৬ চৈত্র  ১৪২৯  মঙ্গলবার ২১ মার্চ ২০২৩ 

READ IN APP

Advertisement

ঊষর ডাঙায় ফুটছে রজনীগন্ধা, বিপুল লক্ষ্মীলাভ খাতড়ার কৃষকদের

Published by: Sayani Sen |    Posted: December 27, 2018 9:14 pm|    Updated: December 27, 2018 9:15 pm

Tuberose cultivation in Bankura

টিটুন মল্লিক,বাঁকুড়া: ঊষর ডাঙায় ফুটছে সুগন্ধি ফুল। সেই ফুলের গন্ধে সুবাসিত গোটা তল্লাট। স্বনির্ভরতার দিশা দেখাচ্ছে সেই ফুলের চাষ। খাতড়ার প্রান্তিক দুজন কৃষক পরীক্ষামূলকভাবে রজনীগন্ধা ফুলের চাষ করে নতুন আয়ের পথ দেখাচ্ছে বাঁকুড়ার জঙ্গলমহলকে। খাতড়া ব্লকের আমডিহা গ্রামে কংসাবতী নদী তীরবর্তী রুক্ষ জমি। গ্রামবাসী বাদল গরাই ও নারায়ণচন্দ্র গরাই বিঘা দেড়েক জমিতে রজনীগন্ধার চাষ করেছেন। ফুল ফুটে ভরে গিয়েছে জমি। ইতিমধ্যে সেই ফুল বিক্রি করে লক্ষ্মীলাভ হয়েছে। নতুন করে গজানো রজনীগন্ধার শীষ উঁকি মারছে। মিষ্টি গন্ধে মুখরিত হয়ে উঠেছে গোটা গ্রাম। 

[রুক্ষ মাটিতে গোলাপ চাষই নয়া দিশা বাঁকুড়ার কৃষকদের]

বিকল্প চাষের উপরে কৃষি দপ্তর বর্তমানে গুরুত্ব দিচ্ছে। চাষিদের বিকল্প চাষে উৎসাহ দেওয়ার জন্য কৃষি দপ্তর পরীক্ষামূলকভাবে বিভিন্ন ফসল, ফুলের চাষে জোর দিচ্ছে। বিশেষ করে যেখানে ধানচাষ লাভজনক নয়। সেখানে বিকল্প হিসাবে অন্য ফসল চাষের কথাই বলা হচ্ছে চাষিদের। সেই বিকল্প চাষ হিসাবেই আমডিহা গ্রাম লাগোয়া জমিতে রজনীগন্ধা ফুলের চাষ করার উদ্যোগ নেয় খাতড়া ব্লক কৃষি দপ্তর। খাতড়া ব্লক কৃষি আধিকারিক পঞ্চানন ঘোষ জানান, ‘আত্মা’ প্রকল্পে আমডিহা গ্রামের দুই চাষির জমিতে রজনীগন্ধার চাষ করা হয়েছে। এর জন্য পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরা থেকে উন্নতমানের বীজ, রাসায়নিক ও জৈব সার-সহ যাবতীয় কৃষিজাত উপকরণ কৃষি দপ্তর থেকে চাষিদের সরবরাহ করা হয়েছে। পরীক্ষামূলকভাবে এই চাষ সফল হয়েছে। খাতড়া ব্লক কৃষি আধিকারিক বলেন, “এক বিঘা জমিতে প্রায় তিন কুইন্টাল বীজ লাগে। খরচ প্রায় ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা। গত জুলাই মাসে আমডিহা গ্রামে বাদল গরাই ও নারায়ণচন্দ্র গরাইয়ের জমি প্রাথমিক পরীক্ষার পর উপযুক্ত মনে করে সেখানে রজনীগন্ধার চাষ শুরু করা হয়। বীজ থেকে চারা বেরনোর পর দেড় মাসের মধ্যে ফুলের থোড় (বালব) এসেছে।

TUBEROSE

[থাইল্যান্ডের অর্কিড ফুটিয়েও হতে পারে লক্ষ্মীলাভ, জেনে নিন চাষের পদ্ধতি]

আগস্ট মাসের শেষে ওই ফুল বাজারে বিক্রি করে মোটা টাকা লাভ পেয়েছেন ওই দুই চাষি। তাঁরা বলেন, ‘‘বিয়ের মরশুমে রজনীগন্ধার দাম সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছয়। সেই সময় মোটা টাকা মিলবে বলে আশা করছি।” বাদলবাবু ও নারায়ণবাবু বলেন, “রজনীগন্ধা ফুলের চাষ কীভাবে করতে হয় তা আমরা জানতাম না। কৃষি দপ্তরের আধিকারিক ও কর্মীরা বারবার এসে বিষয়টি বুঝিয়েছেন। আমরা শুধু রক্ষণাবেক্ষণ করেছি মাত্র। এতেই অবশ্য আমাদের ঘরে লক্ষ্মীলাভ হয়েছে।” তাঁরা জানান, খাতড়া, বাঁকুড়া ও দুর্গাপুরে রজনীগন্ধার ভাল বাজার তৈরি হয়েছে। অনেকেই রজনীগন্ধা কেনার জন্য যোগাযোগ শুরু করে দিয়েছেন। খাতড়া মহকুমা-সহ কৃষি অধিকর্তা (প্রশাসন) গণেশ সিং সর্দার বলেন, “সঠিকভাবে ফুল চাষ করলে বিকল্প আয়ের প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে। চাষিদের বিভিন্ন রকম ফুলচাষে উৎসাহ দেওয়ার লক্ষ্যেই এই প্রকল্প চালু হয়েছে। এতে চাষিরা উপকৃত হবেন।” রজনীগন্ধা শুধু সুন্দর গন্ধই ছড়াচ্ছে না। জঙ্গলমহলের প্রান্তিক চাষিদের নতুন আয়ের পথও দেখাচ্ছে। আমডিহা থেকে জঙ্গলমহলের রজনীগন্ধার সেই পথচলা শুরু হয়েছে।

Sangbad Pratidin News App: খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে লাইক করুন ফেসবুকে ও ফলো করুন টুইটারে