সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: যুগের অবসান। ইতি এক ঘরানার। প্রয়াত ঋত্বিক ঘটকের পত্নী সুরমা ঘটক। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৯২ বছর। শারীরিক অসুস্থতার কারণে ভরতি ছিলেন বাঙ্গুর হাসপাতালে। সেখানেই গতকাল রাত সোয়া বারোটা নাগাদ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
[ যিশুর মেয়ে সারা শুধু নয়, সৃজিতের ‘উমা’য় থাকছে আরও চমক ]
ঋত্বিক যদি আগুনের নাম হয়, তবে নিঃসন্দেহে সে আগুন আগলে যিনি রেখেছিলেন তিনি সুরমা ঘটক। পরিচয়ের নিরিখে তিনি ঋত্বিক পত্নী। তবে শুধু কি তাই! সাংস্কৃতির বিপ্লবের পুরোধা কি হতে পারতেন ঋত্বিক, যদি না পাশে থাকতেন সুরমা। ইতিহাস সাক্ষী, তা কখনওই সম্ভব হত না। পেশায় ছিলেন স্কুল শিক্ষিকা। তবে বাস্তবিক অর্থে বলতে হয় ঋত্বিকের চালিকাশক্তি। উত্তাল সময়ে যখন নিজের রাজনৈতিক আদর্শে ক্রমশ কোণঠাসা হচ্ছেন ঋত্বিক, চলচ্চিত্র নিয়ে নিজস্ব ভাবনা ও নীরিক্ষায় যখন বুঁদ, তখন একান্ত সহচরী হয়েই পাশে ছিলেন সুরমা। গনগনে আগুন ঋত্বিকের সহধর্মিণী হওয়া চাট্টিখানি কথা নয়। সুরমা আক্ষরিক অর্থে ছিলেন তাই। ঋত্বিকের পাগলামি, ঋত্বিকের ধর্মকে আপন করে নিয়েছিলেন শুধু নয়, সাংসারিক পরিসর থেকে মুক্তি দিয়ে ঋত্বিককে হয়ে ওঠার অবকাশও দিয়েছিলেন তিনিই। বলা যায়, ঋত্বিকের সহযোদ্ধাই ছিলেন,তবে অন্যভাবে। হয়তো নীরবে। তেমন উচ্চকিত নয়। যুগ যন্ত্রণার যে ক্ষত ঋত্বিক লালন করে চলেছেন, ব্যক্তিগত জীবনে সেই একই দহন সয়েছেন তিনিও। সাংস্কৃতিক উথালপাথালে ঋত্বিক যদি শিখা হন তবে অবশ্যই সলতে পাকানোর কাজ আজীবন করে গিয়েছেন সুরমাই। ঋত্বিকের অনুগামীরাও জানেন, সুরমা সত্যিই যেন এক নদীর নাম। যে নদীর তিরে গড়ে উঠেছে ঋত্বিকের সভ্যতা ও সংস্কৃতি। পাশাপাশি কিছু সমালোচনাও আছে। তবে যন্ত্রণার ইতিবৃত্ত তো মিথ্যে নয়।
আজ সকাল ১০টায় তাঁর মরদেহ নিয়ে আসা হবে চেতলার সরকারি আবাসনে। ১১টায় শেষকৃত্য কেওড়াতলা শ্মশানে। এক বছর আগেই মৃত্যু হয়েছে কন্যা সংহিতা ঘটকের। পুত্র ঋতবানও দীর্ঘদিন মানসিক রোগে আক্রান্ত। রোগভোগের পর ঋত্বিকের দেশে পাড়ি দিলেন সহযোদ্ধা সুরমাও।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.