Advertisement
Advertisement

Breaking News

Here are some way to farming Turkey

টার্কি পালনের প্রধান বাধা রোগ, জেনে নিন প্রতিকারের উপায়

বড়দিনের আগে ক্রমশ বাড়ছে টার্কির চাহিদা।

Here are some way to farming Turkey । Sangbad Pratidin
Published by: Sayani Sen
  • Posted:December 21, 2022 8:30 pm
  • Updated:December 21, 2022 8:30 pm

ভারতের টার্কি পালন এবং টার্কির মাংসের চাহিদা দিন দিন বেড়ে চলেছে। বিশেষ করে উৎসবের মরশুমে। পাশাপাশি বর্তমানে বিরিয়ানিতেও এই মাংসের ব্যবহার বাড়ছে। ২৪ সপ্তাহ বয়সের মধ্যে একটি পুরুষ পাখির গড় ওজন হয় ১০ থেকে ১৫ কেজি। যার বাজার মূল্য প্রতি কেজি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা। এর মাংস ও ডিম সুস্বাদু ও পুষ্টিকর। মাংসে প্রোটিনের পরিমাণ অনেকটাই বেশি এবং ফ্যাট খুবই কম থাকে। মাংসে যথেষ্ট পরিমাণে খনিজ পদার্থ, ভিটামিন ও প্রয়োজনীয় অ্যামাইনো অ্যাসিড ও ফ্যাটি অ্যাসিড পাওয়া যায়। তবে কোলেস্টেরলের পরিমাণ খুব কম। টার্কি পালনে ভাল আয়ের সুযোগ রয়েছে। লিখেছেন পশ্চিমবঙ্গ প্রাণী ও মৎস্যবিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের ডা. মীর আজহার উদ্দিন।

সংক্রামক সাইনোসাইটিস
এটি একটি ব্যাকটেরিয়া ঘটিত রোগ। যা মাইক্রোপ্লাজমা, গ্যালিসেপটিকাম ব্যাকটেরিয়া দ্বারা হয়ে থাকে।
রোগের লক্ষণ
সাইনাস ফুলে যায়। চোখ বন্ধ হয়ে যায়। কাশি, হাঁচি ইত্যাদি হয়ে থাকে।
টার্কির প্রোটোজোয়া ঘটিত রোগ
টার্কির প্রোটোজোয়া ঘটিত রোগ গুলি হল ব্ল্যাকহেড, কক্সিডিওসিস প্রভৃতি। এই রোগ দুটি টার্কি পাখিকে বেশি প্রভাবিত করে থাকে।

Advertisement

Some tips about Turkey poultry amidst growing demand
ব্ল্যাকহেড
হিস্টোমোনাস মেলিয়াগ্রিটিস নামক এককোষী পরজীবীর কারণে ব্ল্যাক হেড হয়। এই রোগটি কৃমির দ্বারা বাহিত হয়।
রোগের লক্ষণ
আকস্মিক মৃত্যু ঘটে থাকে। নিস্তেজতা। উজ্জ্বল হলুদ রঙের ডায়েরিয়া হয়।
প্রতিরোধ ও চিকিৎসা
ভিওভিট ব্যবহার করা হয় ব্লাকহেড সংক্রমণ কমানোর জন্য। অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করা যেতে পারে। মূলত সেকেন্ডারি ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ কমানোর জন্য নিয়মিত কৃমিনাশক ওষুধ খাওয়ানোর দরকার।

Advertisement

[আরও পড়ুন: ভেষজ ও সুগন্ধির চাষাবাদে জীবন জীবিকা বদলের স্বপ্ন অযোধ্যা পাহাড়ে]

কক্সিডিওসিস
এটি একটি প্রোটোজোয়া ঘটিত রোগ। এই পরজীবী অন্ত্রের কোষে প্রবেশ করে কোষগুলোকে ধ্বংস করে। এই রোগটি টার্কি পাখির জন্য মারাত্মক ক্ষতিকারক।
রোগের লক্ষণ
ওজন কমে যায়। ডায়েরিয়া হয়।
প্রতিরোধ ও চিকিৎসা
সংক্রমিত পাখির মল ও আবর্জনা পরিষ্কার করতে হবে। নিয়মিত ভ্যাকসিন দিতে হবে। অ্যামপ্রোলিয়াম বা বেকব্রের মত অ্যান্টিকক্সিডিয়াল এজেন্ট ব্যবহার করা হয় সংক্রমণ প্রতিরোধের জন্য। গৌণ সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের জন্য অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করা হয়।
টার্কির ছত্রাক ঘটিত রোগ
টার্কি পাখির ক্ষেত্রে মূলত অ্যাসপারজিলোসিস সংক্রমণ বেশি দেখা যায়। যেহেতু এই পাখি অন্যান্য পাখির তুলনায় বেশি রোগ প্রতিরোধী তাই এদের ছত্রাক ঘটিত রোগ সংক্রমণে খুব কমই দেখা যায়। এছাড়া সাইকো টক্সিকোসিসও হয়ে থাকে।
অ্যাসপারজিলোসিস
এটি একটি ছত্রাক ঘটিত রোগ এটি সাধারণত পল্টদের প্রভাবিত করে (পাঁচ দিন থেকে আট সপ্তাহ বয়স পর্যন্ত পাখিদের)।

Turkey
রোগের লক্ষণ
ভারী ও দ্রুত শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে দেখা যায়। চোখে ক্ষত দেখা যায়।প্রতিরোধ ও চিকিৎসাএই সংক্রমণের কোন ব্যবহারিক প্রতিকার নেই। সংক্রামিত পাখিদের আলাদা করতে হবে। লিটার উপাদান প্রতিস্থাপিত করতে হবে। তেল ভিত্তিক জীবাণু-নাশক স্প্রে করতে হবে।
টার্কির ভাইরাস ঘটিত রোগ
টার্কির ভাইরাস ঘটিত রোগগুলি হল ব্লু কম্ব রোগ, হোমোরজিক এন্টারাইটিস, নিউক্যাস্টল রোগ, ফাউল পক্স ইত্যাদি।
সাধারণ লক্ষণ ও উপসর্গ
ওজন কমে যায়, ডায়েরিয়া হয়ে থাকে, ডিম উৎপাদন কমে যায়, হাঁপাতে থাকে, ঘাড় মোচড়ানো, পক্ষাঘাত ইত্যাদি দেখা যায়। আকস্মিক মৃত্যু দেখা দেয়। বিষনণ্ণতা দেখা যায়।
প্রতিরোধ ও চিকিৎসা
নিয়মিত টিকা দেওয়া প্রয়োজন। বিশেষ করে রানীক্ষেত রোগ ও ফাউল পক্স রোগের বিরুদ্ধে টিকা দেয়া অত্যন্ত জরুরি। টার্কির ঘর দূষণমুক্ত করণ করলে ভাল হয়।
টার্কি পাখির টিকা দেওয়ার সময়সূচী
• রানিক্ষেত টিকা (এফ১) ৭ দিনে
• রানিক্ষেত টিকা (ল্যাসোটা) ২৮ দিনে
• ফাউল পক্স ৪২ দিনে
• রানীক্ষেত টিকা (আরটুবি) ৫৬ দিনে
• রানীক্ষেত টিকা (আরটুবি) ২৫ সপ্তাহ
• ফাউল কলেরা টিকা ৮ থেকে ১০ সপ্তাহটার্কিতে মাকড় (ফাউল মাইট) হতে দেখা যায়। লেজের পালক, পেটের পালকে বেশি দেখা যায়। এজন্য উপযুক্ত পরিচর্যা ও উপযুক্ত যত্ন নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। এছাড়া টার্কি পালনের ঘর পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে এবং শুকনো থাকাটা জরুরি। প্রয়োজনে বাহ্য পরজীবী পতঙ্গ নাশক ওষুধ (যেমন, পেস্টোব্যান ১:১০ অনুপাতে জলের সঙ্গে মিশিয়ে) ব্যবহার করতে হবে।

Turkey
টার্কির বিপণন
ভারতের টার্কি পালন এবং টার্কির মাংসের চাহিদা দিন দিন বেড়ে চলেছে। ২৪ সপ্তাহ বয়সের মধ্যে একটি পুরুষ পাখির গড় ওজন হয় ১০ থেকে ১৫ কেজি। যার বাজারমূল্য প্রতি কেজি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা। বিশেষ করে বড়দিন, দীপাবলি ও নববর্ষের সময়ে এই টার্কির পাখির মাংসের চাহিদা অনেকটাই বেড়ে যায়। এছাড়া বর্তমানে বিরিয়ানি তৈরির জন্য এই পাখির চাহিদা ক্রমশ বেড়ে চলেছে। এই পাখির মাংস বর্তমানে স্থানীয় বাজারে বা দেশের বড় বড় সুপারমার্কেটে বিক্রি করা হয়। তাছাড়া বেশিরভাগ পাখি ব্যবসায়ীরা খামার থেকে তুলে নেন এবং সেই পাখিগুলি কাছাকাছি রাজ্যে বিক্রি করা হয়ে থাকে। বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গ প্রাণীসম্পদ উন্নয়ন নিগমের হরিণঘাটা আউটলেট-এর মাধ্যমে মাংস বাজারে পৌঁছায় এবং পরে এগুলি বিক্রি করা হয়ে থাকে।
বাচ্চা ও প্রশিক্ষণের খোঁজখবর
*পশ্চিমবঙ্গ সরকারের প্রাণীসম্পদ বিকাশ দপ্তর। 
* অনেক সময় বিভিন্ন ব্লক স্তরে টার্কি পালন সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়ে থাকে। তাই আপনার ব্লকের বিএলডিও-র সঙ্গে এ ব্যাপারে পরামর্শ নিতে পারেন।

[আরও পড়ুন: বাজারে মিলছে না সার, আলুচাষিদের কপালে চিন্তার ভাঁজ, কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা?]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ