Advertisement
Advertisement
গাঁদা

রুখা জমিতে কৃষিবিপ্লব, গাঁদা ফুটিয়ে বিপুল আয় বৃদ্ধ দম্পতির

শীতকালীন গাঁদা চাষ করতে উদ্যোগী কৃষক দম্পতি।

A couple of Purulia cultivates marigold to earn more money
Published by: Sayani Sen
  • Posted:October 13, 2019 3:41 pm
  • Updated:October 13, 2019 3:43 pm

সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: শুকনো-খটখটে জমিতে বার কয়েক সবজি চাষ করেছিলেন। আয় তো দূর অস্ত। বরং লোকসানই হয়েছিল। এবার সেই রুখা জমিতেই বাসন্তী-কমলা গাঁদা ফলিয়ে ‘লক্ষ্মী লাভ’ করলেন বৃদ্ধ দম্পতি। রুখা মাটিকে ফুলে ফুলে রঙবাহারি করে বিশ্বকর্মা পুজো থেকে লক্ষ্মী পুজোর আগে পর্যন্ত তাঁদের আয় হয়েছে ৩৫ হাজার টাকা। আর এই টাকাকেই পুঁজি করে শীতকালীন গাঁদা চাষও করতে উদ্যোগী হচ্ছেন তাঁরা।

[আরও পড়ুন: ভিলেন বৃষ্টি, চাষে ক্ষতির জেরে লক্ষ্মী পুজোর আগে ফুলবাজার আগুন]

জঙ্গলমহল পুরুলিয়ার বান্দোয়ানের গুরুড় গ্রাম পঞ্চায়েতের হুলদবনি গ্রামের বেলডি টোলায় সাকিন এই দম্পতির নাম নিমাই চন্দ্র গড়াই ও কুন্দরী গড়াই। তাঁদের দুই ছেলে অন্য কাজে যুক্ত। এই দম্পতি কয়েক বছর ধরে চাষাবাদের সঙ্গেই যুক্ত। কিন্তু সেভাবে কখনও লাভের মুখ দেখেননি। কিন্তু এবার বাড়ির পাশের টিলা লাগোয়া সেই খটখটে ভূমিতেই গাঁদা চাষ করে আয়ের মুখ দেখলেন। বিশ্বকর্মা পুজো থেকে দুর্গাপুজো শেষ করে লক্ষ্মী পুজোর আগে পর্যন্ত তিন ধাপে বাসন্তী-কমলা গাঁদা ঝাড়খণ্ডের জামশেদপুরে বিক্রি করে এই টাকা লাভ করেছেন। ৬৫ বছরের বৃদ্ধ নিমাইবাবুর কথায়, “এই রুখা জমিতে বাসন্তী-কমলা গাঁদা ফলাতে কম কাঠ-খড় পোড়াতে হয়নি। সেই জুলাই মাসের মাঝামাঝি থেকে সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত প্রায় দু’মাস টানা পরিশ্রম করে গিয়েছি। তারপর জমিতে এমন ফুল ফুটেছে।”

Advertisement

Flower

Advertisement

এখন তাঁদের খটখটে বিঘা তিনেক জমি শুধুই ‘ফুলে ফুলে ঢাকা’। সেই ফুলে উড়ে বেড়াচ্ছে রঙ বাহারি প্রজাপতি। বলা যায় প্রতিদিনই সেই জমি থেকে ফুল তুলে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরে ঝাড়খণ্ডের জামশেদপুর যাচ্ছে। কখনও ফুল দিয়ে মালা গেঁথে আবার কখনও ঝুরো ফুলই বস্তা বন্দি করে বাইক বা সাইকেলে নিয়ে হাজির হন বান্দোয়ান বাস স্ট্যান্ডে। সেখান থেকে বাসে জামশেদপুর বা টাটানগর। এক-একটি মালা বিক্রি হচ্ছে দশ টাকায়। ঝুরো ফুল কেজি প্রতি ৩৫ থেকে ৪০ টাকা। নিমাইবাুর সঙ্গে স্ত্রী কুন্দরীদেবীও এই গাঁদা গাছে যেমন জলসেচ করেন, তেমনই গাছের গোড়ায় দিচ্ছেন গোবর সার। জমির পাশের পুকুর থেকে পাম্পের সাহায্যে ক্ষুদ্র সেচের মাধ্যমে রুখা ভূমিতে ফুটিয়ে তুলেছেন বাহরি ফুল। এই কৃষক দম্পতির কথায়, “পূর্ব মেদিনীপুরের মেচেদা থেকে এই ফুলের ডগা এনে মাটিতে পোঁতা হয়েছিল। সেই গোড়া থেকে যে শিকড় বা চারা গাছ হয় তা লাগিয়েই এই বাগান তৈরি হয়েছে।”

[আরও পড়ুন: বাড়তি লাভ চান? রুই, কাতলার সঙ্গে করুন পেংবা চাষ]

কোজাগরী লক্ষ্মী পুজোর আগে তাঁদের হাতে হাজার হাজার টাকা এলেও আক্ষেপ রয়েছে এই বৃদ্ধ দম্পতির। তাঁদের কথায়, “উদ্যান পালন দফতর থেকে বিজ্ঞানসম্মতভাবে এই ফুল চাষ করার কোনও সুপরামর্শ পেলে ফলন আরও ভাল হতে পারত। কারণ, গাছে রোগ পোকার আক্রমণ ঘটলে ঠিক কি করনীয় তা আমাদের সঠিকভাবে আজও জানা নেই।” ফুলে ফুলে হলুদবনির বেলডি টোলা এখন বাসন্তী গাঁদায় আক্ষরিক অর্থেই হলুদ হয়ে উঠেছে!
ছবি: অমিত সিং দেও 

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ