সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এই প্রথমবার ইংরেজি ও হিন্দি মিশিয়ে বাজেট পড়লেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি এই প্রথমবার সবথেকে বেশি কৃষক বা ফার্মার শব্দটি উচ্চারণ করলেন তিনি। বলা হচ্ছে, এই প্রথমবার মোদি সরকারও গ্রামীণ অর্থনীতি ও কৃষকদের উপর এতটা জোর দিল। তা যে অমূলক নয়, এদিন জেটলির বাজেটের পঠনেই তা স্পষ্ট।
[ কেন্দ্রীয় বাজেট ২০১৮: কোন কোন জিনিসের দাম বাড়ছে? ]
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এদিন যে ভাষায় জেটলি বাজেট পেশ করলেন, তাকে হিংলিশ বলা যায়। অর্থাৎ হিন্দি ও ইংরেজি বা ইংলিশের মিশ্রণ। এযাবৎ কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীরা ঝকঝকে ইংরেজিতেই বাজেট পড়েছেন। গত চারবার বাজেট পঠনে জেটলিও সে নিয়ম ভাঙেননি। তাহলে এবার কেন আচমকা হিন্দি বলতে গেলেন? না, জেটলির ইংরেজি ভাঁড়ারে টান পড়েনি। এবং চমক দেওয়াও তাঁর উদ্দেশ্য নয়। জেটলির মতো ঝানু আইনজীবীর মুদ্রাদোষও নয় এই ভাষা। এ ভাষা একান্তই দেশের কৃষক শ্রেণিকে লক্ষ্য করে। প্রধানমন্ত্রী মোদি বাজেট সম্পর্কে বলেছেন, এই বাজেট যেমন ব্যবসায়ীদের সুবিধার দিকে নজর রাখবে তেমনই আমআদমির জীবনযাপনের মান উন্নয়নেও লক্ষ্য দেবে। এই বাজেট সাধারণ মানুষ ও কৃষকদের স্বার্থে। সরকার যে কেবল ধনী ও ব্যবসায়ী শ্রেণির স্বার্থ সুরক্ষিত করে, এরকম একটা অভিযোগ প্রায়শই ওঠে। এবং অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরাও সে প্রবণতা চিহ্নিত করেছেন বিভিন্ন পদক্ষেপের সূত্রে। এবার সে বদনাম ঘোচাতে উদ্যোগী সরকার। ফলত এবার এ দুয়ের মধ্যে ভারসাম্য আনাই ছিল লক্ষ্য। এবং জেটলির ভাষাতেও থাকল তাঁর ছোঁয়া। ইংরেজি তো দেশের সকল শ্রেণির মানুষ বুঝবেন না। যে কৃষকদের সহায়তার কথা বলা হচ্ছে বাজেটে, তাঁদের কাছেও সরকারের কথা পৌঁছানো দরকার। এবং সে কথা কারও মাধ্যমে নয়, যেন অর্থমন্ত্রীর মুখ থেকেই মানুষ শোনেন। ফলে নেওয়া হয়েছে হিন্দির আশ্রয়। লক্ষ্যনীয়, যখনই উজ্জ্বলা যোজনা বা কৃষক কিংবা গরিবদের কথা বলেছেন, সেই সময়ই হিন্দি ব্যবহার করেছেন অর্থমন্ত্রী।
[ কেন্দ্রীয় বাজেট ২০১৮: সস্তা হচ্ছে কোন কোন জিনিস? ]
কৃষিতে নজর যে এবার কতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল, তাও আর একটা পরিসংখ্যানে স্পষ্ট হবে। এবারই প্রথম বাজেট পড়ার সময় সবথেকে বেশিবার ‘ফার্মার’ বা কৃষক শব্দটি উল্লেখ করেছেন জেটলি। সংখ্যাটি ৩০ বার। ২০১৪ সালে কৃষক শব্দ জেটলির মুখে এসেছিল ১৫ বার, পরেরবার তা গিয়ে ঠেকে সাতে, ১৬’য় বলেছিলেন ২৯ বার, ১৭’য় ২৩ বার। এবার সবথেকে বেশি। বোঝাই যাচ্ছে কৃষিতে উন্নয়নের ভার অর্থমন্ত্রীর কাঁধে বেশ ভালই চেপেছিল। এবারের বাজেটে নারীর উন্নয়নও ছিল লক্ষ্য। লক্ষ্যনীয়ভাবে গত কয়েক বছরের তুলনায় এবারই নারী বা উইমেন শব্দ জেটলির মুখে এসেছে ১৩ বার। গরিবরাও অর্থমন্ত্রীর নজরে ছিলেন। ২১ বার ‘পুওর’ শব্দটি উঠে এসেছে অর্থমন্ত্রীর কথায়। তুলনায় ডিজিটাল শব্দের ব্যবহার কমেছে। গতবছর বলেছিলেন ১৭ বার, এবার মোটে ১২ বার। ‘হেলথ’ শব্দ তাঁর মুখে উঠে এসেছে ৩৯ বার। তুলনায় জব শব্দটি এসেছে মোটে ৬ বার। বোঝাই যাচ্ছে গ্রাম-কৃষক-গরিবদের মন রাখতেই মুখর মন্ত্রী।
[ কেন্দ্রীয় বাজেট ২০১৮: বিশ্বের বৃহত্তম জনস্বাস্থ্য যোজনায় মিলবে ৫ লক্ষ টাকা ]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.