Advertisement
Advertisement

Breaking News

পাওয়ারফুল ‘পিঙ্ক’, দেখতে গেলেও সাহস দরকার!

দু' বার ভাববেন এই ছবি দেখার আগে!

Powerful Pink, Think Twice Before Watching The Movie
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:September 16, 2016 9:15 pm
  • Updated:August 6, 2021 5:57 pm

বিদিশা চট্টোপাধ্যায়: আপনি মহিলা? ছোট স্কার্ট পরেন? মদ্যপান করেন? ছেলেদের সঙ্গে সহজ ভাবে মেশেন? ‘পিঙ্ক’ ছবিটি অবশ্যই দেখবেন!
আপনি মহিলা হোন বা পুরুষ- মেয়েদের ছোট স্কার্ট পরা, মদ্যপান করা, ছেলেদের সঙ্গে সহজ ভাবে মেশা কি খারাপ চোখে দেখেন? আপনিও ‘পিঙ্ক’ অবশ্যই দেখবেন!

pink1_web
পি ফর ‘পিঙ্ক’। পি ফর পেট্রিয়ার্কি। অনিরুদ্ধ রায়চৌধুরি পরিচালিত ছবি এক দিকে যেমন তিন সাধারণ মেয়ের ঘুরে দাঁড়ানোর কথা বলে, তেমনই বলে পিতৃতন্ত্রের কথা। বাংলা ছবি ‘অনুরণন’, ‘অন্তহীন’, ‘অপরাজিতা তুমি’, ‘বুনো হাঁস’-এর পর অনিরুদ্ধর প্রথম হিন্দি ছবি ‘পিঙ্ক’ আজকের দিনে খুবই প্রাসঙ্গিক। কারণ এই ছবি খুব নির্লজ্জ ভাবে আধুনিক সমাজের পিতৃতন্ত্রের মুখোশ টেনে খুলে দেয়। যাঁরা নিজেদের প্রগতিশীল ভাবেন, পলিটিক্যালি কারেক্ট থাকতে নারীবাদী স্লোগান দেওয়ার পরে নিজের বাড়ি ফিরে পিতৃতন্ত্রের জামা গলিয়ে নেন, তাঁরা কিন্তু দু’ বার ভাববেন এই ছবি দেখার আগে! কারণ, অস্বস্তি হবে, খুব অস্বস্তি হবে। এখনও ট্রেনে, বাসে, অফিসে ছোট স্কার্ট পরা মেয়েটাকে নিয়েই সবচেয়ে বেশি ফিসফাস হয়। কোনও মেয়ে রাত করে বাড়ি ফিরলে আত্মীয়রা তার চালচলন সম্পর্কে সন্দেহ প্রকাশ করেন। কোনও মেয়ে বেশি হেসে পুরুষদের সঙ্গে কথা বললে ধরে নেওয়া হয় সে অ্যাভেলেবল! এই অলিখিত নিয়মগুলো সমাজ নিজেই তৈরি করে নিয়েছে। ‘পিঙ্ক’ ঠিক সেই জায়গায় আয়না ধরে সমাজকে অর্থাৎ আমাদের ঘাড় ধরে সেই সত্যের মুখোমুখি হতে বাধ্য করে।

Advertisement

pink2_web
মিনাল (তাপসী পান্নু), ফলক (কৃতী কুলহারি), অ্যান্ড্রিয়া (অ্যান্ড্রিয়া তারিয়াং)- তিন বন্ধু একসঙ্গে কাজ করে, এক বাড়িতে থাকে। এক রক কনসার্টে তাদের দেখা হয় রাজবীর (অঙ্গদ বেদি), ডাম্পি (রাসুল টন্ডন) এবং বিশ্বজ্যোতি ঘোষের (তুষার পাণ্ডে) সঙ্গে। পার্টি, আড্ডার পর এমন কিছু ঘটে যখন মিনাল বাধ্য হয়ে রাজবীরকে কাচের বোতল দিয়ে আঘাত করে। তিন বন্ধু পালিয়ে আসে। এর পর ছেলেগুলো প্রতিশোধ নিতে তৈরি হয়। ঘটনাচক্রে মিনালকেই অ্যাটেম্পড টু মার্ডারের চার্জে গ্রেফতার হতে হয়। এখানে এগিয়ে আসে পোড়খাওয়া, বাইপোলার ডিসঅর্ডারে আক্রান্ত, অবসর নিয়ে ফেলা উকিল দীপক সেহগল (অমিতাভ বচ্চন)। ফার্স্ট হাফে টানটান থ্রিলারের উত্তেজনা। সেকেন্ড হাফে কোর্টরুমের ডায়লগ ড্রামা।

Advertisement

pink3_web
তাপসী পান্নু, কৃতী কুলহারি এবং অ্যান্ড্রিয়া- তিনজনের অভিনয়েই রয়েছে বাস্তবতার ছোঁওয়া এবং তিনজনেই দুর্দান্ত। আসলে অভিনয়ই এই ছবির প্রাণভোমরা। মনে থাকে রাজবীরের বন্ধুর চরিত্রে বিজয় বর্মা, দিল্লির মহিলা পুলিশের চরিত্রে মমতা মালিক এবং বিচারকের ভূমিকায় ধৃতিমান চট্টোপাধ্যায়কে। একটা দৃশ্যে কলকাতার অর্জুন চক্রবর্তী চমকে দেন। এবং দীপক সেহগলের চরিত্রে অমিতাভ বচ্চন নজর কেড়েছেন বহু দৃশ্যে। যদিও তাঁর চরিত্রটা আরও ভাল ভাবে লেখা যেত এবং তাঁর স্ত্রীর চরিত্রে মমতা শঙ্করের ট্র্যাকটা খানিক অপ্রয়োজনীয়ই লাগে! তবুও অমিতাভ বচ্চন ছাপিয়ে গিয়েছেন বেশ কিছু দৃশ্যে। যেমন, মামলা চলাকালীন সেই চেনা ব্যারিটোন ভয়েস যখন বলে ওঠে, ”আসলে নো মানে হল নো, না! সেটা সব অবস্থাতেই আসলে না! তা সেই না আপনার বান্ধবী, প্রেমিকা, সহকর্মী, এমনকী স্ত্রীও যদি বলে, তাহলেও সেটা না-ই বোঝায়! সেই না-এর সম্মান করতে শিখুন!” এটা শুনতে শুনতে কোর্টের এক কোণে দাঁড়ানো সাধারণ মহিলা কনস্টেবলের যেমন অব্যক্ত যন্ত্রণায় গলার শিরা কাঁপতে থাকে, তেমনই একজন মহিলা হিসেবে আমার ভিতরেও কিছু একটা হয়। এই ছবি দেখতে দেখতে প্রতিটা মেয়ে তাদের প্রতিদিনের জীবনের নানা অপমান মনে করতে বাধ্য। এখানেই বেশ কিছু খামতি থাকা সত্ত্বেও এই ছবি প্রতিটা মেয়ের সঙ্গে ইমোশনালি কানেক্ট করতে পারে। কারণ ‘পিঙ্ক’ এই আমাদের কথাই বলে। ‘পিঙ্ক’ দেখতে দেখতে নিজের অভিজ্ঞতা মনে পড়লে কখনও ভয় করে, কখনও চোয়াল শক্ত হয়ে যায়।

pink4_web
অনিরুদ্ধ রায়চৌধুরির পরিচালনা, রীতেশ শাহর চিত্রনাট্য এবং গল্প, সুজিত সরকারের সৃজনশীলতা ও প্রযোজনায় অনেক দিন পর বলিউড এমন এক ছবি উপহার দিল যা দেখতে গেলে সাহস দরকার!

ছবি: পিঙ্ক
পরিচালনা: অনিরুদ্ধ রায়চৌধুরি
প্রযোজনা: সুজিত সরকার
চিত্রনাট্য: রীতেশ শাহ
অভিনয়: তাপসী পান্নু, কৃতী কুলহারি, অ্যান্ড্রিয়া তারিয়াং, অমিতাভ বচ্চন, অঙ্গদ বেদি, বিজয় বর্মা, ধৃতিমান চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ

৪/৫

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ