BREAKING NEWS

১১ চৈত্র  ১৪২৯  রবিবার ২৬ মার্চ ২০২৩ 

READ IN APP

Advertisement

চড়া দামেও দেদার বিকোচ্ছে নবাবগঞ্জের ‘নবাবি বেগুন’, মুখে হাসি কৃষকদের

Published by: Tiyasha Sarkar |    Posted: December 29, 2022 7:02 pm|    Updated: December 29, 2022 7:02 pm

Nawabganj's special Eggplant is being sold at a high price in Malda | Sangbad Pratidin

বাবুল হক, মালদহ: নবাবগঞ্জের নবাবি বেগুন এবার বেসরকারি উদ্যোগে বাংলাদেশে রপ্তানিতে আশার আলো দেখছেন মালদহের (Malda) চাষিরা। ফলন ভাল হওয়ায় এমনিতেই চাষিদের মুখে নবাবি হাসি। বাংলাদেশে এই বিশেষ বেগুন রপ্তানি হলে তাঁরা আরও বেশি লাভের মুখ দেখতে পারবেন বলেই মনে করছে জেলার উদ্যান পালন বিভাগ।

ওল্ড মালদহের নবাবগঞ্জের নবাবি বেগুন! আকারে অনেক বড়। দারুন সুস্বাদু। মিষ্টি এই বেগুনের এক-একটি ওজন দেড় থেকে দু’কেজির বেশি। একদা নবাবরা কৃষকদের দিয়ে তাঁদের জমিতে এই বেগুন চাষ করাতেন। সেই থেকেই এই বড় বেগুন নবাবগঞ্জের বেগুন নামেই পরিচিত। স্থানীয়রা আবার এই বড় বেগুনের আলাদা নামও দিয়েছেন। অনেকেই বলেন, এটি ‘বালিয়া’ বেগুন। এবারেও রেকর্ড ফলন হয়েছে। চড়া দামেও বিকোচ্ছে বাজারে। নবাবি বেগুন চাষিদের মুখে এখন নবাবি হাসি। বাজারে এখন সাধারণ বেগুন মিলছে ১৫ থেকে ২০ টাকা কেজি দরে। অথচ ‘বালিয়া’ বিকোচ্ছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকায়। চড়া দামেও কিনে নিতে কার্পণ্য করেছেন না কেউ।

[আরও পড়ুন: ত্রিকোণ সম্পর্ক, বিমার টাকা, ঝাড়খণ্ডের অভিনেত্রী খুনে একাধিক ‘মোটিভ’! তদন্তে পুলিশ]

চাষিদের দাবি, মালদহ জেলা জুড়েই এই বেগুনের বেশ কদর রয়েছে। হালকা সবুজ রঙ। দেখতে অনেকটা সাদাটে। বাঙালির হেঁশেলে যার চাহিদা থাকে সবসময়ই। দ্বিগুন দাম দিয়ে মানুষ নবাবগঞ্জের বেগুন কিনছেন। এবার মালদহের প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী এই নবাবগঞ্জের বেগুন বাংলাদেশে রপ্তানির উদ্যোগ নিয়েছে জেলার রপ্তানিকারক সংস্থাগুলি। আর এতেও মুখে চওড়া হাসি এই ‘বালিয়া’ বেগুনের চাষিদের। আরও দাম বাড়তে পারে বলে আশাবাদী নবাবগঞ্জের চাষিরা। ইংলিশবাজার শহরের মকদমপুর বাজারের এক সবজি বিক্রেতা বীরেন মণ্ডল বলেন, “সাধারণ বেগুনের চেয়ে দ্বিগুন দাম নবাবগঞ্জের বেগুনের। সুস্বাদু বলেই মানুষ কিনছেন। ইতিহাসের জেলা মালদহের প্রখ্যাত এই নবাবগঞ্জের বেগুনের ফলন বরাবরই ভাল হয়। চাহিদাও বেশি। তাই চড়া দামেও বিক্রি হয়। ওয়েস্ট বেঙ্গল এক্সপোর্টারস কো-অর্ডিনেশন কমিটির সম্পাদক উজ্জ্বল সাহা জানান, বাংলাদেশ থেকে নবাবগঞ্জের বেগুনের বরাত আসতে শুরু করেছে। খুব শীঘ্রই জেলার রপ্তানিকারক ব্যবসায়ীরা ওই বেগুন বাংলাদেশে পাঠাতে শুরু করবেন। ফলে চাষিরা আরও লাভবান হবেন। মালদহের উদ্যানপালন দপ্তরের উপ-অধিকর্তা সামন্ত লায়েক জানিয়েছেন, রাজ্যে শুধুমাত্র মালদহ জেলাতেই নবাবগঞ্জ জাতের বেগুন চাষ হয়। এই জাতের বেগুনের বীজ বাজারে পাওয়া যায় না। চাষিরা নিজেদের উদ্যোগেই বীজ তৈরি করেন। পরের বছর ফের সেই বীজ আবার জমিতে রোপন করে নবাবগঞ্জের বেগুন চাষ করেন। এই জেলায় প্রায় ১৬০ হেক্টর জমিতে নবাবগঞ্জের বেগুন চাষ হয়।

ওল্ড মালদহের নবাবগঞ্জ ছাড়াও ডাঙ্গাপাড়া, বেলাহার ও সাঞ্জাইল এলাকায় এই বেগুনের চাষ খুব বেশি হয়। এছাড়া রতুয়ার মহারাজপুর ও গাজোলের পাণ্ডুয়া ও বৈরগাছি অঞ্চলেও নবাবগঞ্জ জাতের বেগুন চাষ হয়ে থাকে। গাঙ্গেয় পলিমাটিতেই চাষ ভাল হয়। গত বছর জেলায় এই বেগুন উৎপাদন হয়েছিল ৪ হাজার ৩০০ মেট্রিক টন। এই বছর ৫ হাজার মেট্রিক টন উৎপাদন হতে পারে। চলতি সপ্তাহ থেকে জমি থেকে এই বেগুন তোলার কাজ শুরু হয়েছে। উৎপাদন বাড়ার পাশাপাশি দাম মিলছে খুব ভাল। এমনটাই দাবি চাষিদের। রতুয়া-২ নম্বর ব্লকের পীরগঞ্জ এলাকার চাষি নিয়ামত শেখ, আবদুর রাজ্জাকদের বক্তব্য, মালদহের চাঁচোল মহাকুমার কয়েকটি ব্লকেও নবাবগঞ্জের বেগুন চাষ হচ্ছে। নবাবদের আমলে শুরু হয়েছিল এই বেগুন চাষ। তাঁদেরই প্রিয় খাদ্য ছিল এই বেগুন। সেই বেগুনই এখন নবাবগঞ্জের বেগুন বলেই বিখ্যাত।

[আরও পড়ুন: বন্দে ভারত উদ্বোধনের আগেই বড় সিদ্ধান্ত, শতাব্দী এক্সপ্রেস এবার দাঁড়াবে বর্ধমানেও]

অক্টোবর মাসে এই বেগুনের গাছের চারা লাগানো হয়। ডিসেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহ থেকেই গাছে ফলন চলে এসেছে। চাঁচোল-২ নম্বর ব্লকের মালতিপুর গ্রামের চাষি রফিকুল শেখ বলেন, “ফলন বেশি হয়েছে। পাইকাররা নির্দিষ্ট দাম দিয়ে নবাবগঞ্জের বেগুন কিনে নিয়ে যেতে শুরু করেছেন। শুনতে পাচ্ছি, এই বেগুন এবার বাংলাদেশে পাঠানো হবে। সেটা হলে আমরা আরও একটু বেশি দাম পাব।”

Sangbad Pratidin News App: খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে লাইক করুন ফেসবুকে ও ফলো করুন টুইটারে