সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আইএএস পরীক্ষা চতুর্থ হয়েছিলেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু। কিন্তু উজ্জ্বল কেরিয়ারের হাতছানিকে অগ্রাহ্য করে দেশের কাজে নিজেকে নিয়োজিত করেছিলেন তিনি। স্বাধীনতার পর নকশাল আমলেও নিজেদের ভবিষ্যৎ জলাঞ্জলি দিয়ে বিপ্লবের নেশায় মেতে উঠেছিলেন এ রাজ্যের বহু মেধাবী পড়ুয়া। কিন্তু সে সব এখন ইতিহাস। আজকের এই প্রতিযোগিতার ইঁদুর দৌড়ের যুগে কেরিয়ার ছাড়া অন্য কিছু নিয়ে ভাবার অবকাশ কই। তাই গুজরাটের বর্শিল শাহকে বোধহয় ব্যতিক্রম বললেও কম বলা হবে। তার মতো ছাত্র বিরল। দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষায় ৯৯.৯ শতাংশ নম্বর পেয়েও, সন্ন্যাসী হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সে। বর্শিলের এই সিদ্ধান্তে সায় রয়েছে তাঁর পরিবারেরও!
[পেটের জ্বালা বড় দায়, ৬৬ হাজার টাকা চিবিয়ে খেল ছাগল]
আহমেদাবাদে বাড়ি বর্শিলের। বাবা জিগরভাই শাহ পেশায় আয়কর দপ্তরের অফিসার। মা অম্বিবেন শাহ গৃহবধূ। বর্শিলের এক দিদি আছে। পরিবারে যথেষ্ট আর্থিক স্বাচ্ছল্য থাকলেও, দুই ছেলে-মেয়ে খুব সাধারণভাবে বড় করে তুলেছেন এই গুজরাটি দম্পতি। জৈন ধর্মে বিশ্বাসী এই গুজরাটি পরিবারে কোনও কিছুরই বাহুল্য নেই। টিভি, ফ্রিজ তো অনেক দুরের ব্যাপার, রাতে পড়াশোনার সময়টা বাদ দিলে ইলেকট্রিসিটিও ব্যবহার করা হয় না। বর্শিলদের পরিবারের বিশ্বাস করে, যে প্রক্রিয়ায় ইলেকট্রিসিটি উৎপন্ন হয়, তাতে বহু জলজ প্রাণীর প্রাণহানি ঘটে। যা জৈন ধর্মের অহিংসবাদের বিরোধী।
[অনলাইনেই পাতা যৌনচক্রের ফাঁদ, পা দিচ্ছে ভারতীয় ছাত্রীরা]
এই পরিবেশের বেড়ে ওঠা বর্শিল এবছর গুজরাটের দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষায় শীর্ষস্থানাধিকারীদের অন্যতম। ৯৯.৯ শতাংশ নম্বর পেয়েছে সে। দেশ ও বিদেশের বহু বিখ্যাত কলেজ বর্শিলকে ভর্তি নিতে আগ্রহী। কিন্তু সেসবে কোনও ভ্রুক্ষেপ নেই বছর সতেরোর ছেলেটার। জৈন সন্ন্যাসী হতে চায় সে। বর্শিলের কাকা নয়নভাই সুথারি জানিয়েছেন, বছর তিনেক আগে সুরাটের এক জৈন সন্ন্যাসীর সংস্পর্শে আসে বর্শিল। সেই ঘটনাই তার জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। স্কুলের পড়াশোনার শেষ করেই জৈন সন্ন্যাসী হওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সে।
[নাগাল্যান্ডে গুলির লড়াইয়ে খতম ৩ জঙ্গি ]
দ্বাদশ শ্রেণীর পরীক্ষায় এত ভাল রেজাল্ট করে ছেলে সন্ন্যাসী হতে চাইছে। তাতে কোনও আক্ষেপ নেই বর্শিলের বাবা-মায়ের। বরং ছেলের সিদ্ধান্তে খুশি তাঁরা। জানা গিয়েছে, আগামী ৪ জুন গান্ধীনগরে জৈন সন্ন্যাসী হিসেবে দীক্ষা নেবে বর্শিল শাহ।