মণিশংকর চৌধুরি, গুয়াহাটি: এনআরসির গেরোয় রাষ্ট্রহীন অসম তথা ভারতের বহু প্রথিতযশা ব্যক্তিত্ব। চূড়ান্ত তালিকায় নাম নেই ১৯ লক্ষ মানুষের। যার সিংহভাগ হিন্দু বাঙালি। কে নেই সেই বাদের তালিকায়। প্রাক্তন রাষ্ট্রপতির পরিবার থেকে বিরোধী দলের বিধায়ক, কারগিল যোদ্ধা, স্বাধীনতা সংগ্রামীর পরিজন। ধীরে ধীরে শাসকপক্ষের বিরুদ্ধে ক্ষোভ বাড়ছে ভুক্তভোগীদের। এবার সেই বাদের তালিকায় সংযোজন হল অসমের আরও এক বিশিষ্ট ব্যক্তির। আজ, বৃহস্পতিবার গভীর রাতে যখন চন্দ্রপৃষ্ঠ ছোঁবে ভারতের গর্বের চন্দ্রযান ২ আর সেই কর্মযজ্ঞেরই একজন অন্যতম অংশীদারের নাম বাদ পড়ল এনআরসি চূড়ান্ত তালিকা থেকে। ড. জিতেন্দ্রনাথ গোস্বামী, যিনি কিনা চন্দ্রযান ২-এর অন্যতম উপদেষ্টা, তাঁরই নাম নেই চূড়ান্ত তালিকায়। গর্বের দিনেও যা লজ্জার সমান ভারতবাসীর কাছে।
[আরও পড়ুন: শেষ ১৫ মিনিটে রয়েছে চোখ, আজ গভীর রাতে চাঁদের পিঠে বিক্রম]
গত ৩১ আগস্ট প্রকাশিত হয় এনআরসির চূড়ান্ত তালিকা। যাতে বাদ যায় ১৯ লক্ষ মানুষের নাম। রাতারাতি নিজভূমে পরবাসী হয়ে যান অংসখ্য অসমবাসী। যার সিংহভাগই হিন্দু বাঙালি। যা নিয়ে ক্ষোভের আগুন জ্বলছে উত্তর-পূর্বের রাজ্যে। সেই তালিকায় নাম নেই বিজ্ঞানী জিতেন্দ্রনাথ গোস্বামী ও তাঁর পরিবারের কারওরই। ওই বিজ্ঞানী নিজে মিশন চন্দ্রযানের সঙ্গে যুক্ত। প্রজেক্টের অন্যতম উপদেষ্টা। তিনি জানিয়েছেন, ‘আমরা গত ২০ বছর ধরে আহমেদাবাদে থাকি। কিন্তু কোনওভাবে আমার এবং পরিজনদের নাম বাদ পড়েছে চূড়ান্ত তালিকা থেকে। আমার পরিবারের অনেকে এখনও অসমে থাকেন। জোরহাটে আমাদের জমিজমাও রয়েছে।’
ইতিমধ্যে নাগরিকত্বের ভবিষ্যৎ নিয়ে আঁধারে জিতেন্দ্রনাথ। যেভাবেই হোক আদালতের দ্বারস্থ হয়ে নাগরিকত্ব ফিরে পেতে চান ওই বিজ্ঞানী। উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, তাঁর দাদা হিতেন্দ্রনাথ গোস্বামী অসম বিধানসভার অধ্যক্ষ। জিতেন্দ্রনাথবাবু জানিয়েছেন, ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলে তাঁর পরামর্শ মতো পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে হবে। স্পিকার হিতেন্দ্রনাথ গোস্বামীও যথেষ্ট উদ্বিগ্ন ভাইয়ের এই বিষয়ে। কিন্তু সংবাদমাধ্যমের সামনে তা হালকা করার যথাসম্ভব চেষ্টা করেছেন তিনি। কারণ, এনআরসি ইস্যুতে ঘরে-বাইরে প্রবল চাপে অসমের বিজেপি সরকার। প্রসঙ্গত, ইসরোর মিশন মঙ্গলযান প্রকল্পের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন বিজ্ঞানী জিতেন্দ্রনাথ গোস্বামী।