সৌরভ মাজি, বর্ধমান: লেমন গ্রাস, সিট্রনেলা, পালমারোজার মত সুগন্ধি ঘাস চাষে লাভবান হতে পারেন পূর্ব বর্ধমানের কৃষকরা, এমনটাই জানাচ্ছেন বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞরা। চাষিদের উৎসাহিত করতে প্রশিক্ষণ, প্রদর্শন ক্ষেত্র তৈরিও করা হয়েছে। পাশাপাশি, পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসনও বিভিন্ন ব্লকে স্বয়ম্ভর গোষ্ঠীর মাধ্যমে লেমন গ্রাস চাষের উদ্যোগ নিয়েছে। ইতিমধ্যে আউশগ্রাম-২, গলসি-১ ও রায়না-২ ব্লকের কৃষক বাজারে লেমন গ্রাস চাষ ও সেখানেই যন্ত্রের মাধ্যমে তেল তৈরি করে বাজারজাত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
[আরও পড়ুন: ভুট্টা চাষে ব্যাপক লক্ষ্মীলাভের সম্ভাবনা, কৃষকদের আগ্রহ বাড়াতে উদ্যোগ রাজ্যের]
বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে বর্ধমানে রয়েছে কৃষি কলেজ। সেখানে লেমন গ্রাস, সিট্রনেলা, পালমারোজা-সহ বিভিন্ন সুগন্ধি ঘাসের প্রদর্শন ক্ষেত্র রয়েছে। বৃহস্পতিবার বিধানসভার কৃষি স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারপার্সন ফিরোজা বেগম বর্ধমান কৃষি কলেজের সুগন্ধি ঘাসের প্রদর্শন ক্ষেত্র পরিদর্শনে যান। তিনিও কৃষকদের এই চাষে উৎসাহিত করার উপর গুরুত্ব দিয়েছেন। পরে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকও করেন তিনি। এই কলেজের উদ্ভিদবিদ্যার অধ্যাপক শিবশংকর দাস বলেন, “এইসব ঘাস মূলত একই গোত্রের। সুগন্ধি ঘাসের তেল বিভিন্ন প্রয়োজনে ব্যবহৃত হয়। লেমন গ্রাস একবার কোনও জমিতে লাগানোর পর তার গোড়া থেকেই নতুন করে গাছ হয়ে থাকে। ফলে খরচ কম।”
উদ্ভিদবিদ্যার অধ্যাপক দীপককুমার ঘোষ বলেন,”এইসব সুগন্ধি ঘাসের তেল মূলত পারফিউম তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। প্রতি হেক্টর জমিতে লেমন গ্রাস চাষ করলে ১৫ থেকে ২০ টন ঘাস মিলবে। তা থেকে ২০০ থেকে ২৫০ লিটার তেল মিলবে। প্রতি লিটার তেলের দাম ১৮ থেকে ২০ হাজার টাকা। এর থেকেই বোঝা যাচ্ছে লেমন গ্রাস চাষ করে প্রতি হেক্টরে কত বেশি টাকা আয় করা সম্ভব। লেমন গ্রাস বা এই সুগন্ধি ঘাস থেকে তেল নিষ্কাশনের যন্ত্রও কম খরচেই বসানো সম্ভব। কমবেশি দুই লক্ষ টাকা খরচ হবে এই যন্ত্র বসাতে। এর সঙ্গে প্যাকিং করতেও কিছু খরচ হবে।”
[আরও পড়ুন: ইলিশের ঘাটতি, বাঙালির রসনাতৃপ্তিতে মিল্ক ফিশ চাষে জোর]
বর্ধমান কৃষি কলেজের অ্যাগ্রোনমির অধ্যাপক সৌমেন বেরা বলেন, “কৃষকরাও আমাদের কাছে সহযোগিতা পাবেন। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মেনে লেমন গ্রাস চাষ করতে পারলে বিকল্প আয়ের সুযোগ পাবেন কৃষকরা।” পরবর্তী ক্ষেত্রে অন্যান্য ব্লকেও লেমন গ্রাস চাষের ক্ষেত্র বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে জেলা প্রশাসনের।