সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: চোখ দেখে রুপোলি পর্দার রূপকথা৷ মন দেখে স্বপ্ন৷ স্বপ্ন এমন এক জীবনের যেখানে নেই কোনও দুঃখ, নেই জ্বালা, নেই ব্যাথা৷ ব্যস মধুরেণ সমাপয়েৎ৷ কিন্তু স্বপ্নের এই বুদবুদকে তো একদিন বাস্তবের রুক্ষ মাটিতে পড়তে হয়৷ ভেঙে খান খান হয়ে যায় গ্ল্যামারের রঙিন চশমা৷ হাতে থেকে যায় কেবল আপনজনের অবহেলা আর বিশ্বাসঘাতকতার জ্বালা৷ বার্ধক্যের চামড়ায যখন ভাজ পড়ে, তখন বেঁচে থাকাও যেন অভিশাপের মতো ঠেকে৷ এই আপ্ত বাক্যটি কঠিন সত্যি হয়ে দাঁড়িয়েছে বর্ষীয়ান অভিনেত্রী গীতা কাপুরের জীবনে৷
এক সময় বলিউড দাপিয়ে বেড়িয়েছে এই ঘোলাটে হয়ে যাওয়া চোখ জোড়াই৷ ‘পাকিজা’র মতো সিনেমায় দাপটের সঙ্গে অভিনয় করেছেন রাজ কুমারের স্ত্রীর চরিত্রে৷ নামের পাশে রয়েছে বলিউডের প্রায় শ’খানেক সিনেমা৷ অথচ আজ তাঁরই ঠিকানা মুম্বইয়ের এক বেসরকারি হাসপাতাল৷ চিকিৎসার টাকা নেই, নেই ফেরার কোনও আস্তানা৷ আর অভিনেত্রীর এই অবস্থার জন্য দায়ী তাঁরই ছেলে৷ নিজের মাকে হাসপাতালে ফেলে রেখে যেতে যার বিবেকে এতটুকু দংশন হয়নি বোধহয়৷
[বেঙ্গালুরুর রাস্তায় বিষাক্ত ‘তুষারপাত’!]
গত একমাস ধরে এভাবেই হাসপাতালে পড়েছিলেন গীতা দেবী৷ ছেলে রাজা কাপুর তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছিল৷ শারীরিক অবস্থা বেশ খারাপ ছিল অভিনেত্রীর৷ ডাক্তাররা অগ্রিম কিছু টাকা জমা রাখতে বলেছিলেন চিকিৎসার জন্য৷ সেই টাকা এটিএম থেকে তুলতে যাওয়ার নাম করে হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে যায় ছেলে রাজা৷ এর পর থেকে তাঁর আর কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি৷ গীতাদেবীর মেয়ে পূজার সঙ্গেও যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছিল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ৷ কিন্তু কোনও সাড়া মেলেনি৷ বাধ্য হয়ে বর্ষীয়ান অভিনেত্রীর চিকিৎসা শুরু করেন হাসপাতালের ডাক্তাররা৷ কারণ তাঁর অবস্থা মোটেও ভাল ছিল না৷
একটু সুস্থ হতেই গীতাদেবী খুলে বলেন সবকিছু৷ কীভাবে ছেলে রাজা তাঁর উপর দিনের পর দিন অত্যাচার চালাত৷ বারবার তাঁকে বৃদ্ধাশ্রমে যাওয়ার জন্য জোর করা হত৷ এর জন্য মারধরও করা হত৷ চারদিনে একবার খেতে দেওয়া হত৷ দিনের পর দিন ঘরে বন্দি করে রাখা হত৷ এত অত্যাচারের ধকল যখন বৃদ্ধ অভিনেত্রীর দেহ সইতে পারেনি, তখন বাধ্য হয়েই তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে আসে ছেলে৷ তবে মা’কে সুস্থ করতে নয়, তাঁর দায় কাঁধ থেকে নামিয়ে পালিয়ে যেতে৷
[এবার সাধক কবির চরিত্রে দেখা মিলবে মিঠুন চক্রবর্তীর]
হাসপাতালের ডাক্তাররা জানিয়েছিলেন, নিজেকে সেনা অফিসার বলে পরিচয় দিয়েছিল রাজা৷ পরে গীতাদেবীর কাছ থেকে পুরো ঘটনা জানতে পারেন তাঁরা৷ বিষয়টি জানাজানি হতে বৃদ্ধ অভিনেত্রীর সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেন সিবিএফসি সদস্য অশোক পণ্ডিত ও প্রযোজক রমেশ তুরানি৷ তাঁরা দু’জনে মিলেই হাসপাতালের প্রায় দেড় লক্ষ টাকা বিল মেটান৷ আপাতত অনেকটাই সুস্থ অভিনেত্রী৷ শরীরের কষ্ট তাঁর লাঘব হয়েছে, কিন্তু মনের ক্ষত এখনও দগদগে৷ যা হয়তো কোনওদিনও সেরে উঠবে না৷
[সন্ত্রাস আর ক্রিকেট একসঙ্গে চলতে পারে না, জানিয়ে দিলেন ক্রীড়ামন্ত্রী]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.