সৌরভ মাজি, বর্ধমান: সময়ের হিসাব অনুযায়ী পাকতে শুরু করেছে বোরো ধান। কিন্তু লকডাউনের ফলে ধান কাটার
শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। তার ফলে চিন্তার ভাঁজ শস্যগোলা বর্ধমানের কৃষকদের কপালে। কীভাবে মহাজনদের থেকে নেওয়া
ঋণ শোধ নেবেন আর কীভাবেই বা সংসার চালাবেন তাঁরা, তা নিয়ে চিন্তিত কৃষিজীবীরা।
শস্যগোলা বর্ধমানে প্রায় ১ লক্ষ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ হয়েছে। ধান কাটার সময় এটি। অথচ ঠিক সেই সময়ই
দেশজুড়ে শুরু লকডাউন। তার ফলে কীভাবে ধান কাটার কাজ চলবে, তা নিয়ে চিন্তিত কৃষকরা। মন্তেশ্বরের কৃষক সাইদুল
হোসেন বলেন, “লকডাউন উঠবে কি না জানা নেই। উঠলেও শ্রমিকরা ভিনরাজ্য থেকে আসতে পারবেন কি না তা নিয়ে
অনিশ্চয়তা রয়েছে। যন্ত্রের সাহায্য নিতে হলেও তা চালানোর লোক মিলবে না।”
[আরও পড়ুন: লকডাউনে বরোজেই পচছে পানপাতা, ব্যাপক আর্থিক ক্ষতি বাংলার কৃষকদের]
এর পাশাপাশি আবার ধানের শিস সাদা হয়ে যাওয়ায় চিন্তা বাড়ছে কৃষকদের। মন্তেশ্বরের আটাশপুরের কৃষক গোলাম গস
শেখ জানান, গত বুধবার ঝড়বৃষ্টি হয়েছিল। খুব বেশি নয়। কিন্তু তাতেও বিঘার পর বিঘা জমিতে ধানের শিস সাদা
হয়ে গিয়েছে। ফলন হবে না তাতে। গত ৪০ বছর ধরে ধান চাষ করছেন। কিন্তু এমনটা ঘটেনি। মাজরার আক্রমণে
অনেক সময় শীষ সাদা হয়। কিন্তু সামান্য ঝড়ে এমন ঘটে না। তাই আতঙ্কিত স্থানীয়রা। কৃষি দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে,
এখনই আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। শিস সাদা হলেও ফলন অনেক সময় হয়ে থাকে। তবে মান কিছুটা খারাপ হতে পারে।
বহু কৃষকই মহাজনদের থেকে ঋণ নিয়ে ধান চাষ করেন। সেক্ষেত্রে ধান তুলে বিক্রি করতে না পারলে অর্থ উপার্জন হবে
না। সেক্ষেত্রে কীভাবে মহাজনের ঋণ শোধ করবেন, তা নিয়ে চিন্তিত কৃষকরা। টাকা না থাকলে অন্ন সংস্থানই বা কীভাবে
হবে, সে প্রশ্নও ভাবাচ্ছে কৃষকদের।