সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কোনও কটূ গন্ধকে দুর্গন্ধ বলা হয়। আর যার শরীরে নারী ও পুরুষের চিহ্ন থাকে তারা হিজড়া নামে পরিচিত। বুঝতে অসুবিধা হচ্ছে, কেন দুর্গন্ধ বা হিজড়া নিয়ে আলোচনা। আসলে দুর্গন্ধ এবং হিজড়া নামে হরিয়ানায় দুটি গ্রাম আছে। চোখের ভুল নয়, এটাই বাস্তব। যার জন্য গ্রামগুলির বাসিন্দারা নিজেদের এলাকার পরিচয় দিতে কুণ্ঠাবোধ করেন। গ্রামের এই নামকরণের জন্য আত্মীয়-স্বজন, বন্ধুদের থেকে তাদের নানা কথা শুনতে হয়। স্বাধীনতার ৭০ বছরের মুখে অবশেষে দুটি জনপদের এই লজ্জা অতীত হল। দুটি গ্রামের নতুন প্রজন্ম এই নিয়ে অনেকে দরবার করেছিলেন। কেন্দ্র সরকারের উদ্যোগে অবশেষে লজ্জার ঠিকানা থেকে তারা মুক্ত হলেন। নতুন পরিচয় পেয়েছে গ্রাম দুটি।
গাঁজা পার্ক, চোরবাগান, ভাতার। কলকাতা থেকে বর্ধমান। রাজ্যের এমন কিছু জায়গা আছে যে এলাকার পরিচয় বাসিন্দাদের বিড়ম্বনায় ফেলে। গাঁজা এক ছটাক না মিললেও, ভবানীপুর এলাকার একটি জনপদকে এখনও গাঁজা পার্ক বলা হয়। মানিকতলার চোরবাগানের বাসিন্দাদেরও এলাকার নাম নিয়ে বিস্তর অস্বস্তি হয়। বর্ধমানের ভাতারের সমস্যা আরও ভয়ানক। এখানকার বধূরা বাসে, ট্রেন উঠে ভাতারে নামতে চাইলে স্টপেজের নাম সরাসরি বলতে পারেন না। ঘুরিয়ে তাদের বলতে হয়, ‘খোকার বাবার বাড়ি যাব’। এ রাজ্যের মতো নাম সমস্যার সঙ্গী ছিল হরিয়ানার দুটি গ্রাম। ফতেহবাদ জেলার একটি গ্রামের নাম গান্দা। যার বাংলা অর্থ, দুর্গন্ধ। বছরের পর বছর এই আক্ষরিক অর্থেই দুর্গন্ধভরা নামে এলাকার প্রবীণরা অভ্যস্ত হয়ে পড়েন। তবে নতুন প্রজন্ম বাপ-ঠাকুর্দার জমানার নাম আর সইতে পারছিলেন না। হরপ্রীত কউর মালকাত নামে গান্দা গ্রামের এক ছাত্রী প্রধানমন্ত্রীকে এজন্য চিঠি লিখেছিল। কউর চিঠিতে জানায় প্রায়ই বন্ধুরা গ্রামের এমন আজব নামের জন্য তাকে বাঁকা কথা শোনায়। গ্রামের নাম বলতে গেলে তাদের মাথা হেঁট যায়। বাধ্য হয়ে বাইরের লোকেদের তারা এলাকার পরিচয় দিতে যান না। ১৪ বছরের হরপ্রীতের সৌজন্যে লজ্জা কাটল গান্দার। এই গ্রামের নতুন নামকরণ হল অজিত নগর।
হরিয়ানার হিসার জেলার কিন্নর নিয়েও বাসিন্দাদের কম লজ্জা ছিল না। কিন্নরের বাংলায় অর্থ, হিজড়া বা নপুংসক। ওই এলাকার কেউই হিজড়া নন। তবুও নামের জন্য গ্রামের বাসিন্দাদের হাসাহাসি করা হয়। এখানকার নতুন প্রজন্ম নাম বদলের জন্য বিস্তর দৌড়াদৌড়ি করে। অবশেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের সবুজ সঙ্কেতে ওই গ্রামের নতুন নাম হচ্ছে গায়বী নগর।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.