সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কলেজিয়াম এবং বিচারপতি নিয়োগ বিতর্কের মধ্যেই সংবিধানের মূল কাঠামোর পক্ষে জোরাল সওয়াল করলেন, প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় (DY Chandrachud)। শনিবার মুম্বইয়ে আইনজীবী ‘ননী পালকিওয়ালা স্মারক বক্তৃতা’য় প্রধান বিচারপতি বললেন সংবিধানের বেসিক স্ট্রাকচার বা মূল কাঠামো আসলে আমাদের কাছে ধ্রুবতারার মতো। যখনই আমরা দিশাহীন হয়ে পড়ি, তখন এটাই আমাদের পথ দেখায়।
কলেজিয়াম বিতর্কের (Supreme Court Collegium) আবহে প্রধান বিচারপতির এই বক্তব্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ কিছুদিন আগেই দেশের উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনকড় (Jagdeep Dhankar) সংবিধানের মূল কাঠামো পরিবর্তন সংক্রান্ত সুপ্রিম কোর্টের রায়ের প্রবল সমালোচনা করেছিলেন। আসলে ১৯৭৩ সালে কেশবানন্দ ভারতী বনাম কেরল সরকারের একটি মামলায় সুপ্রিম কোর্ট রায় দেয়, সংসদ বা সরকার আইন তৈরি করে দেশের সংবিধান সংশোধন বা নতুন ধারা সংযোজন করতেই পারে। কিন্তু কোনওভাবেই সংবিধানের মূল কাঠামো বা বেসিক স্ট্রাকচার বদলাতে পারে না। শীর্ষ আদালতের সেই রায়কে ভারতীয় বিচারব্যবস্থার ‘ল্যান্ডমার্ক জাজমেন্ট’ বা ঐতিহাসিক রায়গুলির মধ্যে একটি ধরা হয়।
দিন কয়েক আগে উপরাষ্ট্রপতি ধনকড় সুপ্রিম কোর্টের সেই ঐতিহাসিক রায় নিয়ে বড়সড় প্রশ্ন তুলে দিয়েছিলেন। ধনকরের বক্তব্য ছিল, জনগণের দ্বারা নির্বাচিত সরকারের সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকলেও কেন তারা সংবিধান সংশোধন করতে পারবে না! উপরাষ্ট্রপতি বলেন, ১৯৭৩ সালে কেশবানন্দ ভারতী মামলায় সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) রায়ই একটি ‘খারাপ নজির’। কারণ ওই রায়েই সুপ্রিম কোর্ট প্রথম সংবিধানের মূল কাঠামোর কথা বলে। সংবিধানের কাঠামোর অজুহাত দিয়ে সংসদ বা বিধানসভার স্বকীয়তা লঙ্ঘন করা যায় না।
ধনকড়ের সেই বক্তব্যের পর এই প্রথমবার বিচারব্যবস্থার মূল কাঠামো নিয়ে মুখ খুললেন প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়। তিনি বললেন, “সংবিধানের মূল কাঠামো আমাদের কাছে ধ্রুবতারার মতো। আমাদের পথ যখন অন্ধকারে ঢেকে যায়, তখন এই মূল কাঠামোই আমাদের সঠিক দিকে নিয়ে যেতে সাহায্য করে।” চন্দ্রচূড়ের এই মন্তব্য আসলে ধনকড়ের উদ্দেশেই নিঃশব্দ বার্তা বলে মনে করছে আইনজীবী মহল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.