ করে দেখাতে হল ভাইজানকে। সেলিম-সুলেমানের মিউজিকও চূড়ান্ত ফ্লপ।

[রাজের ‘জোজো’ হয়ে টলিউডে জয়জিৎ-পুত্র যশোজিৎ, অরুণাচলে চলছে শুটিং]

‘টিউবলাইট’-এর হতাশা কেটেছিল ‘টাইগার জিন্দা হ্যায়’-র দুর্দান্ত সাফল্যে। কিন্তু ফের মন ভাঙল সলমন ভক্তদের। গরম চা প্রথমবার খাওয়ায় যা মজা তা কি আর ফুটিয়ে খাওয়ায় আছে? ‘রেস থ্রি’ সেই ফোটানো চায়ের মতোই বিস্বাদ। এ ছবি বক্স অফিসে সলমনের রেকর্ড বজায় রাখবে কিনা এখনও জানা নেই। তবে রেমো ডিসুজাকে এ সিরিজে আর চান না সিনেপ্রেমীরা। কারণ সলমনের উপস্থিতিতেও পুরনো রণি সিংকেই (সইফ আলি খান) মিস করলেন তাঁরা। আর এখানেই জিতে গেলেন আব্বাস-মস্তান।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ