Advertisement
Advertisement

খুব সাফল্য নেই, তবু বাংলায় এনআরসি’র দাবিতে জোর সওয়াল অসম বিজেপির

এবার রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে এনআরসির দাবি তুললেন অসমের বিজেপি সভাপতি রঞ্জিত দাস।

Assam BJP demands for nationewide NRC at press conference
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:August 31, 2019 8:43 pm
  • Updated:August 31, 2019 8:45 pm

মনিশংকর চৌধুরি, গুয়াহাটি: দীর্ঘ ছ বছরের কর্মযজ্ঞ যে দারুণ সাফল্যের মুখ দেখেছে, তা বলা চলে না। অসমে এনআরসি’র চূড়ান্ত তালিকা থেকে বাদ গিয়েছে বহু প্রত্যাশিত নাম। অন্তর্ভুক্ত হয়েছে বহু অপ্রত্যাশিত নামও।যা নিয়ে শনিবার দিনভর টানাপোড়েন চলেছে গোটা রাজ্যজুড়েই। তবু রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে এনআরসি’র দাবি তুলতে পিছপা হল না অসমের বিজেপি নেতৃত্ব। বাংলায় নাগরিকপঞ্জি তৈরির ভাবনাচিন্তা
থেকেই পিছিয়ে এলেন না তাঁরা। স্পষ্টই বুঝিয়ে দিলেন, বাংলাতেও প্রয়োজনে এনআরসি হবে।

[আরও পড়ুন: রাষ্ট্রহীন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতির স্বজনরাই! নাম বাদ পড়ায় প্রশ্নের মুখে এনআরসি’র পদ্ধতি ]

অসমে জাতীয় নাগরিকপঞ্জি তৈরির পদ্ধতির কথা শুনে গোড়াতেই আপত্তি তুলেছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এভাবে বাছাই করে কাউকে আলাদা করে নাগরিকত্ব দেওয়া বা অন্য কাউকে ‘বিদেশি’ বলে দাগিয়ে তাকে বিতাড়ন – কোনওটিকেই সমর্থনযোগ্য বলে মনে করেন না তিনি। আর এখানেই তাঁর সঙ্গে দ্বিমত বিজেপির। গেরুয়া শিবিরের শীর্ষ নেতাদের মত, পশ্চিমবঙ্গের মতো সীমান্ত রাজ্যগুলিতে অনুপ্রবেশের সমস্যা বেশি। তাই এখানেও এনআরসি করা প্রয়োজন। লোকসভা ভোটের আগে রাজ্যে প্রচার করতে এসে নরেন্দ্র মোদিরা বারবার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, বিজেপি বাংলার ক্ষমতায় এলে এনআরসি হবে। চুলচেরা বিশ্লেষণ করে অনুপ্রবেশকারীদের হঠিয়ে দেওয়া হবে। যে পদ্ধতি চলেছে অসমে।
ছ বছর ধরে ধাপে ধাপে একাধিক পদ্ধতি পেরিয়ে অসমে জাতীয় নাগরিকপঞ্জির চূড়ান্ত তালিকা তৈরি হয়েছে। শনিবার যা প্রকাশিত হওয়ার পর দেখা গিয়েছে, ১৯ লক্ষ বাসিন্দার নাম নেই সেই তালিকায়। অর্থাৎ তাঁরা রাষ্ট্রহীন, তাঁরা খাতায়কলমে ‘বিদেশি’ প্রতিপন্ন হয়েছেন। এই বাদ যাওয়া ব্যক্তিদের তালিকা ভালভাবে দেখে বোঝা গিয়েছে, গলদ কিছু থেকেই গিয়েছে। এমনকী রাজ্যের শাসনক্ষমতায় থাকা বিজেপির
অন্দরেও এনিয়ে চাপানউতোর আরও প্রকট হয়েছে। বিকেলে সাংবাদিক বৈঠক করতে বসে এনআরসি যে খুব একটা সাফল্যের মুখ দেখেনি, তা গোপন রাখল না রাজ্য বিজেপি। নাম বাদ গিয়েছে দলের রাজ্য সম্পাদক সুজিত বিশ্বাসের মায়ের। তিনি অবশ্য দোষ চাপিয়েছেন মমতা সরকারের উপরেই। এনআরসি তালিকা তৈরির সময়ে অসম ছাড়াও বিভিন্ন রাজ্যে ছড়িয়ে থাকা নাগরিকদের তথ্য সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারের
কাছে চেয়ে পাঠান কো-অর্ডিনেটর প্রতীক হাজেলা। সেই কাজে বাংলার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারই যে সবচেয়ে বেশি অসহযোগিতা করেছে, এমন অভিযোগ তুলেছিলেন স্বয়ং কো-অর্ডিনেটরই। তাই মনে করা হচ্ছে, রাজ্য বিজেপি সম্পাদক সুজিত বিশ্বাসের শিলিগুড়িবাসী মায়ের নাম এনআরসির অন্তর্ভূক্ত না হওয়ার দায় এরাজ্যের সরকারেরই।

Advertisement

[আরও পড়ুন: ‘অসমীয়ারা শেষ হয়ে গেল’, তালিকা দেখে চরম হতাশ এনআরসির মূল কারিগর]

এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে রাজ্য সভাপতি রঞ্জিত দাসকে সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটালের প্রতিনিধি জিজ্ঞেস করেন, অসমে এনআরসি’র এই পরিস্থিতি, এরপরও কি বাংলায় এনআরসি’র দাবি তুলবেন? উত্তরে রঞ্জিত দাস বলেন, ‘শুধু বাংলাতেই নয়। রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে এনআরসি করার প্রয়োজনীয়তা আছে বলে মনে করি আমরা। তাই এবার  সেই দাবি তুলছি।’ অসম বিজেপির রাজ্য সভাপতির কথাতেই স্পষ্ট, জাতীয় নাগরিকপঞ্জি তৈরির মাধ্যমে গোটা দেশকে অনুপ্রবেশকারী বা ‘বিদেশি’ মুক্ত করা সম্ভব, তা তাঁরা বিশ্বাস করেন। এবং বাংলাতেও এভাবে তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে বাছাই করে বাংলাদেশ থেকে আগত মানুষজনকে নাগরিকত্ব দেওয়া বা না দেওয়ার কাজটিতে যে তাঁরা অনড়,
তা স্পষ্ট করে দিল অসম বিজেপি।

Advertisement

দেখুন ভিডিও: 

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ