সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী বা তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যতই মুখে মহাজোটের কথা বলুন না কেন, মহাজোটের ভবিষ্যত নিয়ে প্রশ্ন এখনই রাজনৈতিক মহলে উঠতে শুরু করেছে৷ সেই জল্পনা আরও উসকে দিলেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা দিল্লি কংগ্রেস সভাপতি অজয় মাকেন৷ আসন্ন নির্বাচনে আম আদমি পার্টির সঙ্গে কংগ্রেসের জোটের সম্ভাবনার কথা সম্পূর্ণ উড়িয়ে দিলেন তিনি৷ পাশাপাশি জানালেন, দিল্লি দরবারে তাঁদের রাজনৈতিক জমি খুইয়েছে আপ৷ এখানেই শেষ নয়, তৈরি হওয়া আপ-কংগ্রেস জোট জল্পনাকেও উড়িয়ে দিয়েছেন তিনি৷ সাবধান করছেন কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বকে৷
[মহাজোট তুলে ধরতে গিয়েও ধাক্কা, রাহুলের ডাকা ইফতারে নেই দুঁদে নেতারা]
আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের অনেক আগে থেকেই ঘুঁটি সাজাতে শুরু করেছে কংগ্রেস-সহ বিরোধীরা৷ যার স্পষ্ট ছবি উঠে এসেছে কর্ণাটক নির্বাচনে৷ বিজেপি-কে রুখতে দ্বন্দ্ব ভুলে কাছাকাছি এসেছে কংগ্রেস-জেডিএস৷ সুফলও পেয়েছে তারা, সংখ্যাগরিষ্ঠ বিজেপিকে পিছনে ফেলে সরকার গড়েছে এই জোট৷ সদ্য সমাপ্ত উত্তরপ্রদেশের কয়েকটা লোকসভা ও বিধানসভা আসনের উপ-নির্বাচনেও মোদি-শাহ জুটির বিরুদ্ধে একসঙ্গে লড়াইয়ের ময়দানে নেমেছিল বুয়া-ভাতিজা অর্থাৎ অখিলেশ-মায়াবতী জুটি৷ সেখানেও এসেছে লাভ৷ যা আরও বেশি করে উজ্জীবিত করেছে বিজেপি বিরোধী মহাজোটকে৷ এতদিন এই মহাজোটের অন্যতম অংশ ছিল দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের নেতৃত্বাধীন আম আদমি পার্টি৷ তবে সম্প্রতি তৈরি হয়েছে নয়া জল্পনা৷ বুধবার রাজধানীর বুকে তাজ প্যালেসে ইফতারের আয়োজন করেছিলেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী৷ ইফতারের আবহে সেই বৈঠকে আহ্বান জানানো হয়েছিল বিরোধী শিবিরের সমস্ত শীর্ষ নেতৃত্বকে৷ কিন্তু আমন্ত্রিতদের তালিকা থেকে বাদ পড়েছে আপ প্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়ালের নাম৷ এরপরেই কংগ্রেস শীর্ষ নেতা অজয় মাকেনের বক্তব্য উল্লেথযোগ্য বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল৷ কারণ, আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের পরেই দিল্লিতে বিধানসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে৷ সেখানে অন্যতম প্রতিপক্ষ আম আদমি পার্টি৷ ফলে এখন থেকেই কেজরিওয়ালের দলের থেকে দূরত্ব তৈরি করতে চাইছে কংগ্রেস নেতৃত্ব৷ পাশাপাশি, একথা অনেকেই মেনে নিচ্ছেন, সত্যিই কেজরির বিরুদ্ধে দিল্লিতে জনমত তৈরি হয়েছে৷ ফলে তাঁর সঙ্গে জোট করে আসন্ন নির্বাচনগুলিতে কংগ্রেস কতটা সুবিধা পাবে তা নিয়েও সংশয়ে রয়েছে কংগ্রেস নেতৃত্ব৷
[‘জয় শ্রী রাম’ না বলায় ইমামকে মারধর, তদন্তে পুলিশ]
পাশাপাশি, সোমবার সন্ধ্যা থেকেই দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নর অনিল বাইজলের বাসভবনে ধরনা কর্মসূচি পালন করছেন মুখ্যমন্ত্রী অবরবিন্দ কেজরিওয়াল, মনিশ সিসোডিয়া-সহ মন্ত্রিসভার দুই সদস্য৷ দিল্লির সমস্ত আইএএস অফিসাররা ধর্মঘট শুরু করার যে অরাজকতা তৈরি হয়েছে, তার প্রতিবাদেই এই বিক্ষোভ শুরু করেছেন কেজরিওয়াল ও তাঁর সঙ্গীরা৷ দিল্লির মানুষের কথা মাথায় রেখেই তাঁদের এই কর্মসূচি বলে জানান আপ প্রধান৷ টুইটারে তিনি লেখেন, দিল্লির মানুষের জন্য তাঁরা যে কাজ করতে চান তা বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে৷ পাশাপাশি আপ-এর পক্ষ থেকে চিঠি দেওয়া হয় দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নরকেও৷ সেখানে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলা হয়, যদি আইএএস অফিসাররা ধর্মঘট প্রত্যাহার না করেন, তাহলে দিল্লি সরকার তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে বাধ্য হবে।