Advertisement
Advertisement

Breaking News

গলদের চূড়ান্ত, ২০০ চিহ্নিত বিদেশির নামও ঢুকল নাগরিকপঞ্জিতে

গাফিলতিরই প্রমাণ দিচ্ছে এই ঘটনা?

Assam NRC: Infiltrators determined by foreigner tribunal also in list
Published by: Saroj Darbar
  • Posted:August 3, 2018 11:21 am
  • Updated:August 4, 2018 3:16 pm

মণিশংকর চৌধুরি, শিলচর: বিদেশি অনুপপ্রবেশকারীদের ভারতীয় নাগরিকদের থেকে পৃথক করতেই নাগরিকপঞ্জির খসড়া প্রকাশ৷ যত দিন যাচ্ছে দেখা যাচ্ছে গোটা নাগরিকপঞ্জিতে গলদই চূড়ান্ত৷ কোথাও স্বাধীনতার আগে দেশে আসা মানুষের নামও বাদ গিয়েছে, তো কোথাও মা-বাবা ভারতীয় আর তাঁদের ছেলেকে বিদেশি বলে চিহ্নিত করা হয়েছে৷ এবার আরও চাঞ্চল্যকর অভিযোগ সামনে এল৷ জানা যাচ্ছে ফরেনার ট্রাইবুনালে চিহ্নিত অন্তত ২০০ জন বিদেশির নামও ঢুকে পড়েছে নাগরিকপঞ্জিতে৷ ফলে কাটা গিয়েছে বহু বৈধ নাগরিকের নাম৷

[  শহরে ফিরে অসম প্রশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন তৃণমূলের প্রতিনিধিরা ]

Advertisement

ঘটনা অসমের মরিগাঁও জেলায়৷ ৩৯টি পরিবারের অন্তত ২০০ জন সদস্য বহু আগে থেকেই বিদেশি হিসেবে চিহ্নিত হয়েছিলেন৷ ফরেনার ট্রাইবুনালের বিভিন্ন আদালতে তাঁদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা চলছিল৷ সেই নিরিখেই এঁদের বিদেশি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়৷ ফলত নাগরিকপঞ্জিতে কখনওই এঁদের নাম আসার কথা নয়৷ কিন্তু চূড়ান্ত যে খসড়া প্রকাশিত হয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে দিব্যি আছে এঁদের নাম৷ বদলে বৈধ বহু নাগরিকের নাম বাতিল হয়েছে৷ কী করে এই গাফিলতি হল? জানা যাচ্ছে, যাঁদের বিদেশি হিসেবে আগে থেকেই চিহ্নিত করা হয়েছিল তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি স্থানীয় প্রশাসন৷ ডিটেনশন ক্যাম্পেও তাঁদের নিয়ে যাওয়া হয়নি৷ ফলে ওই মরিগাঁও এলাকাতেই তাঁরা দিব্যি থাকতেন৷ এর মধ্যে পঞ্চায়েতের শংসাপত্র আদায় করে নিয়েছিলেন কেউ কেউ৷ কেউ আবার জাল ভোটার কার্ডও তৈরি করে ফেলেছেন৷ নাগরিকপঞ্জির চূড়ান্ত খসড়া প্রকাশিত হওয়ার সময় এই ধরনেরই নথি জমা দেন তাঁরা৷ ফলে নাগরিকপঞ্জিতে তাঁদের নাম চলে আসে৷ এদিকে পঞ্চায়েতের শংসাপত্র বৈধ প্রমাণপত্র হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে না বলে বড়ো উপজাতির অনের ভূমিপুত্র নাগরিকত্ব হারিয়েছেন৷ ফলে উপযুক্ত প্রমাণপত্র নিয়ে নাগরিকপঞ্জির প্রক্রিয়াই প্রশ্নের মুখে পড়েছে৷ চিহ্নিত বিদেশিরা ঢুকে পড়েছেন বৈধ নাগরিকের তালিকায়৷ ইল্লিগাল মাইগ্রেন্টস ডিটারমিনেশন বাই ট্রাইবুনাল বা আইএমডিটি অ্যাক্টের আওতায় অন্তত ১৫,০০০ হাজার মানুষকে অসমে বিদেশি বলে চিহ্নিত করা হয়েছিল৷ এই আইন মোতাবেক কারও নাগরিকত্ব নিয়ে সংশয় দেখা দিলে সহনাগরিক তাঁকে চ্যালেঞ্জ করে ট্রাইবুনালের দ্বারস্থ হতে পারতেন৷ ইন্দিরা গান্ধীর আমলে এই আইন চালু হয়৷ যদিও ২০০৫ সালে সুপ্রিম নির্দেশে এই আইন রদ করা হয়৷ অর্থাৎ কেউ কারও নাগরিকত্ব নিয়ে চ্যালেঞ্জ করতে পারবেন না, কিন্তু সন্দেহভাজনদের বিরুদ্ধে ট্রাইবুনালে মামলা চলতে পারে৷ তবে বিদেশি চিহ্নিত হওয়ার পরও অনেকে অসমে থেকে গিয়েছেন৷ এবং তাঁরাই জাল নথি তৈরি করে নাগরিকপঞ্জিতে নিজেদের নাম ঢুকিয়ে দিয়েছেন, বৈধ নাগরিকদের বঞ্চিত করে৷

Advertisement

‘অসমে বিজেপির মুখোশ খুলে গিয়েছে’, প্রতিনিধিদের আটকানোয় ক্ষুব্ধ মমতা ]

যদিও একে গাফিলতি না বলে এনআরসি-র সাফল্য হিসেবেই ব্যাখ্যা করছেন মরিগাঁওয়ের ডেপুটি কমিশনার হেমেন দাস৷ তাঁর কথায়, “এই গলদ এনআরসি পর্যবেক্ষকদের চোখে পড়েছে৷ নাগরিকপঞ্জির খসড়া না হলে এঁরা জাল পরিচয়পত্র তৈরি করে এভাবেই থেকে যেতেন৷” তবে কীভাবে এঁদের নাম নজর এড়িয়ে নাগরিকপঞ্জিতে ঢুকে পড়ল তা খতিয়ে দেখা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন তিনি৷ পাশাপাশি চিহ্নিত বিদেশিদের নাম বাতিল করার জন্য প্রশাসনের কাছে আরজিও জানিয়েছেন, যাতে বৈধ নাগরিকরা কোনওভাবে বঞ্চিত না হন৷ তবে কি এবার এই বিদেশিদের ডিটেশন ক্যাম্পে রাখা হবে? হেমেনবাবুর বক্তব্য, প্রশাসনই এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে৷     

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ