সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সমাজ এগিয়েছে অনেক। বদলাচ্ছে মানুষ। কিন্তু সকলের ভাবনাচিন্তা কি বদলানো সম্ভব হয়েছে? তাই তো আজও ঋতুস্রাব বা পিরিয়ডস নিয়ে নানা অন্ধ কুসংস্কার মেনে চলেন এখনও। অনেকেই মাসের নির্দিষ্ট কয়েকটি দিনে মহিলাদের অশুচি বলে মনে করেন। বারবার পুরনো ধ্যানধারণা ভাঙার চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে এ যেন প্রদীপের তলায় অন্ধকার! কারও পিরিয়ডস হয়েছে কি না তা জানতে ভূজের সাহজানন্দ গার্লস ইনস্টিটিউটের কমপক্ষে ৬৮ জন ছাত্রীর অন্তর্বাস খুলে পরীক্ষা করা হয়। এই ঘটনার পরই মানসিক অবসাদে ভুগছেন তাঁরা।
ওই হস্টেলের ছাত্রীদের দাবি, একটি ব্যবহৃত স্যানিটার ন্যাপকিনকে কেন্দ্র করে গত সোমবার ঘটনার সূত্রপাত। হস্টেলের বাগানে সেটি পড়ে থাকতে দেখেন ওয়ার্ডেন। তাঁর অনুমান, শৌচালয় থেকেই ওই ব্যবহৃত স্যানিটারি ন্যাপকিন কেউ ছুঁড়ে বাগানে ফেলে দিয়েছে। তড়িঘড়ি গোটা ঘটনাটি অধ্যক্ষ রীতা রঙ্গিয়াকে জানান ওয়ার্ডেন। ঘটনাস্থলে পৌঁছেই উত্তেজিত হয়ে পড়েন অধ্যক্ষ। তিনি ছাত্রীদের উদ্দেশে বলেন, ”এই হস্টেলের বিভিন্ন নিয়ম রয়েছে। ছাত্রীরা সকলেই জানে ঋতুস্রাব চলাকালীন হস্টেলের ঘরে থাকা যায় না। ঢোকা যায় না হস্টেলের রান্নাঘরে কিংবা মন্দিরে। মাসের সেই কটাদিন আলাদা ঘরে সম্পূর্ণ পৃথক বাসনপত্রে খাওয়াদাওয়া করতে হয় ছাত্রীদের। ঋতুস্রাব হলে ছাত্রীদের ক্লাসের একেবারে শেষ বেঞ্চে বসাই নিয়ম।” তা সত্ত্বেও কীভাবে বাগানে ব্যবহৃত স্যানিটারি ন্যাপকিন ফেলা হল, সেই প্রশ্নও করেন অধ্যক্ষ।
কে এই কাজ করেছে, সেই প্রশ্ন করেন অধ্যক্ষ। তবে কেউই উত্তর দেননি। ছাত্রীদের অভিযোগ, তারপরই লাইন দিয়ে দাঁড় করানো হয়। ঋতুস্রাব হয়েছে কি না তা জানতে মোট চারজন অধ্যাপিকা ছাত্রীদের অন্তর্বাস খুলে পরীক্ষা করতে শুরু করে। চূড়ান্ত ‘অপমানের শিকার’ হওয়ায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন ছাত্রীরা। তাঁদের অভিভাবকরাও এই মানসিক অত্যাচার মানতে পারছেন না। ইতিমধ্যে থানায় কলেজ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছেন তাঁরা। এই ঘটনার পরেই পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে কচ্ছ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এই কমিটির শীর্ষে রয়েছেন ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য দর্শনা ঢোলাকিয়া। বৃহস্পতিবার কলেজে গিয়ে ছাত্রীদের সঙ্গে কথা বলেন ওই কমিটির সদস্যরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.