Advertisement
Advertisement

Breaking News

ফণী

ফণীর তাণ্ডব উপেক্ষা করে বিপর্যয় মোকাবিলায় শামিল হলেন হ্যাম রেডিও অপারেটররা

প্রবল ঝড়-জল উপেক্ষা করে পড়ে রইলেন পুরীতে।

HAM Radio operators works fluently at Puri fighting Cyclone Fani
Published by: Subhamay Mandal
  • Posted:May 9, 2019 8:08 pm
  • Updated:May 9, 2019 8:08 pm

শুভময় মণ্ডল: প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে বিধ্বস্ত প্রত্যন্ত এলাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থাকে অটুট রাখতে সাক্ষাৎ দেবদূতের ন্যায় দেখা দেন তাঁরা। বিপর্যয় মোকাবিলা দলের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বেতার তরঙ্গের মাধ্যমে বার্তা পৌঁছে দিতে তাঁদের জুড়ি মেলা ভার। ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় ফণীর দাপটে যখন বিপর্যস্ত ভারতের পূর্ব উপকূলের ওড়িশা, তখনও দুর্যোগ উপেক্ষা করে লড়াই করলেন হ্যাম রেডিও অপারেটররা। যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে দুর্যোগ বিধ্বস্ত পুরীর সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা অক্ষুণ্ন রাখলেন ওয়েস্ট বেঙ্গল রেডিও ক্লাবের ছয় সদস্য। প্রবল ঝড়-জল উপেক্ষা করে পড়ে রইলেন পুরীতে। তারপর পুরী জেলার প্রত্যন্ত এলাকাতেও অস্থায়ী রেডিও স্টেশন তৈরি করে রাজধানী ভুবনেশ্বরে বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের সঙ্গে সমন্বয় রেখে রেডিও যোগাযোগ ব্যবস্থা অটুট রাখলেন। যে সাহসিকতার সঙ্গে তাঁরা দুর্যোগে কাজ করলেন তা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়।

যেকোনও প্রাকৃতিক দুর্যোগের ক্ষেত্রে ত্রাণ সরবরাহ, উদ্ধারকার্যের প্রধান অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায় টেলি যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া। সেইসময় হ্যাম রেডিও অপারেটররা অস্থায়ী রেডিও স্টেশন তৈরি করে বিধ্বস্ত এলাকাগুলির সঙ্গে কন্ট্রোল রুমের যোগাযোগ স্থাপনে সাহায্য করেন। সেইমতো বিপর্যয় মোকাবিলা দলের সঙ্গেই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করেন তাঁরা। কয়েকদিন আগে বঙ্গোপসাগর থেকে প্রবল শক্তিধর ঘূর্ণিঝড় ফণী যখন ওড়িশা উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছিল, তখন নিজেদের ডিউটিতে নেমে পড়েন হ্যাম অপারেটররা। তিন সদস্যের দুটি টিম অন্ধ্রপ্রদেশ ও বাংলা থেকে রওনা দেয় পুরীর উদ্দেশে। পুরীতেই ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির পূর্বাভাস ছিল আবহাওয়া দপ্তরের। হ্যাম অপারেটররা ভুবনেশ্বরে বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের কার্যালয় রাজীব ভবনে আধিকারিক অরবিন্দ রায়ের সঙ্গে দেখা করেন। তারপরেই পুরীর দিকে রওনা দেন তাঁরা। সৈকত লাগোয়া একটি বাড়ির ছাদে তাঁবু খাটিয়ে অস্থায়ী রেডিও স্টেশন বানিয়ে কাজ শুরু করেন হ্যাম অপারেটর অভ্রজিৎ দাস, অরুণাভ দে এবং গোবিন্দ ঘরামিরা। যখন প্রায় ১৫০-১৬০ কিমি বেগে ঝড় বইছিল তখন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পুরীতে পড়ে থেকে ভুবনেশ্বরের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা অক্ষুণ্ন রাখেন। ঝড়ে উড়ে আসা কাচ ভেঙে গুরুতর আহতও হন একজন।

Advertisement

Advertisement

রেডিও ক্লাবের সম্পাদক অম্বরীশ নাগ বিশ্বাস জানিয়েছেন, পুরীর জেলাশাসক-উপজেলাশাসকও একসময় অস্থায়ী রেডিও স্টেশনে বসে পড়েন, ভুবনেশ্বরের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য। পুরীর প্রত্যন্ত এলাকাগুলিতেও ত্রাণসামগ্রী সরবরাহ, উদ্ধারকার্য নজরদারিতে সাহায্য করেন রেডিও অপারেটররা। একটা সময় ঝড়ের দাপট এতটাই ছিল যে কাজ করতে প্রবল সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছিল অপারেটরদের। তখন হায়দরাবাদের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ অ্যামেচার রেডিওর তরফ থেকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়া হয় রেডিও ক্লাবের সদস্যদের দিকে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব কাটিয়ে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে ওড়িশা। পুরীতেও যখন টেলি যোগাযোগ ব্যবস্থা পুনরায় চালু হলে বুধবার রাতে নিজেদের কাজ শেষ করে চলে আসেন। হ্যাম অপারেটররা যেভাবে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে দুর্যোগের মধ্যে কাজ করেছেন তার ভূয়সী প্রশংসা করেছেন পুরীর জেলাশাসক থেকে শুরু করে অন্যান্য আধিকারিকরা।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ