Advertisement
Advertisement

Breaking News

Some tips about Turkey poultry amidst growing demand

ক্রমশ বাড়ছে চাহিদা, জেনে নিন টার্কি পালনের সহজ উপায়

টার্কির মাংস, ডিম খুবই সুস্বাদু ও পুষ্টিকর।

Some tips about Turkey poultry amidst growing demand । Sangbad Pratidin
Published by: Sayani Sen
  • Posted:December 7, 2022 2:33 pm
  • Updated:December 7, 2022 2:33 pm

ভারতের টার্কি পালন এবং টার্কির মাংসের চাহিদা দিন দিন বেড়ে চলেছে। বিশেষ করে উৎসবের মরশুমে। পাশাপাশি বর্তমানে বিরিয়ানিতেও এই মাংসের ব্যবহার বাড়ছে। ২৪ সপ্তাহ বয়সের মধ্যে একটি পুরুষ পাখির গড় ওজন হয় ১০ থেকে ১৫ কেজি। যার বাজার মূল্য প্রতি কেজি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা। এর মাংস ও ডিম সুস্বাদু ও পুষ্টিকর। মাংসে প্রোটিনের পরিমাণ অনেকটাই বেশি এবং ফ্যাট খুবই কম থাকে। মাংসে যথেষ্ট পরিমাণে খনিজ পদার্থ, ভিটামিন ও প্রয়োজনীয় অ্যামাইনো অ্যাসিড ও ফ্যাটি অ্যাসিড পাওয়া যায়। তবে কোলেস্টেরলের পরিমাণ খুব কম। টার্কি পালনে ভাল আয়ের সুযোগ রয়েছে। লিখেছেন পশ্চিমবঙ্গ প্রাণী ও মৎস্য বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের ডা. মীর আজহার উদ্দিন।

ভারত হল প্রাণিসম্পদ ও কৃষি সম্পদের আঁতুরঘর। দেশে দিনি মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। ঠিক তার পাশাপাশি প্রাণীসম্পদ ও কৃষি সম্পদেরও গুরুত্ব বাড়ছে। এছাড়া বর্তমানে মানুষ কৃষি ও পশুপালনের প্রতি যথেষ্ট আগ্রহী হচ্ছে। আমরা যদি দেখি ভারতের ২০১২ সালের ১৯ তম প্রাণী গণনা অনুসারে ভারতে প্রাণীর সংখ্যা ৫১ কোটি ২১ লক্ষ এবং মোট পোল্ট্রির সংখ্যা ৭২ কোটি ৯২ লক্ষ। ভারতবর্ষের মানুষ যে প্রাণী পালনের প্রতি আগ্রহী হচ্ছে তার একমাত্র দৃষ্টান্ত দেখতে পেয়েছি ২০১৫ থেকে ২০১৬ সালের গণনা অনুযায়ী ভারতবর্ষের জিডিপি (গ্রস ডোমেস্টিক প্রোডাক্ট)-র পাঁচ শতাংশ এসেছিল প্রাণীপালন থেকে।
টার্কি কী?
টার্কি (meleagris gallopavo) হল উত্তর আমেরিকা এবং ইউরোপের একটি সুপরিচিত পাখি। এই পাখিটি খুব সহজ পদ্ধতিতে পালন করা যায়। এই পাখিটি সাধারণত মাংস ও ডিমের জন্য পালন করা হয়।ভারতে এই পাখিটি পালন শুরু হয়েছে অনেক পরে। প্রথম দিকে এই পাখিটি খুব একটা পরিচিত না হলেও পরে এই পাখিটি অনেক পরিচিতি পেয়েছে এবং তার পাশাপাশি আমাদের ভারতবর্ষের অনেক রাজ্য টার্কি পালনে বিশেষ অগ্রণী ভূমিকা গ্রহণ করেছে। যেমন পশ্চিমবঙ্গ, কেরল, তামিলনাড়ু, উত্তরপ্রদেশ প্রভৃতি।

Advertisement

Turkey
টার্কির বৈশিষ্ট্য
১) প্রধানত এই পাখিটির মাংস ও ডিম খুবই সুস্বাদু ও পুষ্টিযুক্ত। এই পাখিটি লম্বায় ৩.৩ থেকে ৪.১ ফুট হয়। এছাড়া এদের মাংসে প্রোটিনের পরিমাণ অনেকটাই বেশি (২৪ শতাংশ) এবং ফ্যাট খুবই কম (৬.৬ শতাংশ)। এছাড়া এদের মাংসে যথেষ্ট পরিমাণে খনিজ পদার্থ, ভিটামিন ও প্রয়োজনীয় অ্যামাইনো অ্যাসিড ও ফ্যাটি অ্যাসিড পাওয়া যায়। এই মাংসে কোলেস্টেরলের পরিমাণ খুব কম থাকে।
২) টার্কি পাখি ৩০ সপ্তাহ (প্রায় সাড়ে সাত মাস) বয়স থেকে ডিম পারা শুরু করে। এদের ডিমের গড় ওজন হয় ৮৫ গ্রাম। ডিম ফুটে একটি বাচ্চার ওজন প্রায় ৫০ গ্রাম হয়ে থাকে। এরা বছরে ৮০ থেকে ১০০টি পর্যন্ত ডিম পাড়ে। এদের ডিম চেনার সহজ উপায় হল বিভিন্ন রঙের ছোপ দেখা যায়।

Advertisement

[আরও পড়ুন: কৃষিজমির অভাব? বাড়িতে থাকা বস্তায় আদা চাষেই বিপুল লক্ষ্মীলাভের সম্ভাবনা]

টার্কি পালনের সুবিধা
এই পাখিটি খুব দ্রুত বৃদ্ধি পায়। এই পাখিটি খুব সহজে বাড়ির উঠোনে মুক্তাঙ্গন পদ্ধতিতে পালন করা যায়। ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের জন্য খুবই লাভজনক। টার্কির ডিমের ওজন মুরগির ডিমের চেয়ে ১.৩ গুণ বেশি। তাই বাজার মূল্য অনেক বেশি। এই পাখির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেকটাই বেশি মুরগির তুলনায়। টার্কি পাখির মাংসের বাজার দর অনেকটাই বেশি, ( প্রতি কেজি প্রায় ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা)।
টার্কির জাত
টার্কি পাখির বিশ্ব বিখ্যাত সাতটি প্রজাতি আছে, যেমন হোয়াইট হল্যান্ড, বোরবান লাল, নারাগানসেট, কালো, স্লেট, ব্রোঞ্জ, বেল্ট সনিল ছোট সাদা। আমাদের দেশে বাণিজ্যিক উৎপাদনের জন্য ব্রড ব্রেস্টেড ব্রোঞ্জ (বিবিবি) ব্রড ব্রেস্টেড বড়সাদা, বেল্ট সনিল ছোট সাদা ইত্যাদি জাতগুলি বেশি পালন করা হয়। তাছাড়া ভারতে মূলত সাদা ভ্যারাইটির টার্কি বেশি পালন করা হয়।Turkey

টার্কির প্রজনন ও ডিম ফোটানোর পদ্ধতি
টার্কি পাখি ডিম উৎপাদনের জন্য পাঁচটি স্ত্রী পাখি পিছু একটি পুরুষ পাখি থাকা দরকার। এক বছর বয়স হয়ে যাওয়া পুরুষ পাখিকে আর প্রজননের জন্য ব্যবহার করা হয় না।
এদের ডিম ফুটে বাচ্চা হতে গড়ে সময় লাগে ২৮ দিনের মতো। কিন্তু মূলত ব্যবসার সুবিধার জন্য কৃত্রিম উপায়ে ইনকিউবেটর যন্ত্রের সাহায্যে ডিম ফোটানো হয়ে থাকে।
একটি পাখি ১০ থেকে ১৫ টি ডিম ভালভাবে তা দিতে পারে। ঠিকমতো পরিচর্যা করলে ৬০ থেকে ৮০ শতাংশ ডিম ফুটে বাচ্চা হয়।
এছাড়াও প্রয়োজনে কৃত্রিম প্রজনন করা হয়।
টার্কি কীভাবে পালন করবেন:
প্রধানত টার্কি পালনের জন্য দুটি পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়:
১) মুক্তাঙ্গন পদ্ধতি
২) আবৃতাঙ্গন পদ্ধতি, যেটাকে আমরা বলি ডিপ লিটার সিস্টেম, যা ঘরে করা হয়।
ডিপ লিটার পদ্ধতি বা আবৃতাঙ্গন পদ্ধতিতে প্রতি প্রাপ্তবয়স্ক টার্কি পাখি পিছু চার থেকে ছয় বর্গফুট জায়গা দরকার হয়। এক একর জায়গায় ২০০ থেকে ২৫০ টি পূর্ণবয়স্ক টার্কি ভালভাবে লালন পালন করা যায়।
টার্কির ঘর সাধারণত পূর্ব-পশ্চিম অভিমুখে করলে ভাল হয়। ঘরের প্রস্থ ৯ মিটার এবং উচ্চতা আড়াই থেকে সাড়ে তিন মিটার করা হয়ে থাকে। ডিপ লিটারের উচ্চতা প্রথম অবস্থায় ২ ইঞ্চি করা হয়ে থাকে এবং পরে এটি ধীরে ধীরে বাড়িয়ে তিন থেকে চার ইঞ্চি করা হয়ে থাকে।

[আরও পড়ুন: সঠিক উপায়ে কপি চাষে প্রচুর লাভের সুযোগ, উপায় বাতলালেন বিশেষজ্ঞরা]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ