সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রায় ৪০০ বছর হয়ে গেল। এই গ্রামে জন্মায়নি কোনও শিশু। স্থানীয়দের বিশ্বাস, গ্রামটি অভিশপ্ত। এখানে কোনও শিশুর জন্ম হলে মারা যাবে তার মা। এই অভিশাপ থেকে বাঁচতে আজও এখানে জন্ম হয় না কোনও শিশুর।
[ যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে প্রশিক্ষণে এবার সেনা জওয়ানদের পায়ে উন্নতমানের জুতো ]
গ্রামের নাম শঙ্ক শ্যামজি। মধ্যপ্রদেশের রাজগড়ে গ্রামটি অবস্থিত। রাজ্যের রাজধানী ভোপাল থেকে এর দূরত্ব প্রায় ১৩০ কিলোমিটার। মহিলাদের এখানে সন্তানের জন্ম দেওয়ার অনুমতি নেই। সন্তানের জন্ম দেওয়ার জন্য তাঁদের গ্রাম থেকে বাইরে যেতে হয়। সেটা হতে পারে কোনও হাসপাতাল, হতে পারে অন্য কোনও বাড়ি। কারণ স্থানীয়দের বিশ্বাস, কোনও মা যদি গ্রামে সন্তানের জন্ম দেন তবে তিনি মারা যাবেন অথবা তাঁর অঙ্গহানি হবে। তাই কোনওভাবেই যাতে গ্রামে কোনও সন্তানের জন্ম না হয়, সেদিকে দৃষ্টি রাখেন প্রবীণরা।
গ্রামের সরপঞ্চ নরেন্দ্র গুরজার বলেছেন, গ্রামে ৯০ শতাংশ শিশুর জন্ম হয় হাসপাতালে। জরুরি অবস্থাতেও মায়েদের সন্তান প্রসব করতে দেওয়া হয় না। প্রয়োজন পড়লে তাঁদের গ্রামের বাইরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে একটি ঘর তৈরি করা হয়েছে। সেই ঘরেই সন্তানের জন্ম দেন মা। মা ও সন্তানের ভালর জন্যই এই প্রথা মেনে চলা হয়। এমনকী প্রবল বর্ষণ বা তীব্র গরমেও এই নিয়মের অন্যথা হয় না।
[ ব্যক্তিগত আক্রমণে গিয়ে সীমা অতিক্রম করবেন না, মোদিকে কটাক্ষ শত্রুঘ্ন সিনহার ]
কী সেই অভিশাপ?
গ্রামের প্রবীণরা জানিয়েছেন, ষোড়শ শতাব্দীতে এক মহিলা গ্রামে মন্দির তৈরিতে বাধা দিয়েছিলেন। মন্দিরটি যখন তৈরি হচ্ছিল, এক মহিলা গম পেষাই করছিলেন। তার ফলে বিঘ্নিত হচ্ছিল মন্দির নির্মাণের কাজ। মহিলার কাজে রুষ্ট হন দেবতা। তিনিই নাকি তখন অভিশাপ দেন, গ্রামে আর কোনওদিন কোনও মহিলা সন্তানের জন্ম দিতে পারবেন না। গ্রামের সরপঞ্জ জানিয়েছেন, সবাই এই অভিশাপের কথা মেনে চলে। কারণ, অনেকে নাকি দেখেছে গ্রামে সন্তান জন্মানোর পর সে মারা গিয়েছে বা তার অঙ্গহানি হয়েছে। এই ঘটনার যাতে আর কোনও পুনরাবৃত্তি না হয়, তাই গ্রামের বাইরে একটি ঘর বানানো হয়েছে। সেখানে হয় সন্তান প্রসব। ৪০০ বছর ধরে চলে আসছে এই বিশ্বাস। আজও তা অটুট। তাই এই একবিংশ শতকেও গ্রামের অন্দরে জন্মায় না কোনও শিশু।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.