Advertisement
Advertisement
সান্ড কি আঁখ

তুখড় অভিনয়, অব্যর্থ লক্ষ্যভেদ ভূমি-তাপসীর

হলে যাওয়ার আগে জেনে নিন কেমন হল সিনেমা?

Saand Ki Aankh movie review: A must watch film with strong message
Published by: Sandipta Bhanja
  • Posted:October 26, 2019 3:40 pm
  • Updated:October 26, 2019 3:41 pm

‘পুরুষদের অলংকার যখন মহিলাদের হাতে’, তখন…? উত্তরপ্রদেশের তুখড় দুই মহিলা বন্দুকবাজের কাহিনি মু্ক্তি পেল সিনেপর্দায়।  লিখছেন সন্দীপ্তা ভঞ্জ

ছবির নাম- সান্ড কি আঁখ

Advertisement

পরিচালক- তুষার হিরানন্দানি

Advertisement

অভিনয়- তাপসী পান্নু, ভূমি পেড়নেকর, প্রকাশ ঝাঁ, বিনীত কুমার সিং, পবন চোপড়া, শাদ রানধাওয়া।

দিদা-ঠাকুমার কথা বললেই সাধারণত মিষ্টভাষী, পান চিবনো, নাড়ু পাকানো, রোদদুপুরে আচার শুকোতে দেওয়া মানুষটির কথাই মনে পড়ে। যার কাছে অনায়াসেই সব আবদার রাখা যায়। কিন্তু হাতে বন্দুক নিয়ে ছুটে বেড়ানো অর্জুনের মতো লক্ষ্যভেদী ঠাকুমা? ও বাবা! অবাক লাগে বইকী! লক্ষ্য একদম স্থির। ট্রিগার টিপলেই এক্কেবারে ‘বুলস আই’! উত্তরপ্রদেশের বঘপতের এরকমই দুই বন্দুকবাজ ঠাকুমা ‘রিভলবার দাদিরা’ খবরের কাগজে দাপিয়ে বেড়াচ্ছিলেন। এক দশক আগেকার কথা। পুরুষতান্ত্রিক সমাজের মুখে কষিয়ে চড় মারতে পেরেছিল যাটোর্দ্ধ এই মহিলারা। আর সেই কাহিনিই পর্দায় তুলে ধরে নিজের প্রথম ছবিতেই কিস্তিমাত করলেন নবাগত পরিচালক তুষার হিরানন্দানি।

পুরুষদের অলংকারে যখন সজ্জিত মহিলারা!

সমাজের চিরাচরিত ধারণা অনুযায়ী ‘বন্দুক তো পুরুষদের অলংকার’, কিন্তু সেই প্রচলিত চিন্তাভাবনাকে পিষে গুড়িয়ে দিয়েছেন উত্তরপ্রদেশের প্রত্যন্ত গ্রামের দুই প্রবীণ মহিলা। অহর্নিশি অপমান, ক্ষেত-খামার, ঘরকন্নার কাজ করে একপাল বাচ্চা মানুষ করা। মহিলারা যেন শুধুই বাচ্চা দেওয়ার যন্ত্র, গর্জে উঠেছিল এই দুই মহিলা। ছবি দেখে মনে হতেই পারে, তা চন্দ্র তোমর এবং প্রকাশী তোমর কোথা থেকে পেল বন্দুক চালানোর এই লক্ষ্যভেদী শক্তি? পুরুষতান্ত্রিক সমাজের মুখে ঝামা ঘঁষে দিয়ে দুই মহিলা বন্দুকবাজের উক্তি, ‘দিনরাত পরিবারের পুরুষদের থেকে গালিগালাজ খেয়ে’। শুধু দেশীয় স্তরে নয়, এমনকী আন্তর্জাতিক স্তরেও খ্যাতিলাভ করেছিল উত্তরপ্রদেশের এই দুই বয়স্কা মহিলা বন্দুকবাজ।

শরীর বুড়িয়ে গেলেও মন এখনও জোয়ান

উত্তরপ্রদেশের গ্রাম, শস্য ক্ষেত, গৃহপালিতের পাল, খাটিয়া, ধোঁয়া ওঠা উনুনের ধারে বসে কাঠ-কয়লা গোছানো.. ‘সান্ড কি আঁখ’ ছবিতে এমনভাবেই পাওয়া গেল গ্রামের খাস চালচিত্র। দুই মহিলা ঘরকন্নার কাজ, ঘুঁটে দেওয়া, ট্রাক্টর চালানো, ইট ভাঁটায় কাজ করা সবেতেই পারদর্শী। তবে, তার সঙ্গেই এই ষাটোর্দ্ধ মহিলাদের এক বিশেষ গুণ রয়েছে- তুখোড় বন্দুক চালানো। তিন কাল গিয়ে এক কালে ঠেকলেও মনের দিকে থেকে তাঁরা এখনও জোয়ান। শিকল ভেঙে মেয়েদের এগিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখে। সমাজের পুরুষদের থেকে অনেক এগিয়ে। মুখের কুঁকড়ে যাওয়া চামড়া, স্থানীয় পোশাকে ‘শুটার দাদি’ এবং ‘রিভলবার দাদি’ লুকে মাত করলেন দুই বলিউড অভিনেত্রী তাপসী পান্নু এবং ভূমি পেড়নেকর। বাস্তবের দুই বন্দুকবাজ সাহসিনীর জীবনসংগ্রাম পর্দায় বেশ সাফল্যের সঙ্গেই তুলে ধরলেন ভূমি-তাপসী। তবে উল্লেখ্য, এই দুই অভিনেত্রীর মেক-আপ আরও একটু নিঁখুত হওয়া প্রয়োজন ছিল।

ছবির সম্পদ

চিত্রনাট্য আরেকটু পোক্ত হতে পারত। কষিয়ে দেখানো যেতে পারত কিছু দৃশ্য। ইন্টারেস্ট জমতে জমতেই শেষ মুহূর্তে কেমন যেন পানসে-ঠান্ডা হয়ে দৃশ্য। তবে গল্প বলার শৈলী, সংলাপ, মেক-আপের পোচ এসবের বাইরে গিয়ে এই ছবি কিন্তু লিঙ্গবৈষম্য দূরীকরনের বার্তা দেয়। ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য অনুপ্রেরনা জোগাতে পারে অনেক পিছিয়ে পড়া মহিলাদেরই।  

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ