সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ছুটি। কর্মব্যস্ত একঘেয়ে জীবনে অনেকটা দমকা হাওয়ার মতো। ছুটির কথা শুনলেই এক নিমেষে সমস্ত ক্লান্তি কোথায় যেন উধাও হয়ে যায়। দৈনন্দিন কর্মব্যস্ততা থেকে মুক্তির আনন্দে মন নেচে ওঠে। কর্মস্থল থেকে সপ্তাহে একদিন ছুটি পাওয়া যায় ঠিকই। কিন্তু, তাতে কী আর মন ভরে! প্রয়োজনে কিংবা অপ্রয়োজনে সাপ্তাহিক ছুটি ছাড়াও বাড়তি ছুটি নেন সকলেই। কিন্তু, জানেন কী, এমন মানুষও আছেন, বিগত ১৬ বছরে সাপ্তাহিক ছুটি ছাড়া একটিও অতিরিক্ত ছুটি নেননি। শুনতে অবাক লাগলেও, এমনই বিরল নজির তৈরি করেছেন পুনের বাসিন্দা ধর্মেন্দ্র শর্মা।
[মার্কিন মুলুকে যেতে ‘ভিসা গড’-এর শরণাপন্ন ভারতীয়রা!]
ধর্মেন্দ্রবাবু পেশায় হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক। বর্তমানে পুনের ডি ওয়াই পাতিল হোমিওপ্যাথি কলেজে অধ্যক্ষ পদে কর্মরত তিনি। হাসপাতালের রেকর্ড বলছে, নিজের ২৫ বছরের কর্মজীবনে সপ্তাহিক ছুটি ছাড়া মাত্র একবারই অতিরিক্ত একদিন ছুটি নিয়েছিল ধর্মেন্দ্র শর্মা। তাও ১৬ বছর আগে! কিন্তু, বিগত ১৬ বছরে সাপ্তাহিক ছুটির বাইরে আর একদিনও অতিরিক্ত ছুটি নেননি তিনি। আর এই ছুটি না নেওয়ার জন্য কাজপাগল মানুষটি ব্যঙ্গ-বিদ্রুপও কম শুনতে হয়নি। তবুও নিজের সিদ্ধান্তে অনড় থেকেছেন ধর্মেন্দ্র শর্মা। তাঁর সাফ কথা, ’বিগত ১৬ বছরে আমি কখনওই এতটা গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়িনি, যে ছুটি নিতে হবে। আর যদি কোনও সামাজিক অনুষ্ঠান থাকে, তাহলে অফিস সেরে অনুষ্ঠানে যোগ দিই নয়তো রবিবার যাই। আগে অনেকেই হয়তো এতে ক্ষুণ্ণ হতেন। তবে এখন তাঁরা অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছেন।’
[স্কুল চত্বরে মাটি খুঁড়তে উঠে এল কবর দেওয়ার সরঞ্জাম, চাঞ্চল্য তামিলনাড়ুতে]
বিকেলে কলেজ ছুটির পর আবার নিজের চেম্বারে রোগীও দেখেন ধর্মেন্দ্র শর্মা। কলেজ ও চেম্বারে সেরে বাড়ি ফিরতে ফিরতে অনেক রাত হয়ে যায়। বাড়ির লোক কখনও তাঁর এই কর্মব্যস্ত জীবন নিয়ে আপত্তি করেননি? ধর্মেন্দ্র প্রসাদ বলেন, ‘পরিস্থিতি যাই হোক না কেন, আমাকে যে কাজ করে যেতে হবে, সেটা আমার স্ত্রী বোঝে। তাছাড়া রবিবার বা অন্যন্য ছুটির দিনগুলিতে যথেষ্ট সময় থাকে। আমি আমার সহকর্মী ও ছাত্রদেরও সবসময় বলি, ছুটিটা অধিকার নয়, একটা বাড়তি সুবিধা মাত্র। তাই কখনও এই সুবিধার অপব্যবহার করা উচিত নয়।’
[মন্ত্রী হওয়ার বাসনায় ৫০ লক্ষ টাকার পুজো বিধায়কের, তারপর…]
কাজ নিয়েই থাকতে ভালবাসেন। তাই বিগত ১৬ বছরে সাপ্তাহিক ছুটি ছাড়া অতিরিক্ত ছুটি নেননি। এরজন্য যেমন ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ শুনতে হয়েছে, তেমনি প্রশংসাও কুড়িয়েছেন ধর্মেন্দ্র শর্মা। তিনি বলেন, ‘অনেকে আছে, যাঁরা আমাকে তাঁদের অনুপ্রেরণা বলে মনে করে। আবার অনেকে আমাকে বিদ্রুপও করে। কেউ কেউ জিজ্ঞেস করে, আমি কোনও ট্রফির আশায় এসব করছি কিনা? আবার কেউ বলে, ছুটি না নিয়ে আমি জীবনটাকে উপভোগ করা থেকে নিজেকে বঞ্চিত করছি।’