সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সেই ১৯৯২ সালে অযোধ্যার মাটি থেকে বাবরির স্তম্ভে প্রথম আঘাত হেনেছিল কর সেনারা। কালের সরনি বেয়ে সেখানে বাবরির অস্তিত্ব চিরতরে মুছে এখন গড়ে উঠেছে রাম মন্দির। এবার মোদি সরকারের জমানায় এনসিইআরটি-এর (NCERT) রাষ্ট্র বিজ্ঞানের সিলেবাস থেকেও মুছে দেওয়া হল বাবরির অস্তিত্ব। কার্যত এমনভাবেই যেন কোনও কালে বাবরি নামে কোনও মসজিদ ছিল না অযোধ্যায়।
দ্বাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান বইতে বাবরি মসজিদ (Babri Masjid) প্রসঙ্গে লেখা ছিল ষোলশো শতাব্ধীতে মুঘল সম্রাট বাবরের সেনাপতি মির বাকি এই মসজিদ নির্মাণ করেন। তবে কেন্দ্রীয় সরকার নিয়ন্ত্রিত কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রকের অধীন স্বশাসিত সংস্থা এনসিইআরটি-এর তরফে যে নয়া সিলেবাস প্রকাশ করা হয়েছে সেখানে বাবরি মসজিদের নাম মুছে দিয়ে উল্লেখ করা হয়েছে, এটি ৩ গম্বুজ বিশিষ্ট একটি কাঠামো। যা ১৫২৮ সালে শ্রীরামের জন্মস্থানের উপর তৈরি করা হয়েছিল, যদিও এই কাঠামোর ভেতরে ও বাইরে হিন্দুদের নানা চিহ্ন ও প্রতীক স্পষ্ট ভাবে দেখতে পাওয়া যায়।
পাশাপাশি অযোধ্যা বিতর্কে পুরনো সিলেবাসে উল্লেখ করা হয়েছিল, ১৯৮৬ সালে মসজিদের তালা খোলার পর আদালতের নির্দেশে দুপক্ষকেই তাঁদের ধর্মীয় আচার পালনের অনুমতি দেওয়া হয়। পাশাপাশি পুরানো সিলেবাসে ছিল এই মসজিদ ঘিরে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা। গুজরাটের সোমনাথ থেকে অযোধ্যা পর্যন্ত রথযাত্রা। ১৯৯২ সালে করসেবক দ্বারা বাবরি ধ্বংস এবং ১৯৯৩ সালে সাম্প্রদায়িক হিংসারও উল্লেখ ছিল পুরনো পাঠ্যে। এমনকী এই মসজিদ ধ্বংসের জন্য উত্তরপ্রদেশের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী কল্যাণ সিংয়ের সরকারকে ভর্ৎসনার বিষয়টি পুরোপুরি বাদ দেওয়া হয়েছে। বাদ দিয়েছে বাজপেয়ীর বক্তব্যও। তিনি বলেছিলেন, অযোধ্যা হল বিজেপির সবচেয়ে বড় ভুল।
সে সব পুরোপুরি মুছে নয়া পাঠ্যে বলা হয়েছে, ওই ৩ গম্বুজ বিশিষ্ট কাঠামোর তালা খোলার পর সেখানে পুজোর অনুমতি দিয়েছিল আদালত। যে বিতর্ক দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকে। কারণ, মনে করা হত ওই কাঠামো মন্দির ভেঙে তৈরি করা হয়েছিল। যা নিয়ে হিন্দু ও মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়। যার প্রেক্ষিতে ১৯৯২ সালে ওই কাঠামো ভেঙে দেওয়া হয়। এর পাশাপাশি বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে এই ইস্যুতে সুপ্রিম কোর্টের রায়। যেখানে বলা হয়েছে, ২০১৯ সালে এই বিষয়ে রায় ঘোষণা করে দেশের শীর্ষ আদালত। যেখানে হিন্দুপক্ষের দাবিকে মান্যতা দিয়ে আদালতের তরফে নির্দেশ দেওয়া হয় ওই স্থানে মন্দির গঠনের। ওই বছরই মন্দির গঠনের কাজ শুরু হয় ওই স্থানে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.