Advertisement
Advertisement

বিষের সঙ্গেই বসবাস, মানবশৃঙ্খল গড়ে প্রতিবাদ ভোপাল গ্যাস কাণ্ডে ভুক্তভোগীদের

আজও ওই বিষাক্ত গ্যাসের বলি হচ্ছে অনেকেই।

35 years of Bhopal Gas Tragedy, survivors form human chain
Published by: Monishankar Choudhury
  • Posted:December 2, 2019 1:26 pm
  • Updated:December 2, 2019 5:02 pm

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ১৯৮৪’র ২ ডিসেম্বরের রাত। আর পাঁচটা দিনের মতোই ঘুমের চাদর নেমে এসেছিল নান্দনিক শহর ভোপালে। তখনও আসন্ন বিপর্যয়ের লেশমাত্রও বোঝার উপায় ছিল না। কিন্তু ঘুমন্ত নগরীর বাতাসে ছড়িয়ে পড়েছিল বিষ। ‘ইউনিয়ন কার্বাইড’-এর কারখানা থেকে হওয়ায় মিশে গিয়েছিল বিষাক্ত মিথাইল আইসোসায়ানেট। রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে চোখে জ্বলুনি ও শ্বাসকষ্টর নিয়ে বিছানায় উঠে বসেছিলেন কয়েক হাজার মানুষ। বাকিটা ইতিহাস।

প্রায় সাড়ে তিন দশক আগে আজকের রাতেই আধুনিক শিল্পদূষণের অভিঘাতে ভোপালে প্রাণ হরিয়েছিলেন প্রায় ৩ হাজার মানুষ। তবে বেসরকারি পরিসংখ্যান বলছে এই সংখ্যা হিমশৈলের চূড়ামাত্র। আজও ওই বিষাক্ত গ্যাসের বলি হচ্ছে অনেকেই। অভিযোগ, ওই ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তরা প্রতিশ্রুতি পেলেও প্রতিকার পাননি। রবিবার প্রশাসনের অনীহার প্রতিবাদে অভিশপ্ত কারখানাটির চারপাশে মানবশৃঙ্খল গড়ে তোলেন স্থানীয়রা। তাঁদের দাবি, দুর্ঘটনার পর এলাকায় ছড়িয়ে পরা বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ সাফ করুক ‘ইউনিয়ন কার্বাইডের বর্তমান মালিক ‘ডউ কেমিক্যালস’। পাশাপাশি সংস্থাটি থেকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণের দাবিও জানিয়েছেন তাঁরা। মধ্যপ্রদেশ সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দেগে বিক্ষোভকারীদের কথা, ‘দুর্ঘটনাস্থলে স্মৃতিসৌধ বানিয়ে আসল সমস্যা থেকে নজর ঘোরাতে সরকার নাটক করছে।’

Advertisement

উল্লেখ্য, ২ ডিসেম্বর রাতে কারখানার ‘C plant’-এ সঞ্চিত মিথাইল আইসোসায়ানেটের ট্যাঙ্কে কোনওভাবে জল মিশে যায়। তারপরই শুরু হয় মারাত্মক বিক্রিয়া। উৎপন্ন হয় কার্বন ডাই অক্সাইড ও অন্যান্য গ্যাস। উদ্ভূত ভয়ঙ্কর তাপ ও চাপে ট্যাঙ্ক খুলে প্রায় ৪০ মেট্রিক টন মারণ মিথাইল আইসোসায়ানেট গ্যাস ছড়িয়ে পড়ে বাতাসে। চোখজ্বালা, কাশি, শ্বাসকষ্ট, ত্বকের প্রদাহে আক্রান্ত হনভোপালের অর্ধেকেরও বেশি মানুষ। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ভোপাল গ্যাসকাণ্ডে মোট মৃতের সংখ্যা ৩ হাজার ৭৮৭, শারীরিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ৫ লক্ষ ৫৮ হাজার জন। যার মধ্যে ভয়ঙ্কর ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে স্থায়ী পঙ্গুত্বের শিকার হন ৩ হাজার ৯০০ জন। তদন্তে জানা যায়, বিপজ্জনক রাসায়নিক দ্রব্য রক্ষণাবেক্ষণের ব্যাপারে অসতর্কতা এই দুর্ঘটনার জন্য দায়ী। ছোট ছোট ড্রামের বদলে রাসায়নিক রাখা হত বড় বড় ট্যাঙ্কে। ক্ষয়ে যাচ্ছিল পাইপলাইনও। ঘাটতি ছিল বিপর্যয় মোকাবিলার পরিচালন ব্যবস্থাতেও। আশ্চর্যজনকভাবে বহু বছর ধরে মামলা চললেও কোনও সাজা হয়নি ইউনিয়ন কার্বাইডের তৎকালীন শীর্ষ কর্তা ওয়ারেন অ্যাণ্ডারসনের। ২০১৪ সালে আমেরিকায় ৯২ বছর বয়সে মৃত্যু হয় তাঁর। অ্যাণ্ডারসনের সঙ্গেই কবরে চলে যায় ওই দুর্ঘটনার অনেক অজানা তথ্য।

Advertisement

[আরও পড়ুন: ৪ বছরের শিশুকে ধর্ষণের চেষ্টা, অভিযুক্তকে নগ্ন করে ঘোরানো হল রাস্তায়]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ