সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভারতবর্ষের মতো দেশে মন্দির শুধুই ভগবানের আরাধনাস্থল নয়। দেশের কয়েকটি মন্দিরে লুকানো রয়েছে কোটি কোটি টাকার সোনাদানা, নগদ টাকা। যার হিসাব কেন্দ্রের কাছে বিশেষ নেই। ভক্তরা মন্দিরে এসে ঈশ্বরের কাছে সোনার গহনা, বাঁট, কয়েন-সহ নগদ কীই না দান করেন! কিন্তু বেশিরভাগ মন্দিরই সেই সব দান সামগ্রীর কোনও যথাযথ হিসাব দেখায় না। সোনাদানা লুকিয়ে রাখা হয় কোনও গোপন সিন্দুকে।
সম্প্রতি কেরলের শ্রী পদ্মনাভস্বামী মন্দিরের আরও একটি ভল্ট খোলার প্রক্রিয়া শুরু হতেই এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হতে শুরু করেছে। আসুন দেখে নেওয়া যাক, ভারতের কয়েকটি ধনীতম মন্দিরে কত সম্পত্তি রয়েছে।
১. পদ্মনাভস্বামী মন্দির: ষোড়শ শতাব্দীতে নির্মিত এই মন্দিরকে ভারতের ধনীতম মন্দির বলে ধরা হয়। কয়েক বিলিয়ন টাকা এই মন্দিরে লুকানো রয়েছে বলে মনে করেন অনেকে। কেরলের রাজধানী তিরুবনন্তপুরমে অবস্থিত এই মন্দিরের নাম শিরোনামে আসে ২০১১-য়। যখন মন্দিরের দু’টি গুপ্ত সিন্দুক থেকে ১ লক্ষ কোটি নগদ টাকা ও সম্পত্তি বের হয়। এই মন্দিরে শ্রী বিষ্ণুর পুজো হয়। শোনা যায়, এই মন্দিরের ভিতর নাকি আরও একটি গোপন ‘ভল্ট বি’ রয়েছে। যে ভল্ট আসলে একটি বড় হলঘরের সমান। ওই ঘরের দেওয়াল, থাম-সবই নাকি সোনার।
২. তিরুপতি মন্দির: তিরুপতিতে শ্রী ভেঙ্কটেশ্বর স্বামীর মন্দির তৈরি হয়েছে দশম শতাব্দীতে। প্রতি বছর সবচেয়ে বেশি সংখ্যক ভক্ত এই মন্দির দর্শনে যান। প্রতিদিন অন্তত ৩০ হাজার ভক্ত সবমিলিয়ে ৬০ লক্ষ টাকা দান করেন মন্দিরে।
৩. বৈষ্ণোদেবীর মন্দির: জম্মু ও কাশ্মীরের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ত্রিকূট পাহাড়ের উপর অবস্থিত এই মন্দিরে আনুমানিক ১.২ টন সোনা গচ্ছিত রয়েছে বলে অনুমান কেন্দ্রের। গত পাঁচ বছরে এই মন্দিরে ১৯৩ কিলোগ্রাম সোনা অনুদান পেয়েছে। যার মধ্যে আবার প্রায় ৪৩ কিলোগ্রামই নকল বলে জানা গিয়েছে।
৪. সিদ্ধিবিনায়ক মন্দির: ২০০ বছরেরও বেশি পুরনো মুম্বইয়ের এই মন্দির ভারতের অন্যতম ধনী মন্দির। অন্তত ১৫৮ কিলোগ্রাম সোনা এই মন্দিরের গর্ভগৃহে সঞ্চিত রয়েছে, যার বাজারদর ৬০ কোটি টাকারও বেশি। মন্দিরের গোপন কুঠুরিতে সেই সোনা অত্যন্ত কড়া পাহারায় সুরক্ষিত থাকে। এই মন্দিরে পূজিত হন শ্রী গণেশ। সোনায় মোড়া ছাদের নিচে তাঁর পুজো হয়।
৫. গুরুভায়ুর মন্দির: কেরলের ত্রিশূর জেলার গুরুভায়ুর শহরে অবস্থিত একটি বিখ্যাত কৃষ্ণ মন্দির। গুরুভায়ুর মন্দিরের বার্ষিক টার্নওভার ৫০ কোটি টাকারও বেশি। এই মন্দির আগাগোড়া রহস্যে মোড়া। বাইরের কোনও লোককে মন্দিরের সোনাদানা দেখতে দেওয়া হয় না। এই মন্দিরের ভিতর ৬০০ কিলোগ্রামেরও বেশি সোনা লুকানো রয়েছে বলে অনুমান।
৬. সবরিমালা মন্দির: কোনও মহিলা ‘শুচি’ কি না, জেনে তবেই প্রবেশের ছাড়পত্র মিলবে। এই বলে কেরলের সবরিমালা মন্দির কর্তৃপক্ষ একাধিক বিতর্কে জড়িয়েছে। এমনিতেই এ দেশে রজঃস্বলা অবস্থায় মন্দিরে প্রবেশের অনুমতি নেই। তবে সম্পত্তির নিরিখে খুব একটা পিছিয়ে নেই এই মন্দিরও। প্রতি বছর কমপক্ষে ১০০ কোটি টাকা আয় করে মন্দির কর্তৃপক্ষ। অনুদান পায় ১৫ কিলোগ্রাম সোনা।
৭. শিরডি সাই বাবা মন্দির: মুম্বইয়ের শিরডি মন্দির দেশের তৃতীয় ধনীতম মন্দির। সরকারি হিসাব বলছে, প্রতি বছর ৩৬০ কোটি টাকা আয় করে কর্তৃপক্ষ।
৮. স্বর্ণমন্দির: অমৃতসরের স্বর্ণমন্দির কখনই তাদের আসল আয় জানায়নি প্রকাশ্যে। তবে একাধিক সূত্রের অনুমান, এই মন্দিরের ভিতর ৭৫০ কিলোগ্রামেরও বেশি সোনা রয়েছে। বোঝাই যায়, কতটা ধনী এই মন্দির কর্তৃপক্ষ।
৯. পুরীর মন্দির: বার্ষিক রথযাত্রার জন্য বিখ্যাত পুরীর প্রভু জগন্নাথের মন্দিরের ভিতর অন্তত ২০৮ কিলোগ্রাম সোনা রয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.