Advertisement
Advertisement

Breaking News

কীভাবে পোকার হাত থেকে বাঁচাবেন কলা গাছ? জেনে নিন উপায়

কী জানালেন বিশেষজ্ঞরা?

Know how to save banana tree from insects | Sangbad Pratidin
Published by: Tiyasha Sarkar
  • Posted:September 8, 2021 7:45 pm
  • Updated:September 8, 2021 7:45 pm

কলাগাছের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পোকা হল উইভিল বা কাণ্ড ছিদ্রকারী পোকা। এই পোকার আক্রমণে গাছের যেমন বৃদ্ধি ব্যাহত হয় তেমনই কলার ফলনও কমে যায় এবং পরবর্তীতে কলাগাছ মারাও যেতে পারে। লিখেছেন স্বামী বিবেকানন্দ বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. তন্ময় সরকার

সারা বিশ্বে কলা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ফসল। কলা (Banana) উৎপাদনের দিক থেকে ভারত পৃথিবীর মধ্যে প্রথম স্থানে। ভারতবর্ষের সর্বমোট কলা উৎপাদনের ৩.৫ শতাংশ কলা উৎপাদন হয় পশ্চিমবঙ্গে। কলা চাষের সময় চাষিদের অনেক প্রতিকূল অবস্থার সম্মুখীন হতে হয়। কলা গাছের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পোকা হল উইভিল বা কান্ড ছিদ্রকারী পোকা। এই পোকার আক্রমণে গাছের যেমন বৃদ্ধি ব্যাহত হয় তেমনি কলার ফলন ও কমে যায় এবং পরবর্তীতে কলা গাছ মারাও যেতে পারে।

Advertisement

Advertisement

[আরও পড়ুন: নোনা জমিতে ধান চাষ, হলদিয়ার বিদ্যুৎ উৎপাদক সংস্থার সহযোগিতা নজির গড়লেন কৃষকরা]

কাণ্ড ছিদ্রকারি পোকাগুলি দেখতে খুব ছোটো ছোটো বাদামি থেকে কালো রঙের হয়। পোকাগুলি খুব শক্ত আকারের এবং মাথার দিকে শুঁড়ের মতো থাকে। এরা সাধারণত দিনের বেলা পড়ে থাকা পাতার নিচে ও গাছের খোলার নিচে থাকে। রাতের বেলা খাবারের সন্ধানে বের হয় কিন্তু বেশি দূর পর্যন্ত যায় না। এদের উপর কোন কিছু আক্রমণের সময় এরা মরার মতো পড়ে থাকে এবং বিপদ কেটে গেলে আবার আগের অবস্থায় ফিরে যায়। স্ত্রী পোকা কাণ্ডের গোঁড়া ও গোঁড়া থেকে একটু উপরে কাণ্ডের ভিতরে ডিম পাড়ে। এছাড়াও জমিতে পড়ে থাকা কলা গাছের কাণ্ডেও ডিম পাড়ে। পোকার ডিম থেকে কিছুদিন পর ছোটো লার্ভা বা গ্রাব বের হয়ে আসে ও কাণ্ডের ভিতরের নরম শাঁস খেয়ে সুড়ঙ্গ তৈরি করে থাকে। সুড়ঙ্গ তৈরি হবার ফলে কলা গাছে, জল ও খাদ্য চলাচল ব্যাহত হয় ও গাছ দুর্বল হয়ে পড়ে। সুড়ঙ্গ গুলো বড় হলে গাছের গোঁড়া এবং মাঝ থেকে ভেঙে পড়তে পারে। ৫-৭ দিনের মধ্যে পিউপা গুলো ছোটো পোকাতে পরিণত হয়।

পোকার আক্রমণ কীভাবে বুঝবেন
উইভিল পোকাগুলো দল বেঁধে কলা গাছকে আক্রমণ করে। এই পোকার আক্রমণ দেখার জন্য গাছের গোঁড়ার খোল খুলে দেখতে পারেন। গাছের গোঁড়া ও কাণ্ডে ছিদ্র দেখা যায় এবং বাগানে ভাঙা কলা গাছ দেখা যাবে। এই পোকাগুলো খুবই অল্প জায়গায় দল বেঁধে ঘোরাফেরা করে। এক বাগান থেকে অন্য বাগানে আক্রান্ত কলা গাছ থেকেই ছড়ায়। নতুন বাগান স্থাপনের সময় পরিচ্ছন্ন চারা রোপণ করতে হবে, যাতে এই পোকার সংক্রমণ কমানো যায়। পুরনো বাগান থেকে চারা নিয়ে লাগালে, চারা গুলোর গোঁড়া অবশ্যই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে নিতে হবে।

প্রতিকার
জমি পরিছন্ন রাখতে হবে। গাছের ভাল ফলনের জন্য প্রতি তিন থেকে চার মাস পর পর জৈব ও রাসায়নিক সার প্রয়োগ করতে হবে। জৈব সার দেওয়ার সময় গাছ থেকে এক ফুট দূরত্বে দিতে হবে। যে সমস্ত কৃষকরা মালচিং ব্যাবহার করেন, তারা যেন অবশ্যই গাছের গোঁড়া থেকে দূরে মালচিং করেন। কেননা এই পোকা নিয়ন্ত্রণের জন্য গাছের গোঁড়া পরিচ্ছন্ন রাখা দরকার। পুরো বাগানকে আগাছা মুক্ত রাখা প্রয়োজন। সদ্য কাটা কলা গাছ বাগান থেকে বের করে দিতে হবে। উইভিল পোকা গুলো এরকম পড়ে থাকা গাছে বংশবিস্তার করে। চারাগাছ(তেউড়) লাগানোর জন্য গর্ত তৈরি করার পর সরাসরি সেখানে কীটনাশক প্রয়োগ করা যেতে পারে। প্রতি গর্তে ২০-৩০ গ্রাম ফিউরাডন প্রয়োগ করতে হবে। চারাগাছ (তেউড়) বসানোর আগে ১মিলিলিটার ক্লোরোপাইরিফস (এগ্রোপাইরিফস-৪০ইসি) প্রতি লিটার জলে গুলে তেউড় গুলো এক ঘণ্টা ডুবিয়ে রেখে দিয়ে রোপণ করতে হবে। এছাড়া পরিণত গাছের গোঁড়াতেও ৩ মিলিলিটার ক্লোরোপাইরিফস (এগ্রোপাইরিফস-৪০ইসি)প্রতি লিটার জলে গুলে ১৫ দিন অন্তর ২-৩ বার স্প্রে করতে হবে। গাছ কেটে দেওয়ার পর গাছের গোঁড়া পরিষ্কার করে সেখানে কার্বারিল ১ মিলিলিটার প্রতি লিটার জলে গুলে স্প্রে করতে হবে।

ফাঁদ তৈরি
কলা গাছ কাটার পর কাণ্ডকে এক ফুট লম্বা ছোট ছোট টুকরে কেটে প্রতি টুকরোকে মাঝখান থেকে কেটে দুভাগে ভাগ করে নিতে হবে। এবার কলা গাছের পাশে মাটির উপর কলা পাতা বিছিয়ে কাটা কাণ্ডকে উপুড় করে রেখে দিতে হবে, এছাড়া গাছ কাটার পর কাণ্ডের উপর ছোটো কাটা টুকরোকে একই ভাবে রেখে দিতে হবে। কাঁচা কলা গাছের গন্ধে পোকাগুলি আকৃষ্ট হবে। এরপর ফাঁদ গুলি একদিন পরপর দেখলে দেখা যাবে পোকাগুলি কাটা কাণ্ডের টুকরোতে আক্রমণ করেছে এরপর সেগুলিকে নিয়ে পুড়িয়ে ফেলতে হবে। প্রতিবার ফাঁদ পাতার সময় সতেজ কাণ্ড ব্যবহার করতে হবে। এছাড়া ফেরোমোন ট্র্যাপ হেক্টর প্রতি ২০ টা পেতে রাখলে উইভিল আক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করা যায়।

[আরও পড়ুন: Agriculture News: কাশ্মীরি জাফরান চাষ এবার উত্তরবঙ্গে! কঠিন পরীক্ষা খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ দপ্তরের]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ