ফাইল ফটো
অর্ণব আইচ: জঙ্গলে ঘুরে ঘুরে ভেষজ উদ্ভিদ খুঁজতে গিয়ে কখন যে চিনে পৌঁছে গিয়েছেন, তা বুঝতে পারেননি যুবক। যখন বুঝতে পারলেন, তখন তিনি চিনা বাহিনীর হাতে বন্দি। আর সেই খবর পাওয়ার পরই ভাবনা শুরু ভারতীয় সেনাদের। কারণ, অরুণাচল প্রদেশের ওই যুবকের শরীরে যদি করোনা ভাইরাস থাবা বসায়, তার ফল হতে পারে মারাত্মক। শেষ পর্যন্ত ভাবনার অবসান। ১৯ দিন পর চিনা বাহিনীর কবল থেকে ভারতীয় সেনা উদ্ধার করল যুবককে। যদিও করোনাকে বিশ্বাস নেই। তাও আবার চিন থেকে ফিরেছেন যুবক। তাই ১৪ দিন তাঁকে কোয়ারান্টাইনে রাখল সেনাবাহিনী।
সেনা সূত্রে জানা গিয়েছে, ২১ বছর বয়সের ওই যুবকের নাম তোগলে সিংকাম। বনে জঙ্গলে ঘুরে ঘুরে ভেষজ উদ্ভিদ সংগ্রহ করাই তাঁর কাজ। তখনও দেশে শুরু হয়নি লকডাউন। তাই যুবক ও তাঁর দুই বন্ধু গাছগাছড়ার সন্ধানে ঢুকে পড়েছিলেন গভীর অরণ্যে। বুঝতেও পারেননি যে, কখন ভারতের সীমান্ত পেরিয়ে পৌঁছে গিয়েছেন চিনে। হঠাৎই দেখেন যে, চিনা বাহিনী ঘিরে ফেলেছে অরুণাচল প্রদেশের তিন যুবককে। পুরো বিষয়টি বুঝতে লেগেছিল মিনিট কয়েক। দৌড়তে শুরু করেন তিন বন্ধু। কিন্তু হোঁচট খেয়ে আর পালাতে পারেননি তোগলে। এর পর থেকে চিনে বন্দি হয়ে যান তিনি। দুই বন্ধু কোনওমতে সীমান্ত পেরিয়ে ফিরে আসেন নিজেদের এলাকায়। এর পরই তাঁদের মধ্যে শুরু হয় করোনা আতঙ্ক। চিনা বাহিনীর হাতে থাকা তাঁদের বন্ধু তোগমে যদি করোনা ভাইরাসের গ্রাসে গিয়ে পড়েন? তাঁরা ভারতীয় সেনাবাহিনীকে পুরো বিষয়টি জানান। সেনারাও তোগমের বিষয়টি নিয়ে ভাবতে শুরু করেন।
বিষয়টি জানার পর যুবককে দেশে ফিরিয়ে এনে যে করোনার থাবা থেকে বাঁচানোর প্রয়োজন অনুভব করেন সেনা আধিকারিকরা। তাঁরা চিনা বাহিনী ও চিনা সরকারের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেন। সম্ভবত চিনা বাহিনীর প্রাথমিক সন্দেহ হয়েছিল যে, ওই যুবক চরের কাজ করার জন্য চিনে এসেছেন। যদিও তাঁকে টানা জেরার পর চিনা বাহিনীও নিশ্চিত হয় যে এই ভয় অমূলক। ভারতীয় সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকেও চিনের বাহিনীকে বোঝানো হয় যে, ওই যুবক ও তাঁর বন্ধুরা নেহাৎ ভুল করেই ঢুকে পড়েছিলেন। তঁাদের কোনও অভিসন্ধি নেই। মঙ্গলবার তোগমেকে চিনের পক্ষ থেকে ভারতীয় সেনাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। ১৪ দিন তঁাকে কোয়ারান্টাইনে রাখা হচ্ছে। তবে ছেলে যে ফিরে এসেছে, তাতেই অভিভাবক ও প্রতিবেশীরা খুশি বলে জানিয়েছে সেনাবাহিনী।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.